• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩১ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ধর্ষণ মামলায় যুবকের হাজতবাস, বিনা দোষে জেল খাটছে বলে দাবি মায়ের

  এম.কামাল উদ্দিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার (রাঙামাটি)

০৩ জুন ২০২৩, ১৬:৪৮
ধর্ষণ

রাঙামাটিতে ধর্ষণ মামলায় প্রায় সাড়ে নয় মাস যাবত হাজতবাস করছে মো. সুজন ওরফে নয়ন (২৪) নামে এক যুবক। নয়ন শহরের ফিশারিঘাট এলাকার মৃত দিল মোহাম্মদ ও পারভীন আক্তারের ছেলে। ছেলে নয়নের মুক্তির জন্য দিনের পর দিন আদালতের দ্বারে দ্বারে ধরনা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন মা পারভীন। এতে আর্থিক হয়রানিতে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে মানুষের বাসা- বাড়িতে কাজ করে খাওয়া পারভীন আক্তারের। তার দাবি, ছেলেটি বিনা দোষে জেল খাটছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও সাজানো মামলাদেওয়া হয়েছে। এখন ছেলের মুক্তির জন্য দিনের পর দিন আদালতের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ঘুরতে হচ্ছে। এতে সর্বশান্ত হয়ে গেছি। এখন আর কোনো উপায় নেই। আমি মিথ্যা মামলা থেকে নির্দোষ ছেলের মুক্তি চাই।

জানা যায়, ২০২২ সালের ২০ আগষ্ট একই এলাকার প্রতিবেশী এক নারী বাদী হয়ে তার মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে পারভীনের ছেলে নয়নের বিরুদ্ধে রাঙামাটি কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা (নং-০৭, তারিখ-২০/০৮/২০২২ ইং) দায়ের করেন। তার অভিযোগ, গত বছর ১৭ ও ২৪ জুলাই এবং সর্বশেষ ১৭ আগষ্ট পারভীনের ছেলে মো. সুজন ওরফে নয়ন তার মেয়েকে ইচ্ছার বিরুদ্ধে একাধিকবার ধর্ষণ করে। তার মেয়ের বয়স তেরো এবং ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। মেয়ের ধর্ষণের বিচার চেয়ে বিবাদীর

বিরুদ্ধে স্বশরীরে হাজির হয়ে কোতোয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বলে উল্লেখ করেন বাদী। এদিকে তথ্যানুসন্ধানে ওই সময় দেওয়া অভিযোগে ভুক্তভোগী বলে দাবি করা মেয়েটির বয়স তেরো উল্লেখ করা হলেও তার জন্ম নিবন্ধন সনদে দেখা যায়, তার জন্ম তারিখ ২০০৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর। এতে পূর্ণ বয়স হওয়ায় ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর নোটারি পাবলিকে হলফনামা এবং মুসলিম বিবাহ ও তালা (নিবন্ধন) বিধিমালা ২০০৯ বিধি অনুযায়ী নিকাহনামা সম্পাদন করে রাঙামাটি শহরের রিজার্ভ বাজারের মসজিদ কলোনির ইউসুফ আলী ও হোসনেরা বেগমের ছেলে মো. সাব্বিরের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়া হয়।

অন্যদিকে মেয়েটির ডাক্তারি ও ডিএনএ পরীক্ষায় অভিযোগের আলামত পাওয়া যায়নি। সিআইডি তত্ত্বাবধানে ঢাকার ফরেনসিক ডিএনএ ল্যাবরেটরি অব বাংলাদেশ পুলিশ সেন্টারে করা ভ্যাজাইনাল সোয়াব পরীক্ষায় অভিযুক্ত সুজন ওরফে নয়নের বীর্যের উপাদানের উপস্থিতি শনাক্ত হয়নি এবং আলামতে বীর্যের উপস্থিতি শনাক্ত না হওয়ায় মো. সুজনের ভ্যাজাইনাল সোয়াবের ডিএনএ প্রোফাইলের সঙ্গে তুলনামূলক বিশ্লেষণ সম্ভব নয় বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বিষয়টি রাঙামাটির বিজ্ঞ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, আমলি আদালতে নথিভুক্তির আবেদন করেছেন কোতোয়ালি থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক চিং মারমা।

ছেলের মুক্তির জন্য আকুতি জানিয়ে মামলার আসামি সুজন ওরফে নয়নের মা পারভীন আক্তার বলেন, আমার ছেলে সম্পূর্ণ নির্দোষ বলে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এরপরও বিনা দোষে জেল খাটতে হচ্ছে ছেলেকে। ওই মেয়েটিকে নাবালিকা বা তেরো বছরের কিশোরী দাবি করা হলেও তার প্রাপ্ত বয়স হয়েছে। তাই আমার ছেলের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ার কিছু দিন না যেতেই আইন অনুযায়ী বিয়ে দেওয়া হয়েছে। মূলতঃ মেয়ের মা আমার থেকে ভাড়া বাসা চেয়ে না পাওয়ায় এবং আমার ছেলের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাবে সম্মতি না দেওয়ায় ছেলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা অভিযোগ দিয়েছেন। এতে বিনা দোষে সাজা ভোগ করতে হচ্ছে আমার নিরপরাধ ছেলেকে। আমি ছেলের মুক্তির জন্য মানবিক আবেদন জানাই।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড