মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
দীর্ঘ ১৭ বছর অপেক্ষার পর দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে আনন্দ বিরাজ করছে। প্রায় দেড় যুগেও কমিটির পরিবর্তন না হলেও হয়েছে বিলুপ্ত। তাই জেলা ও মহানগর কমিটির সম্মেলনকে ঘিরে ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন থানা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীরা।
এ দিকে জেলা ও মহানগর কমিটির সম্মেলন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও এখনো পর্যন্ত থানা কমিটির ঘোষণা করেননি দলটির কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৬ সালের মার্চ মাসের ২৮ তারিখ মো. জাঁকির হোসেন তালুকদারকে সভাপতি ও মো. আমিনুল হক রাজুকে সাধারণ সম্পাদক করে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ কমিটির অন্যান্যরা যেসব পদে ছিলেন তা হলো।
সহ সভাপতি পদে রাখা হয়েছিল : মো. মিজানুর রহমান, নূর আলম, হাবিবুর রহমান সুমন, মো. বায়োজিদ, মো. সৈয়দ আহমেদ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে : মাহফুজুর রহমান লাভলু, আলমগীর হোসেন,
সাংগঠনিক সম্পাদক : মো. শাহজাহান সম্রাট ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক দীদারুল ইসলাম, মাহফুজুল আলম খোকন।
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক : গোলজার হোসেন ও সহ প্রচার প্রকাশনা সম্পাদক মতিউর রহমান।
দপ্তর সম্পাদক : মামুনুর রশীদ, সহ দপ্তর সম্পাদক জামান প্রধান।
অর্থ বিষয়ক সম্পাদক : মো. সোহেল।
তথ্য গবেষণা ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক : মো. আলাউদ্দিন।
আইন বিষয়ক সম্পাদক : মো. গিয়াস উদ্দিন।
শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক : হাবিবুর রহমান।
স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক : ইলিয়াস আলী।
যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক : মীর মোহাম্মদ আবুল কাশেম।
সমাজ কল্যাণ সম্পাদক : মো. কাঁকন।
কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক : সাখাওয়াত হোসেন।
পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক : মিজানুর রহমান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক : মো. শহিদুল্লাহ্।
সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক : মাসুম মিয়া ও সহ সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পাদক : মো. রাসেল।
ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক সম্পাদক : ফিরোজ আহমেদ।
মহিলা বিষয়ক সম্পাদক : মাজেদা বেগম ও সহ মহিলা বিষয়ক সম্পাদক, শিল্পী বেগম।
ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক : মো. সজীব মোল্লা।
কার্যকারী সদস্যরা হলেন- এ এইচ এম মাহবুব আলম, মো. সাহাবুদ্দিন, মো. আমির হোসেন, মো. বাবুল ভুঁইয়া, মো. মাসুদ মিয়া, মো. অহিদ আলম, হাবিবুর রহমান অবুঝ, শফিকুল রহমান শাকিল, মিজানুর রহমান মিজান, মো. সহিদ উল্ল্যা, সাইফুল ইসলাম মিন্টু, মো. রনি হোসেন, ডা. বোরহান উদ্দিন, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মো. শফিক, মো. বাচ্চু মিয়া, মাহবুবুল আলম, মো. ইয়াসিন, মো. ইসরাফিল, মামুনুর রশীদ।
তিন বছর মেয়াদী সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি ঘোষণা করা হলেও তা লম্বা সময়েও পরিবর্তন হয়নি। তবে দীর্ঘ ১৬ বছর পার হলে সর্বশেষ ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের দপ্তর সম্পাদক আজিজুল হক আজিজের পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ এবং এর অন্তর্গত থানা ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছিলেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ।
এ দিকে তৃণমূল থেকে শুরু করে ভাইটাল প্রত্যাশীরা রাজনৈতিক মাঠে ময়দানে সক্রিয় ভূমিকায় থাকা স্বত্বেও কমিটির পরিবর্তন না হওয়ায় অনেকটা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানান অনেকে। তবে গত কয়েকমাস আগ থেকে কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের নজরে পরেছে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা কমিটি। ইতিমধ্যে কয়েক দফায় মিটিংও করেছেন তারা।
রাজধানীর অতি সন্নিকটস্থ সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি পদপ্রার্থীরা হলেন- সাবেক সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক রাজু, সাবেক জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. শফিকুল ইসলাম শফিক, সাবেক মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি সিব্বির আহমেদ।
সাধারণ সম্পাদক পদে পদপ্রার্থীরা হলেন- সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মানিক মাষ্টার ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জহিরুল ইসলাম।
কমিটির বিষয়ে সভাপতি পদপ্রার্থী আমিনুল হক রাজুর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেছেন, আমি আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের একজন পরীক্ষিত কর্মী। দীর্ঘদিন যাবত সাধারণ সম্পাদক পদে দলের রাজনীতি করে আসছি। ২০০৩ সালের পর থেকে থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের রাজনীতিতে মাঠে আছি। আমাদের থানা কমিটির সভাপতি পদ পাওয়ার পর দিনই দেশত্যাগ করেছিলেন। তারপর থেকে আমি দলের হাল ধরে রেখেছিলাম। দলের দুর্দিনে অনেক অসহ্য অত্যাচার সহ্য করেও মাঠে ছিলাম।
তিনি আরও বলেন, বিরোধী দল থাকাকালীন সময়ে ১১টি মামলা দেয়া হয়েছিল আমার নামে। লগি-বৈঠার আন্দোলনেও দুটি মামলা দেয়া হয় আমাকে। আমি মাননীয় সংসদ একে এম শামীম ওসমান ভাইয়ের রাজনীতি করি। তার দিকনির্দেশনা অনুযায়ী যা দরকার তা করে যাবো। আমি সভাপতি হিসেবে যোগ্য কিনা সেটা কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা যাচাই-বাছাই করে যদি মনে হয় তাহলে আমাকে দিবেন।
এ বিষয়ে আরেক সভাপতি পদপ্রার্থী শফিকুল ইসলাম শফিকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ভাই এ বিষয়ে একদিন অফিসে আসুন সরাসরি কথা বলবো।
সভাপতি পদপ্রার্থী সিব্বির আহমেদ বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ করে আসছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বর্তমানে চান তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্ব। তাই সিদ্ধিরগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগে আমি সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছি। আমি আশাবাদী আমাকে মূল্যায়ন করা হবে।
মহানগর কমিটির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি থেকেও থানা কমিটির নেতৃত্বে যাওয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগে ছিলাম। কিন্তু আমার বাড়ি সিদ্ধিরগঞ্জ এরিয়ায় পড়েছে। তাই আমি আমার এলাকার রাজনীতিকে গুছিয়ে নিতে এখানে আগ্রহী।
সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মানিক মাস্টার ও মো. জহিরুল ইসলামের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।
কমিটির বিষয়ে জানতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির বিষয়ে কিছু জানি না। কারণ গত ১ বছর এ কমিটি নিয়ে অনেক দৌড়াদৌড়ি করেছি। কিন্তু কেন্দ্রের নেতাকর্মীরা অনেকের কাছ থেকে কাগজ জমা দিয়েছে। আমাদের তেমন কিছুই জানাননি কিভাবে কি করবে তারা।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড