• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

হাতে ভাজা মুড়ির স্বাদ কেড়ে নিল মেশিন 

  আবিদ মাহমুদ, রাউজান (চট্টগ্রাম):

০৯ জুলাই ২০২৩, ১৬:৪২
মুড়ি

এক সময় নারী-পুরষ বিক্রয়কারী গ্রামে গ্রামে গিয়ে হাতে ভাজা মুড়ি বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আধুনিকতার ছোঁয়ায় মেশিন বা যন্ত্রের সহলভ্যতায় এখন আর হাতে ভাজা মুড়ি তেমন পাওয়া যায় না। তবুও মেশিনে ভাজা মুড়ির চেয়ে হাতে ভাজা মুড়ির কদর বেশি।

রাউজানে এখনো হাতে ভাজা মুড়ি পাওয়া যায় কয়েকটি গ্রামে। তাৎমধ্যে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের জানিপাথর গ্রাম অন্যতম। এ গ্রামের কানু ডাক্তার বাড়িতে প্রতিদিন মুড়ি ভাজেন নারী-পুরুষেরা। দূর-দূরান্ত থেকে ক্রেতাও যান সেখানে। ধনরঞ্জন দাশের স্ত্রী উষা রাণী দাশ হাত দিয়ে মুড়ি ভাজার কাজে খুব পারদর্শী। দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে মুড়ি ভাজেন তিনি।

উষা রাণী দাশ বলেন, শ্বশুর বাড়িতে শ্বশুর-শ্বাশুড়ির কাছ থেকে দেখা ও শেখা।

মুড়ি ভাজাও একটি শিল্প। ভাতের চাল আর মুড়ির চাল এক রকম না। ধান সংগ্রহ করে প্রথমে পানিতে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হয়। পরে আধাসিদ্ধ তারপর পুরোপুরি সিদ্ধ করে লবণ দিয়ে রোদে শুকিয়ে তা দিয়ে মুড়ির চাল তৈরি করা হয়। এরপর সেই চাল থেকে তৈরি হয় হাতে ভাজা মুড়ি।

হাতে ভাজা মুড়ি সু-স্বাদু ও স্বাস্থ্য সম্মত।

উষা রাণী দাশ বলেন আরও বলেন, অনেক কষ্টে মুড়ি ভেজে হাট-বাজারে নিয়ে বিক্রি করেন স্বামী ধনরঞ্জন দাশ। তিনি প্রতিদিন ১০-১২ মণ মুড়ি ভাজে। প্রতি কেজি বিক্রি হয় ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়।

ওই গ্রামের জুনু দাশের স্ত্রী গীতা দাশও মুড়িভাজার কাজে পারদর্শী। তিনি জানান, এক মণ চালের মুড়ি তৈরি করতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে। বর্তমানে বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি, পোড়ানোর কাজে ব্যবহৃত লাকড়ি দামও বেশি হওয়ায় মুড়ি উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে। বাপদাদার পেশা হিসেবে ধরে রেখেছি।

এখন কালের পরিবর্তনে বেশকিছু কারখানায় মেশিনে মুড়ি উৎপাদিত হওয়ায় হারিয়ে গেছে সু-স্বাদু হাতে ভাজা দেশি মুড়ি। শহর থেকে শুরু করে গ্রামের প্রত্যেকটি ছোটখাটো দোকানগুলোতে পৌঁছে দিচ্ছে মেশিনের তৈরি মুড়ি। ফলে এ শিল্পটি আজ একেবারে হারানোর পথে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য ফিরোজ উদ্দিন বলেন, ছোট বেলায় হাতে ভাজা মুড়ি দিয়ে রমজান মাসে ইফতার করতে মজা লাগতো। এক সময় গ্রামের সব বাড়িতে হাতে ভাজা মুড়ি পাওয়া যেত। হাতে ভাজা মুড়ির চাহিদা থাকলেও এখন বাজারে পাওয়া যায় না। তাই গ্রামের মানুষের মুড়ির দরকার হলে দোকান থেকে এক প্যাকেট কিনে নেন।

স্থানীয় চিকিৎসক বিজয় দাশ বলেন, গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ি খেলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই। আর রাসায়নিক সারযুক্ত মুড়ি খেলে শরীরে লিভার, কিডনি, যকৃত ধীরে ধীরে অকেজো হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি। স্বাস্থ্যের দিক বিবেচনা করে হাতে ভাজা দেশি খাওয়াই ভালো।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড