• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বন্ধুর হয়ে প্রক্সি এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসে শ্রীঘরে যুবক

  তন্ময় সাহা, রায়পুরা (নরসিংদী)

২৮ মে ২০২৩, ১৩:২৭
বন্ধুর হয়ে প্রক্সি এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসে শ্রীঘরে যুবক

নরসিংদীর রায়পুরায় এসএসসি দাখিল পরীক্ষায় বন্ধুর হয়ে প্রক্সি দিতে এসে ধরা পড়েছে হৃদয় (১৪) নামে এক মাদরাসা শিক্ষার্থী। সন্দেহজনকভাবে তাকে ডেকে আনার পর সে নিজেই বিষয়টি স্বীকার করে। এরপর তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় প্রকৃত পরীক্ষার্থী মাহাদী হাসানকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার (২৭ মে) সকালে মাদরাসা বোর্ডের স্থগিত হওয়া ইংরেজি-১ বিষয়ে পরীক্ষা চলাকালীন উপজেলার সৈয়দপুর মোহাম্মদীয়া ফাজিল ডিগ্রি মাদরাসা কেন্দ্রে একই উপজেলার চরসুবুদ্ধি ফাজিল মাদরাসার এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে যান। এরপর তাকে সন্দেহ হলে স্থানীয়রা বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করেন।

নির্বাহী কর্মকর্তা গিয়ে প্রক্সি দিতে আসা হৃদয়ের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন ও প্রবেশ পত্র নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে প্রথমে বিষয়টি স্বীকার করে। পরে প্রবেশপত্র যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত হয় যে সে মাহাদী নামক এক শিক্ষার্থীর হয়ে পরীক্ষা দিতে গিয়েছেন। এরই মধ্যে সে মাদরাসা বোর্ডের আওতায় এসএসসি দাখিলের সবগুলো পরীক্ষায় অংশ নেয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কেন্দ্র সচিব তাজ উদ্দিন জানান, এ কেন্দ্রে ১১টি মাদরাসার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। প্রত্যেক মাদরাসার প্রধানগন এসে তাদের শিক্ষার্থীদের নিশ্চিত করে আমাদের কাছে স্বাক্ষর করে যান। প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের যাচাই করার মতো সুযোগ আমাদের নেই। অন্যান্য শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি চরসুবুদ্ধি দাখিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল এবিএম গাজিউর রহমানের শ্যালক মাহাদীর পরিবর্তে হৃদয় নামে অন্য এক ছেলে এতদিন পরীক্ষা দিয়েছে।

জানা গেছে, প্রক্সি পরীক্ষা দিতে আশা হৃদয় ও মাহাদী একই ক্লাসের ছাত্র। সবকিছু ঠিক থাকলে এ বছর হৃদয় নিজেই পরীক্ষায় অংশ নিতেন। তবে নির্ধারিত সময়ে রেজিস্ট্রেশন না করায় সে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারেনি। তবে টাকার বিনিময়ে বন্ধুর হয়ে প্রক্সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে এসে এসএসসির শেষ পরীক্ষায় ধরা পরে সে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এ বছর দাখিল পরীক্ষায় এ কেন্দ্রে প্রায় একাধিক শিক্ষার্থীর কেও কেও বিদেশে আছে আবার কারো কারো বিদেশের প্রস্তুতিও চলছে। তারা পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে টাকার বিনিময়ে অন্যদের দিয়ে পরীক্ষা দেওয়াচ্ছে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে শুনতে পেরেছি। তারা রায়পুরার বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র। ওই কেন্দ্রে কয়েক বছর যাবত মাদরাসার প্রধান ও সহকারী শিক্ষক মিলে নিয়মিতভাবে পরীক্ষা শুরু হওয়ার কয়েক মিনিট আগে প্রশ্নপত্র গোপন কক্ষে নিয়ে উত্তরপত্র তৈরি করে তা প্রতিটি কক্ষে বিতরণ করে আসছে।

এমনকি এ কাজে সহযোগিতা করার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসারকে বসিয়ে রাখার কথা বলে প্রতি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয় বলে অনেক শিক্ষার্থীর কাছ থেকেই শুনেছি। এখন এসব কাজে যদি কর্তৃপক্ষই জড়িত থাকে তাহলে এগুলো দেখবে কে..? এসব শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎই-বা কি..? এমনটাই প্রশ্ন সকলের। অন্য দিকে এসব অভিযোগকে পুরোপুরি মিথ্যা এবং ষড়যন্ত্রমূলক বলে দাবি করেছেন কেন্দ্র সচিব তাজ উদ্দিন।

এ বিষয়ে জানতে চরসুবুদ্ধি দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক এবিএম গাজিউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, বহিষ্কৃত মাহাদী হাসান আমার কেউ না। আমি প্রক্সি শিক্ষার্থী ও বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করতে থানায় এসেছি। আমি দের মাস যাবত অসুস্থ হয়ে বাসায় আছি, কেন্দ্রেই যেতে পারি না। আমি কিভাবে এ বিষয়টি জানবো!

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আজগর হোসেন বলেন, প্রক্সি দিতে আসা ছেলের নাম হৃদয়। সে উপজেলার চরসুবুদ্ধি এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। সে ওই মাদরাসার প্রিন্সিপালের শ্যালক মাহাদীর হয়ে প্রক্সি দিতে আসে। অভিযোগ পাওয়ার পর তাকে ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সে সব স্বীকার করেছে। সে প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়ায় মোবাইল কোর্টের আওতায় আনা সম্ভব হচ্ছেনা তবে পাবলিক পরীক্ষার প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড