• বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৪ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

জাল সিল-সাক্ষরে চাকুরি দেয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার শিক্ষিকা

  মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও

২২ মে ২০২৩, ১৫:০৫
জাল সিল-সাক্ষরে চাকুরি দেয়ার প্রতিবাদে সোচ্চার শিক্ষিকা

ঠাকুরগাঁওয়ে পাহাড়ভাঙ্গা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশ ও সিল-সাক্ষর জাল করে চাকুরি পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। তারই প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষিকা রিনা আক্তার।

আজ সোমবার (২২ মে) সকালে ঠাকুরগাঁও শহরের একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে সহকারী শিক্ষিকা রিনা আক্তার বলেন, জেলা সদরের চিলারং ইউনিয়নের আরাজী পাহাড়ভাঙা আদর্শ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশ ও শিক্ষা অফিসারের সিল সাক্ষর জাল করে আব্দুর সবুরকে চাকুরি পাইয়ে দেয়।

তিনি আরও বলেন, ২০১১ সালের ২৪ ডিসেম্বরে নিয়োগের পর ২৮ ডিসেম্বর ওই স্কুলে সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করি। ২০১৭ সাল পর্যন্ত আমি চাকুরি করে আসছিলাম। উক্ত স্কুলের ৩০০ ফিটের মধ্যে আরেকটি স্কুল হওয়ায় আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করাকে নিয়ে ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দবিরুদ্দীন নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নাসিরুল ইসলাম ও আমিসহ চারজন শিক্ষকের নামে সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালত ঠাকুরগাঁওয়ে মামলা দায়ের করেন।

তার দাবি, ২০১৭ সালের ২৩মার্চ আরাজী পাহাড়ভাঙ্গা আদর্শ বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে সরকারিকরণ করা হলে পরবর্তীকালে আমি স্কুলে গেলে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু আমাকে স্কুলে প্রবেশে বাধা দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বাধা প্রদানের কারণ জানতে চাইলে তারা জানান আপনাকে চাকুরী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কেন অব্যাহতি দেওয়া হলো এই মর্মে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর একটি অভিযোগ প্রদান করি।

তিনি বলেছিলেন, অভিযোগটি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। কিন্তু তদন্ত প্রতিবেদনে আমাকে অতিরিক্ত শিক্ষক হিসেবে দেখানো হয়।

তার দাবি, পরবর্তী সময়ে নিরুপায় হয়ে ২০১৭ সালের ২৪ সেপ্টেম্বরের ঠাকুরগাঁও সদর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, সভাপতি নাসিরুল ইসলাম, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি সিদ্দিকুল ইসলাম, বিতর্কিত শিক্ষক আব্দুর সবুর, কমিটির সদস্য কুতুব আলী, সদস্য আনোয়ার হোসেনসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করি।

তিনি জানান, মামলা করার পর জানতে পারি উক্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, আজিজা বেগম, রিতা আক্তার, আব্দুর সবুর আদালতে যে নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্র জমা দিয়েছেন তা সম্পূর্ণ ভুয়া। তাদের নিয়োগপত্র ও যোগদানপত্রে যে সিল ও সাক্ষর ব্যবহার করা হয়েছে তা উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস সালাম এর নয়। প্রধান শিক্ষক ও কমিটির সভাপতির যোগসাজশে তারা সিল ও স্বাক্ষর জাল করেছে।

সহকারী শিক্ষিকা বলেন, আদালতে ২০০৪ সালের ৮ এপ্রিল প্রধান শিক্ষক লায়লা বানু, আজিজা বেগম উক্ত স্কুল নিয়োগ কমিটির সদস্য দেখালেও সাত দিন পর তারাই নিয়োগ পায়। শিক্ষা অফিসারের সিল-স্বাক্ষর জালিয়াতির বিষয়টি আমি চলতি বছরের ২২মার্চ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ করে কোনো সমাধান না পেয়ে আবারও ৭-মে একই দপ্তরে পুনরায় অভিযোগ করেছি, কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সুরহা পাচ্ছি না।

রিনা আক্তার আরও বলেন, আমার মামলার আসামিরা আদালতে জবানবন্দিতে জানায় যে রিনা আক্তার স্বেচ্ছায় সহকারী শিক্ষিকা পদ থেকে অব্যাহতি দেন। কিন্তু তারা আমার স্বেচ্ছায় অব্যাহতির কোনো কাগজপত্র আদালতে দেখাতে পারেনি। পরে আদালত আমার নিয়োগপত্র ও যোগদান পত্র সত্য বলে জানান। কিন্তু পরবর্তীকালে সাক্ষীর ভুল বক্তব্যে আদালত আমার মামলাটি খারিজ করে দেন। যা আমি উচ্চ আদালতে আপীল করি এবং তা চলমান রয়েছে। তাই আপনাদের মাধ্যমে সঠিক বিষয়টি তুলে ধরার মাধ্যমে ন্যায্য বিচার পাবো বলে আশা করছি।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে জেলার বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মনসুর রহমান বলেন, মামলা চলমান রয়েছে। আদালতের রায়ের অপেক্ষায় আমরাও।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড