• শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মাদক-সন্ত্রাস ও অপরাধ নির্মূলে বিরামহীন ছুটে চলেছেন ওসি সিদ্দীক 

  আল মামুন, জয়পুরহাট

১৪ জুন ২০২৩, ১১:৫৩
মাদক-সন্ত্রাস ও অপরাধ নির্মূলে বিরামহীন ছুটে চলেছেন ওসি সিদ্দীক 
আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দীক চৌধুরী (ছবি : অধিকার)

বর্তমানে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে মাদক ও সন্ত্রাস। বাংলাদেশের পুলিশ প্রশাসন সন্ত্রাস ও মাদকের বিস্তার রোধকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায়, জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দীক চৌধুরী আক্কেলপুরে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা, মাদক-সন্ত্রাস ও অপরাধ দমনে নির্মূলে কঠোর ভূমিকায় নিরলস কাজ করছেন।

আক্কেলপুর থানায় যোগদানের পর থেকেই মাদক, সন্ত্রাস, চুরি, ছিনতাই, ইভটিজিং ও সব ধরনের সামাজিক অপরাধ নির্মূলে জনগণকে সচেতন করতে বিরামহীন ভাবে ছুটে চলেছেন তিনি। চুরি হওয়া বৈদ্যুতিক মিটার/ট্রান্সফরমারের যন্ত্রাংশ বগুড়া হতে উদ্ধার সহ এ চক্রের হোতা সাতজন আসামী গ্রেফতার, আন্তঃজেলা গরু চোর চক্রের পাঁচজন সদস্য গ্রেফতারসহ চুরি যাওয়া ৩টি গরু গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ থানা এলাকা হতে উদ্ধার।

ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র ও পিকআপসহ পাঁচজন আন্তঃজেলা ডাকাত সদস্য গ্রেফতার। ক্লুলেস হত্যার রহস্য উদঘাটন সহ মুল আসামী গ্রেফতারসহ বিভিন্ন অপরাধ দমনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছে প্রশংসনীয় হয়ে উঠেছেন।

অসাম্প্রদায়িকতার চেতনা ধারণ করে তিনি এই থানার আওতায় প্রত্যন্ত অঞ্চলের মসজিদ, মন্দির, হাটবাজার, জনসমাগম এলাকাসহ তিনি প্রতিনিয়ত জনগণের সাথে সরাসরি সভা, সেমিনার ও উঠান বৈঠক করেছেন। সমাজের নানারকম সমস্যা সমাধানের জন্য জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি হৃদয় দিয়ে বরণ করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষগুলো।

জনগণকে তিনি বোঝানোর চেষ্টা করছেন যে, সমাজে যারা খারাপ কাজের সাথে জড়িত তাদের সংখ্যা খুবই কম। সমাজে ভালো মানুষের বসবাস এখনো অনেক বেশি। তাই সবাইকে সমাজের তথা দেশের কল্যাণে কাজ করতে হবে। এই কমসংখ্যক খারাপ মানুষ সমাজটাকে অস্থিতিশীল করে তোলে। কারণ একটাই! আমরা সমাজের মানুষগুলো প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারছিনা। আমরা প্রতিবাদ না করায় দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছি।

স্থানীয় জনগণ যদি পুলিশকে সহযোগিতা করে তাহলে সমাজ থেকে এসব অপরাধীদের নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া সম্ভব হবে বলে জনগণকে আশ্বস্ত করেন।

তিনি বলেছেন, আপনাদের যে কোনো সমস্যা সরাসরি পুলিশকে জানান, তাহলে পুলিশ আপনাদের সহযোগিতা করতে পারবে। তিনি মা-বোনদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা যারা রাস্তায় বিভিন্ন কাজে চলাফেরা করেন তারা অবশ্যই থানার নম্বর ও স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের নম্বর সঙ্গে রাখবেন। বখাটে ছেলেরা আপনাদের উত্যক্ত করলে চুপ থাকবেন না বরং প্রতিবাদ করবেন। পুলিশ আপনাদের সহযোগিতায় পাশে আছে।

তিনি আরও বলেন, ইভটিজিংয়ের শিকার হলে স্থানীয় বিট পুলিশিংয়ের সহযোগিতা নিতে অথবা সরাসরি তার নম্বরে যোগাযোগ করতে।

ওসি সিদ্দীক বলেছেন, যেসব মানুষ বিপদে পড়বেন বা সমস্যার সম্মুখীন হবেন সরাসরি থানায় চলে আসবেন। এই থানার ওসির কক্ষের দরজা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত। কাউকে কোনো তদবির করতে হবে না, কোনো মানুষ সঙ্গে আনতে হবে না। এক কথায় আপনারা যে কোনো রকম সমস্যায় পড়লে পুলিশের শরণাপন্ন হবেন পুলিশ আপনার সমস্যাটা নিজের মনে করে আপনাদের সেবা দেবে। সেই সাথে যুবকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, আপনারা সকলে বাবা মায়ের সেবা করবেন। বাবা মা কোন সন্তানের বিরুদ্ধে কোন ধরনের অভিযোগ আমার কাছে আনলে চুল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবেনা। তিনি এই এলাকার মানুষকে পুলিশকে সহযোগিতা করার আহবান জানান।

এলাকার একাধিক জনসাধারণের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি এখানে যোগদানের পূর্বে এলাকায় মাদক চোরাকারবারিসহ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজ তুঙ্গে উঠেছিল। তিনি এসে পর্যায়ক্রমে মাদক কারবারি ও সেবনকারী সহ সকল অপরাধ মূলক কাজকে প্রায় ৯০ ভাগ কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। এ জন্য তিনি ইতিমধ্যে এলাকার আপামর জনতার কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।

এখানকার মানুষের জান-মালের নিরাপত্তার স্বার্থে রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্বরত পুলিশ অফিসার ও ফোর্সদের সর্বদা সজাগ রাখা ও সার্বিক তদারকির পাশাপাশি তিনি নিদ্রা পরিত্যাগ করে সারারাত জেগে তিনি টহল দেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ও পাড়া-মহল্লার ভিতরে পায়ে হেঁটে টর্চলাইট নিয়ে পর্যবেক্ষণ করে পাহারাদারের ভূমিকাও পালন করে আসছেন তিনি। পুলিশি সেবায় বিচক্ষণ, দূরদর্শী এবং বন্ধুসূলভ ব্যবহারে পুলিশ কর্মকর্তা থেকে জনসাধারণের বন্ধুতে পরিণত হয়েছেন তিনি।

তার নিরলস প্রচেষ্টা ও ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে জনগণকে পুলিশি সেবা দিতে স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করে যাচ্ছেন অধীনস্থ পুলিশ সদস্যরা।

আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও অপরাধ দমনে দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ রাখতে সর্বদা অধীনস্থ পুলিশ সদস্যদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।

থানায় এসে কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়ায় পুলিশের প্রতি আমার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন হয়েছে বলে শ্রীকৃষ্টপুর গ্রামের সুমি আক্তার বলেন, নির্দ্বিধায় ওসির অফিসে গিয়ে আমার সমস্যার কথা ওনাকে বলে সুষ্ঠু সমাধান পেয়েছি। আমি গরিব মানুষ, তারপরও ওসি স্যারের আচরণে আমি মুগ্ধ হয়েছি। বর্তমানে এই থানার ওসি এবং সকল পুলিশ খুবই ভালো এবং আন্তরিক। আমি তাদের জন্য দোয়া করি।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আক্কেলপুর মুজিবর রহমান সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মোকছেদ আলী বলেন, বর্তমান ওসি খুবই ইনটেলিজেন্ট মানুষ। উনি এখানে যোগদানের পরে চুরি-ডাকাতি সহ যাবতীয় অপরাধ কমে গেছে এবং ইতিমধ্যে তিনি ক্লুলেস মার্ডারের তথ্য উদঘাটন, চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধার, আসামি গ্রেপ্তারসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখায় সর্ব মহলে আস্থাশীল ও প্রশংসনীয় হয়েছেন। যেহেতু আমরা রাজনীতি করি, সে সুবাদে আমাদের কাছে অনেক তথ্য আসে। বর্তমান ওসির কাছে সেবা প্রত্যাশী কোন জনগণ অর্থনৈতিক বা কোন প্রকার হয়রানির শিকার হয়নি। একথাটি আমি চলতি মাসের আইন-শৃঙ্খলা মিটিংয়ে উপস্থাপনও করেছি।

আক্কেলপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রুকিন্দিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আহসান কবির এ্যাপ্লব বলেন, থানার বর্তমান ওসি যথেষ্ট আন্তরিক। তিনি জনসাধারণের সার্বিক সমস্যা আন্তরিকতার সহিত সমাধানের চেষ্টা করেন এবং এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালোই আছে।

আক্কেলপুর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বজলুর রশিদ কবিরাজ মন্টু বলেন, ওসি আবু বকর সিদ্দিক তার কর্মদক্ষতায় আমাদের উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই ভালো রেখেছেন। তার কাছে ধনী-গরীবের কোন ভেদাভেদ নেই। অপরাধ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে তিনি সর্বদাই তৎপর। এখানে সাধারণ মানুষ রাত-বেড়াত নির্বিঘ্নে ও নিরাপদে চলাচল করতে পারে।

আক্কেলপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দীক এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আমি এ থানায় যোগদানের পর থেকেই জয়পুরহাট জেলার মাননীয় অত্র জেলার সুযোগ্য পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নুরে আলম স্যারের নেতৃত্বে ও সার্বিক দিক-নির্দেশনায় মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ, কিশোর গ্যাং, নারী ও শিশু নির্যাতন দমনে নিষ্ঠার সাথে কাজ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। পাশাপাশি আসন্ন পবিত্র ইদুল আযহা উপলক্ষে ব্যবসায়ী ও জনসাধারণের হয়রানি প্রতিরোধ এবং যানজট নিরসনের লক্ষ্যেও কাজ করছি।

তিনি আরও বলেন, মাননীয় পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম স্যার একজন জনবান্ধন ও মানবিক পুলিশ অফিসার। তার নেতৃত্বে এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে পুলিশি সেবার পাশাপাশি বিভিন্ন মানবিক কাজও করা হয়। তার ব্যক্তিগত অর্থায়নে অসহায়, দুস্থ ও গরিব-দুঃখীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, ইদ সামগ্রী বিতরণসহ বিভিন্ন সামাজিক ও মানবিক কাজ করা হয়। তাকে অনুসরণ করে এ সকল ভালো কাজ করার অনুপ্রেরণা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিকট থেকেই আমি পেয়েছি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড