• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

পাঁচদিনের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব সম্পন্ন

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

০৬ জুন ২০২৩, ১৫:৪৯
পাঁচদিনের বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব সম্পন্ন

কিশোরগঞ্জে ভৈরবে নিবেদিতা নাট্যঙ্গনের আয়োজনে পাঁচ দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব জমকালো পরিবেশে শেষ হয়েছে।

শহরের জিল্লুর রহমান মিলনায়তনে গত ১ জুন থেকে ৫ জুন পর্যন্ত দেশ-বিদেশের নাট্যদলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই নাট্যোৎসবের অনুষ্ঠান শেষ হয়েছে। নিবেদিতা নাট্যাঙ্গনের রজত জয়ন্তী উপলক্ষে উৎসবের স্লোগান ছিল 'সবকিছু ভুলে সুন্দরকে নেব তুলে'।

গেল সোমবার সমাপনী দিনে ভারতের নাট্যভূমি দল মধ্যস্থ করে উইলিয়াম শেকসপিয়ারের বিশ্বখ্যাত ওথেলো অনুপ্রাণিত নাটক রঙিন রুমাল। নাটকে সতেরো শতকের ত্রিপুরার এক খণ্ড ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে। নাটকে দেখানো হয়, ভারত সম্রাট শাহজাহানের পুত্র শাহ সুজা ১৬৪১ সালে নিযুক্ত হয়েছেন বাংলা-বিহারের সুবেদার হিসেবে।

তখন ত্রিপুরায় মহারাজা গোবিন্দ মাণিক্যের সময়কাল। সংঘাত সৃষ্টিতে তলে তলে সক্রিয় সুযোগসন্ধানী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীরা। প্রেম, লোভ, হিংসা, নিষ্ঠুরতা, বিশ্বাসঘাতকতা উঠে আসে নাটকে। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন সঞ্জয় কর।

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে পাঁচ দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবের প্রথম দিন গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মঞ্চস্থ হয়েছে গীতি নৃত্যনাট্য ধানগীত। নিবেদিতা নাট্যাঙ্গন নাটকটি মঞ্চে নিয়ে আসে।

নাটকটি রচনা করেন কাজল কান্তি পাল। নাট্যরূপ ও নির্দেশনা দেন সংগঠনের সাবেক প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আরিফ রেজা। নৃত্য নির্দেশক, মানস কর। নাটকটি মঞ্চস্থ হয় জিল্লুর রহমান পৌর মিলনায়তনে।

নিবেদিতা নাট্যাঙ্গন প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর উপলক্ষে সংগঠনটি এ উৎসবের আয়োজন করে। বাঙালির ভাত ছাড়া চলে না। ভাত আসে চাল থেকে। আর চাল হয় ধানে। এখনো এ দেশের গ্রামীণ অর্থনীতি কৃষিনির্ভর, আর বিশেষ গুরুত্ব পায় ধান। বছরের বাকি সময়টা সুখে যাবে নাকি দুঃখে অনেকটা নির্ভর করে ধানের ফলন কেমন হলো, তার ওপর।

চারা রোপণ থেকে শুরু করে ধান কাটা, মাড়াই ও চাল করা- প্রতিটি পর্ব অনিশ্চয়তায় ভরা এবং রোমাঞ্চকর। ধান নিয়ে রাজনীতি হয়। সৃষ্টি হয় মহাজন শ্রেণি। এক কথায় এ গীতিনাট্যে ধান নিয়ে গ্রামীণ জনপদের সুখ-দুঃখের নানা দৃশ্যপট উঠে আসে।

দ্বিতীয় দিনে উৎসবের মঞ্চে মঞ্চস্থ হয় ঢাকার সময় নাট্যদলের পরিবেশনায় ভাগের মানুষ।নাটকটি রচনা করেছেন মান্নান হীরা আর নির্দেশনা আলী জাকের।

উৎসবের তৃতীয়দিনে শনিবার মধ্যস্থ হয় নাটক ভাগের মানুষ। ঢাকার সময় নাট্যদল নাটকটি পরিবেশন করে। নাটকটিতে ভারতবর্ষের বিভাজনের কথা উঠে আসে। নাটকটি রচনা করেছে মান্নান হীরা ও নির্দেশনা দিয়েছেন আলী যাকের।

ভৈরবে পাঁচ দিনব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসবের চতুর্থ দিনে মঞ্চস্থ হয় আগুনমুখা। গত রোববার জিল্লুর রহমান পৌর মিলনায়তনে সিলেটের লুপ্তক থিয়েটার এ নাটক পরিবেশন করে। নাটকটি রচনা করেন নাট্যজন মান্নান হীরা। নির্দেশনা দেন নীলোৎপল দে।

নাটকে দেখা যায়, পাহাড়ের নিপীড়িত মানুষের পক্ষে একদল সংগ্রামী তরুণ। অধিকার প্রতিষ্ঠায় সংগ্রামীদের কাছে মৃত্যু যেন বড় কোনো ঘটনা নয়। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত আর ন্যায়-অন্যায়ের গল্পে সংগ্রামীরা একসময় দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু তাঁদের সংগ্রাম মরে না। দ্বন্দ্ব বাড়ে। এই দ্বন্দ্ব যেন সত্যের সঙ্গে সত্যের আর বিবেকের আদালতের সঙ্গে আইনের আদালতের। আগুনমুখা নাটকের প্রেক্ষাপট ঠিক এমনই। আগুনমুখা যেন সংগ্রামী মানুষেরই মূর্ত প্রতীক হয়ে ওঠে।

নিবেদিতা নাট্যাঙ্গের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সবুজ বলেন, এবারের নাট্যোৎসব ভৈরবের থিয়েটার প্রেমীদের প্রাণ জুগিয়েছে। আমরা চাই প্রতি বছর এরকম নাট্যোৎসব হউক।

সংগঠনের সভাপতি নিজাম উদ্দিন পলাশ জানায়,সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমাদের নিবেদিতা নাট্যাঙ্গন ১৯৯৮ সাল থেকে পথচলা শুরু। তখন থেকেই আমরা সমাজের অসঙ্গতি দূরীকরণে আমরা নাটকের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছি। আর এবার আমরা ২৫ বছর পূর্তিতে ৫দিন ব্যাপী বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী নাট্যোৎসব আয়োজন করা হয়।

তিনি আরও জানান, সমাপনী দিনে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের নাট্যদল নাট্যভূমি মঞ্চস্থ সুন্দরভাবে পরিবেশন করেছে শেক্সপিয়ার অনুপ্রাণিত নাটক “রঙিন রুমাল”।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড