সাগর মিয়া, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ)
লেখা পড়ায় প্রবল ইচ্ছে থাকা সত্বেও বাবার অভাবের সংসার ও কানে কম শুনতে পাওয়ার কারণে স্কুল ত্যাগ করেছিলেন কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার নিরাহারগাতি গ্রামের মতি মিয়া। বয়স ৬০ ছুইছুই। আর্থিক অস্বচ্ছলতায় কিশোর বয়সেই বাবার হাত ধরেই মতি বেছে নেয় বাঁশের তৈরি ঘরের বেড়া, সিলিং, দরমার কাজ। দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে এ কাজে নিয়োজিত। এখন বাঁশের তৈরি সিলিং কাজে একজন দক্ষ করিগর তিনি।
মাসে ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা আয় তার। বাঁশ দিয়ে ঘরের বেড়া,সিলিং,দরমাসহ নানা জিনিস তৈরি করেন তিনি। তবে দুই এক দিন পর পর গ্রামে ঘুরে ঘুরে বাঁশ কিনতে হয় তার। তারপর সেই বাঁশ এনে তার থেকে তৈরি করেন ঘরের বেড়া, সিলিং। তাঁর অধীনে ৬জন শ্রমিকে কাজ করেন। তার নিপুণ হাতে আকর্ষনীয় করে তোলেন প্রত্যেকটি কাজ। কাজে বিমোহিত হয়ে দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই ছুটে আসেন তার কাছ থেকে ঘরের সিলিং ক্রয় করতে। এজন্যই তার ব্যস্ততা অনেক বেশি। কানে কম শুনেন তিনি ।তাই অনেক সময় মানুষের কথা বুঝতে কষ্ট হয়। তবুও থেমে নেই তার পথচলা।মতি মিয়া জানান, তার তৈরি ঘরের বেড়া,সিলিং,দরমা স্থানীয় ভাবে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।
এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলার সৌখিন মানুষেরা ঘরের সিলিং, বাঁশের তৈরি বেড়ার জন্য অগ্রিম বায়না দিয়ে থাকে তারে। একটি মাঝারি ধরনের সিলিং বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ১৮০০টাকায়। এতে তার মাসিক আয় হয় ৩৫ থেকে ৪০ হাজার টাকা। এ উপার্জন দিয়ে সে সংসারের খরচ ও পাঁচ ছেলে-মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন। মতির দেখাদেখি গ্রামের অনেক বেকার যুবক এ পেশায় এগিয়ে এসেছেন। সাম্প্রতিক সময়ে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় মতি মিয়াসহ অনেকেই বিপাকে পড়েছেন।
মতি মিয়ার প্রতিবেশী সুরুজ মিয়া জানান, একজন দক্ষ বাঁশের কারিগর মতি নিজের ভাগ্যের চাকা পরিবর্তন করে সমাজে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা এহসানুল হক জানান, নিরহারগাতি গ্রামের বাঁশের কারিগর মতির মতো আরও কয়েকজন কারিগরদের নামের জরিপ করা হয়েছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদেরকে সাবলম্বি করার পরিকল্পনা রয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড