• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এক জোড়া জুতার দামে ৩ টি লক্ষাধিক টাকার গরুর চামড়া

  নেহাল আহম্মেদ প্রান্ত, আদমদীঘি (বগুড়া)

০৬ জুলাই ২০২৩, ১৭:২৬
কুরবানির চামড়া

গত কয়েক বছর ধরে দেশের বাজারে কুরবানির চামড়ার দর অস্বাভাবিক হারে নিম্নগামী। প্রতি বছর ইদের সপ্তাহ খানেক আগে চামড়া ব্যবসায়ীদের একটি সিন্ডিকেট চামড়ার দর নিয়ে কারসাজি করে। তাছাড়া কুরবানির চামড়া বরাবরই গরীব-মিসকিন ও এতিমদের হক। যারা আল্লাহর হুকুম পালনে গরু, মহিষ, ছাগল বা হালাল পশু কুরবানি করেন, সেই পশুর চামড়া বিক্রির টাকা স্থানীয় মাদ্রাসার গরীব ছাত্র, এতিম-মিসকিন বা গরীব মানুষের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে দিয়ে থাকেন। কিন্তু কয়েক বছর হলো সেই চামড়ার দাম পাচ্ছেন না পশু কুরবানি দাতারা। এতে করে বঞ্চিত হচ্ছে গরিব এতিমরা।

গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও কুরবানির পশুর চামড়ার দাম এমন কমা কমেছে যেন বিক্রির জন্য ক্রেতাই খুঁজে পাওয়া মুশকিল। লাখ টাকার কুরবানির গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০০-৪০০ টাকায়। এদিকে সর্বনিন্ম দামের এক জোড়া চামরার জুতার দাম ১২শত টাকা থেকে কয়েক হাজার টাকার হয়ে থাকে ও একটি চামড়ার বেল্টের দাম সর্ব নিন্ম ৪০০ টাকা। একটি চামড়া দিয়ে দুই ডজন অর্থাৎ ২৪টির মতো জুতা বানানো যায়। তবে জুতার ডিজাইন ও আকারের ওপর অনেক কিছুটা নির্ভর করে জুতার পরিমাণ।

জানা যায়, কুরবানীর ইদকে ঘিরে অসাধু চামড়া ব্যবসায়ীরা গত কয়েক বছরের ন্যায় এবারও সিন্ডেকেট করার কারণে পুরো বাজার চলে যায় স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে। ফলে বাজারে ন্যায্য দাম না পেয়ে লোকশান গুনতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন মৌসুমী চামড়া ব্যাবসায়ী ও বিক্রেতারা। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা বলেছেন, এবার সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত মূল্য হিসাবে চামড়া বেচা-কেনা হলে তাদের লোকশান গুনতে হতো না। স্থানীয় পাইকারী আড়ৎদাররা এবং মজুতদাররা সরকারি নিয়মনীতি না মেনে তারা তাদের ইচ্ছামত দামে চামড়া ক্রয় করেছেন। এবার লোকসানের ভয়ে অনেক মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা চামড়া ক্রয় করা থেকে বিরত থাকায় আদমদীঘি ও সান্তাহারের স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামত দামে চামড়া ক্রয়ের কারণে কুরবানীর পশুর চামড়ার বাজারে ধ্বস নামে। এ সুযোগে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মজুতদাররা নাম মাত্র টাকায় চামড়া কিনে মজুত করেছে।

উপজেলা সদরের মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা জানান, বড় বড় মহাজন ও আড়ৎদাররা সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রন করার কারণে সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্ধরিত মূল্যের চেয়ে অনেক কম দামে চমড়া কেনা-বেচা হয়েছে। দেড় লাখ টাকা মূল্যের বড় গরুর চামড়া ৩শ থেকে ৪ শ টাকা, গাভির চামড়া দেড় থেকে দুই’শ টাকা এবং খাসির চামড়া ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা, ভেড়ার চামড়া ১০ টাকায় কেনা-বেচা হয়েছে। এবার চামড়ার বাজারের এ অবস্থার কারনে এলাকার শত শত কুরবানিদাতা ক্ষোভে তাদের কুরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পরে এবং ক্ষোভে বাধ্য হয়ে নাম মাত্র টাকায় বিক্রি করে বলে জানা গেছে। সিন্ডিকেট করে কুরবানির পশুর চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রনের আবার অনেকে স্থানীয় মাদ্রারাসা ও এতিমখানায় দিয়ে দিয়েছেন। সিন্ডিকেড করে কুরবানীর পশুর চামড়ার বাজার নিয়ন্ত্রণ করায় কপাল পুড়েছে দুস্থ-গরিব, মাদ্রাসার এতিম ছাত্র-ছাত্রী ও মিসকিনদের।

স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী দিলিপ বলেন, আমরা যাদের সাথে ব্যবসা করবো তারা যদি অনিহা প্রকাশ করে তাহালে আমরা কোথায় যাবো? ঝুঁকি নিয়ে চামড়া কিনেছি কপালে লাভ থাকবে কি না জানি না।

এ ব্যাপারে নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক গোলাম আম্বিয়া বলেন, কোরবানির ইদের সময় চামড়ার বাজারে প্রশাসনের দৃষ্টি থাকলে বিক্রেতারা লাভবান হতো। সেইসাথে বেশি লাববান হতো অসহায়- গরিব মানুষরা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড