• রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এমপি মমতাজের বিরুদ্ধে হত্যা পরিকল্পনার অভিযোগ উপজেলা চেয়ারম্যানের

  শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ):

২৪ জুন ২০২৩, ১২:৪১
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান

সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান।

শুক্রবার (২৩ জুন) বিকেল চারটার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, গতবছর উপজেলার ঝিটকা আনন্দ মোহন উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচনে আমি সভাপতি প্রার্থী হই। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এমপি মমতাজ বেগমের লোকজন ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত সদস্যদের মারধর করে। আমি কখনো এমপি মমতাজ বেগমের বিরোধিতা করি নাই। দুইবার তার পক্ষে নির্বাচনে কাজ করেছি। আগামী সংসদ নির্বাচনে আমি এমপি পদে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। আমি এমপি নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছি। সেটা আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি নির্বাচনে দলের কাছে মনোনয়ন চাইবো। আমি যদি মনোনয়ন পাই তাহলে নির্বাচন করবো। নাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকে মনোনয়ন দেন আমি তার পক্ষে কাজ করবো। নৌকার পক্ষে কাজ করবো। কিন্তু এমপি প্রার্থী হতে চাওয়াতে যদি আমার মৃত্যুর মুখে দাঁড়াতে হয়, তাহলে আর কি বলবো!'

তিনি আরও বলেন, 'সম্প্রতি সরকার হরিরামপুরে পদ্মা নদীর বালু মহাল ইজারা দিলে সর্বোচ্চ দরে আমি ইজারা পাই। এমপির একজন পিএস এবং আবিদ নামের একজনও টেন্ডার জমা দেন। এই বালুমহালও আমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন সেই বালুমহাল বন্ধ করার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছে। বাঁধ নষ্ট হয়ে যাবে বলে মমতাজ বেগম ডিও লেটারও দিয়েছেন।

দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, 'এমপি মমতাজ বেগম বিএনপির লোকজন নিয়ে রাজনীতি করছে। তিনি যাদের দলে জায়গা দিয়েছেন তারা ছাত্রদল, যুবদল, বিএনপি থেকে এসেছে। এমপি অনুসারী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান ছাত্রদল থেকে এসেছে। রাতারাতি সে ছাত্রলীগ নেতা বনে গেছেন। লুৎফর তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে ঘুরছে। এটা বন্ধ করতে হবে। এমপির সমর্থকরা আমার লোকজনকে মারধর করছেন। আমার ছেলে এবং আমার সমর্থকদের বিরুদ্ধে তিনটি মিথ্যা মামলা করেছেন। এরশাদ নামে আমার এক সমর্থকের হাত ভেঙে দিয়েছে এমপির সমর্থকরা। ধুলশুড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী আবুল কালামকে মারধর করেছে। বয়ড়া ইউপি সদস্যকে থানার ভেতরে মারধর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা করতে চাইলে পুলিশ মামলা নেয়নি।'

তিনি বলেন, 'এমপি মমতাজ বেগম আমার ক্ষতি করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। এখন আমার জীবনের কোন নিরাপত্তা নাই। আমাকে হত্যা করতে পারে। আমার যদি কোন ক্ষতি হয় তাহলে এমপি মমতাজ বেগমই দায়ী থাকবেন।'

সংবাদ সম্মেলনে গাজী কালাম বলেন, আমি উপজেলা চত্বরে আসামাত্র এমপি অনুসারী ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমানের নেতৃত্ব ১৫-২০ জন আমাকে রক্তাক্ত করেছে। আমি হামলায় আহত হলাম, আবার আমিই মামলার আসামি হলাম।'

মুঠোফোনে জানতে চাইলে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ মিথ্যা। আমাদের এমপি কোন সন্ত্রাসী বাহিনী পালেনা। আমরা কাউকে হামলা করিনি। উপজেলা চেয়ারম্যান তার ছেলেসহ লোকজন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করছে। আমাদের ছাত্রলীগ, যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, শ্রমিকলীগের নেতাকর্মীদের মারধর করছেন। চেয়ারম্যানের ছেলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলাও হয়েছে। আমরা হরিরামপুরে শান্তি চাই। বালু মহালের নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে মাটি কাটছে চেয়ারম্যান। আমরা বালু মহালের বিরোধিতা করিনি, বেরি বাঁধ হুমকিতে পরবে বলে বালু মহাল নিয়ে কথা বলেছি।

মামলার বিষয়ে জানতে হরিরামপুর থানা ওসি সুমন কুমার আদিত্যর সরকারি মুঠেফোন নম্বরে একাধিক বার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগের বিষয়ে সংসদ সদস্য মমতাজ বেগম সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার কোনো সন্ত্রাসী গ্রুপ নেই। আমার কর্মকাণ্ড এবং ওনাদের (উপজেলা চেয়ারম্যান) কর্মকাণ্ড মানুষ জানে। কি কারণে তিনি আওয়ামী লীগের লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত তিনিই তা ভালো বলতে পারবেন। তার ছেলে ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগের নেতাদের মারধর করেছে। তিনি ও তার ছেলে বেপরোয়া হয়ে গেছে। তাদের কারণেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। পদ্মা নদীর বাঁধের কাছে বালু উত্তোলন করায় স্থানীয় জনগণই বাঁধা দিয়েছে।’

হরিরামপুরে সর্বস্তরের জনগণ ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লিয়াকত আলী, বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আওলাদ হোসেন, জেলা পরিষদের সদস্য ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি হায়দার আলী তারেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাশার সবুজ, বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফরিদুর রহমান ফরিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড