হাসপাতালে স্বামীর লাশ ফেলে স্বজনদের নিয়ে গায়েব স্ত্রী

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে হাসপাতালে স্বামীর মরদেহ ফেলে পালিয়ে গেল স্ত্রী সুইটি বেগম ও তার স্বজনরা। আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) সকালে চন্ডিবের উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ঘটনাটি ঘটে।

নিহত স্বপন মিয়া (৩০) উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপীর মঞ্জুনগর এলাকার এমাদ মিয়ার ছেলে। সে নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন।

হাসপাতাল ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাদেকপুর ইউনিয়নের মৌটুপী মঞ্জুনগর গ্রামে বাড়ি তৈরি করে বসবাস শুরু করেন স্বপন মিয়া। ৬-৭ বছর আগে প্রতিবেশী হাদিস মিয়ার মেয়ে সুইটিকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর থেকে দুজনের সংসার বেশ ভালোই চলছিল।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্বপন মিয়াকে গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করার পর মরদেহ হাসপাতালে রেখে শ্বশুরবাড়ির লোকজনসহ স্ত্রী পালিয়ে যায়। এরপর খবর পেয়ে পুলিশ হাসপাতালে এসে মরদেহে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ মর্গে পাঠায়।

নিহতের মামা বলেন, লোকমুখে শুনেছি আমার ভাগিনা বিষপানে মৃত্যু হয়েছে। তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন ও তার বউ নাকি তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসছে। খবর পেয়ে আমি হাসপাতালে এসে দেখি আমার ভাগিনার মরদেহ রেখে তার বউসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গেছে। কিভাবে কি কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা এখনো জানতে পারিনি। যেহেতু মরদেহ রেখে তারা পালিয়ে গেছে সেহেতু এ ঘটনার পিছনে নিশ্চয়ই কোনো রহস্য আছে।

নিহতের চাচা হারুন মিয়া বলেন, দীর্ঘ বছর ধরে তারা আমাদের গ্রাম থেকে মঞ্জুনগর গ্রামে বাড়ি করে বসবাস করছেন। সেখানেই সে বিয়ে করেছেন। হঠাৎ কি হয়েছে তাদের মধ্য তা আমরা জানতে পারিনি। মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে এসে দেখি মরদেহ রেখে তার বউ পালিয়ে গেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সোয়েব রহমান বলেন, সকালে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত রোগী নিয়ে স্বজনরা আসলে হাসপাতালে আসলে আমরা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করি। এর পরেই রোগীর স্ত্রীসহ স্বজনরা মরদেহ রেখে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার পুলিশ পরিদর্শক এসআই ওসমান গনি বলেন, গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে এসে তাকে ভর্তি করে। মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বপনের স্ত্রীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাৎক্ষণিক হাসপাতালে মরদেহ রেখে পালিয়ে যায়। এ মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে কোনো রহস্য আছে কি-না তা জানার জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।