• সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইদকে সামনে রেখে টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারপাড়া

  নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)

২৬ জুন ২০২৩, ১৬:১৭
ইদকে সামনে রেখে টুংটাং শব্দে মুখরিত কামারপাড়া

আর মাত্র কয়েক দিন পরই পবিত্র ইদুল আযহা। এবারের ইদকে সামনে রেখে তাই ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন করছেন নওগাঁর আত্রাই উপজেলার কামারপাড়ার শিল্পীরা। এবারের কুরবানির ইদ উপলক্ষে যতদিন গড়াচ্ছে ততই বাড়ছে কামারদের কর্মব্যস্ততা।

উপজেলার এই কামারশালার দোকানগুলোতে সারা দিন রাত টুং-টাং শব্দ বিরাজ করছে। গরু-ছাগল কাটার নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী মেরামত কিংবা নতুন করে তৈরি করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে আত্রাই উপজেলা সদরসহ ভবানীপুর-মির্জাপুর বাজার, শাহাগোলা, বজ্রপুর, বান্ধাইখাড়া, নওদুলিসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কামারপাড়া।

ইদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই কামার পরিবার ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। তারা রাতদিন তৈরি করছে হরেক-রকমের দা, ছুরিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। আত্রাই উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শত শত কামার পরিবার এ কাজে নিয়োজিত রয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার ভবানীপুর-মির্জাপুর বাজারের কামারপল্লী ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি কামারের দোকানেই ব্যস্ততা তারা কেউ বা লোহা আগুনে লাল বর্ণ করে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হাতিয়ার তৈরির উপযোগী করছেন। কেউবা পশু জবাই করার ছুরি ধার করছেন। একটি হাতিয়ার তৈরি করতে লোহা অনুযায়ী দাম নেওয়া হচ্ছে। ক্রেতাদের পছন্দের মতো তৈরি করেন

বিভিন্ন মাপের পশু কোরবানির চাপাতি, দা, বটি, ছুরি, কুড়াল আর ছোট চাকুর মতো লোহার সব ধারালো অস্ত্র। এগুলো সবই ব্যবহার হবে কুরবানির পশু জবাই থেকে শুরু করে মাংস ছাড়ানো আর হাড় কাটার কাজে। কেউ কেউ আবার গতবারের পুরাতন ছুরি ধার করিয়ে নিচ্ছেন নতুনভাবে কুরবানি করার জন্য। অনেকেই আবার এগুলো মেরামত করার জন্য কামারের বাড়িতে নিয়ে এসেছে।

উপজেলার ভবানীপুর বাজারের সূর্য কর্মকার বলেছেন, অন্যান্য বারের তুলনা এবার নতুন দা-বটি তৈরির অর্ডার বেড়েছে। আর পুরাতন গুলো মেরামত হচ্ছে পরিমাণে বেশি। বিশেষ করে কুরবানির ইদ এলে এসব দা-বটিসহ অন্যান্য উপকরণের কদর বেড়ে যায়। চলতি মৌসুমে কয়লার অভাবে কাজ করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।

বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এখন কয়লা পাওয়া দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কয়লা পাওয়া গেলেও দাম চড়া। কালের বিবর্তনে কয়লা হারিয়ে যাচ্ছে। এখন গ্রামে এলপি গ্যাস ও বন্ধু চুলা দিয়ে রান্না করা হচ্ছে।

কামারপট্টিতে আসা যাওয়া করলে শব্দ থাকায় যায় না। দিন-রাত পোড়া কয়লার গন্ধ, হাঁপড়ের হাঁস-ফাঁস আর হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে গ্রাম বাংলার চকচকে ধারালো দা-চাপাতি, ছুরি, বটিসহ গোস্ত কাটার উপকরণ।

এ বিষয়ে কার্তিক কর্মকার জানান, কয়লা, লোহাসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ার ফলে নতুন দা-বটিসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দামও বেড়ে গেছে। বছরের মধ্যে ১১ মাসই কামার পরিবারদের বসে থাকতে হয়। শুধু কুরবানির ইদ এলেই তাদের ব্যস্ততা পুরো দমে বেড়ে যায়। এ সময়ে কিছুটা আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। এ ছাড়া অনেক কামার বাড়ি বাড়ি গিয়ে দা-বটি-ছড়ি মেরামত করে থাকে।

দোকানে আসা ক্রেতা মো. অমর ফারুক বলেছেন, গরু জবাই করার জন্য বড় একটি ছুরি তৈরির করার অর্ডার দিয়েছি। তার দাম হলো এক হাজার পাঁচশত টাকা। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার কুরবানি দেয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

কুরবানির সরঞ্জাম কিনতে আসা আশরাফুল আলম বলেন, এবার কুরবানির গরু একটু আগেভাগেই কিনেছি। কুরবানির জন্য প্রয়োজন চাকু ও ছুরি। সে কারণে বাজারে এসেছি দা, বটি ও ছুরি কিনতে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড