• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সুন্দরবনে বন কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধে জেলেদের প্রতিবাদ

  সম্রাট, কয়রা (খুলনা)

১৯ মে ২০২৩, ১৫:১২
সুন্দরবনে বন কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধে জেলেদের প্রতিবাদ

পশ্চিম সুন্দরবনের খুলনার কয়রা উপজেলায় সুন্দরবনের কাশিয়াবাদ স্টেশনের আওতাধীন বজবজা ফাঁড়ি ইনচার্জ তানজিরুল ইসলাম ও খাসিটানা ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলমের বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় নিরীহ জেলে ও বাওয়ালিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে।

অভিযোগ উঠেছে বৈধ পাশ পারমিটে সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরতে গেলেও গোন প্রতি টাকা না দিলে হতে হয় নানা হয়রানির শিকার। এছাড়া অভিযোগ উঠেছে টাকার বিনিময়ে হরিণ শিকারে সহায়তাসহ সুন্দরবনের অভয়ারণ্যে স্থানীয় প্রভাবশালীদের সাথে নিয়ে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে মাছ ধরার সুযোগ করে দেন বন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের বাজারে জোড়শিং, পাতাখালি, খাসিটানা গ্রামের দেড় শতাধিক মাছ ও কাঁকড়া ধরা জেলে এবং বাওয়ালির মানববন্ধনে এমন অভিযোগ তুলে মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে অসাধু কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানান।

এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি খুলনার কয়রা উপজেলায় সুন্দরবনের কোবাদক ফরেস্ট স্টেশন কর্মকর্তা ফারুকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চাঁদা না দেওয়ায় মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ এনে কয়রা উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন দক্ষিণ বেদকাশী গ্রামের বিপুল কুমার সরকার।

স্থানীয় জেলে শফিকুল গাজি, দিদারুল শেখ, গোলাম রসুল, আকবার ফকির, বাবলু রহমান, আছাদুল গাজী, নজরুল গাজি, খায়রুল গাজী, মানববন্ধনে উপস্থিত হয়ে আমরা হরিণ শিকারে কখনো হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরার সাথে জড়িত নই। কিন্তু হঠাৎ করে বজবজা বন ফাঁড়ি ইনচার্জ কয়রা উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আমাদের নামে একাধিক মামলা দিয়েছেন। চাঁদা না দিলে এমন মিথ্যা মামলা বার বার খাওয়ার হুমকি ও দেন ওই কর্মকর্তা।

জোড়শিং বাজারের নুরুজ্জামান গাজী বলেন, তিনি গত ছয় মাস ধরে ঢাকার একটি ইট ভাটায় কাজ করছেন অথচ আমার নামে হরিণ শিকারের মামলা হয়েছে।

রাকিব গাজি বলেন, চায়ের দোকান করে জীবিকা নির্বাহ করি। কিন্তু আমার নামে বন আইনে মামলা দেয়া হয়েছে। অথচ যারা প্রকৃত হরিণ শিকারি তারা বন বিভাগকে ম্যানেজ করে চলে বলে তাদের কোনো মামলা হচ্ছে না তারা সব সময় থাকে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। মামলা দিচ্ছে আমাদের মত নিরীহ মানুষের।

জেলে গোলাম বসূল ও আছাদুল গাজি বলেন, দীর্ঘদিন তারা সুন্দরবনে মাছ ধরতে যায় না কি কারণে বজবজা ফাঁড়ি ইনচার্জ এক ডজনের বেশি মামলা দিয়েছে এটা আমাদের জানা নেই। পরে আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা দাবি করে মামলা প্রত্যাহারের কথা ও বলেন তিনি।

এটা তাদের নিজেদের স্বার্থে আমাদের হয়রানি করা ছাড়া আর কিছু নয়।

উত্তর বেদকাশির আকবার হোসেন জানান, তিনি এখনো সুন্দরবনে প্রবেশ করেননি। তার নামে তিনটি হরিণ শিকারের মামলা হয়েছে।

খাসিটানা গ্রামের বাসিন্দা লতিফ গাজী বলেন, খাসিটানা ফাঁড়ির বন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম আমার নামে হরিণ শিকারের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। তার দাবি তিনি কখনো সুন্দরবনে যাননি।

মানববন্ধনে অংশ নেয়া শতাধিক জেলে তাদের নামে মিথ্যা হয়রানি মূলক মামলা দ্রুত প্রত্যাহারসহ উক্ত বন কর্মকর্তাদের শাস্তির দাবি জানান।

এ ব্যাপারের জানতে চাইলে বজবজা ফাঁড়ি ইনচার্জ তানজিরুল ও খাসিটানা ফাঁড়ির ইনচার্জ জাহাঙ্গীর আলম তাদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, কাউকে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলা দেওয়া হয়নি। প্রকৃত দোষী ও চিহ্নিত পেশাদার হরিণ শিকারিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডা. আবু নাসের মোহসিন হোসেন অভয়ারণ্যে মাছ ধরার কোনো সুযোগ নেই জানিয়ে বলেন, আমার কাছে কেউ কোন অভিযোগ করেনি মানববন্ধনের বিষয়টি ও আমি অবগত নই। আমি অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। সুন্দরবনের সম্পদ রক্ষায় আমরা বদ্ধ পরিকর।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড