• শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রফতানিযোগ্য চিংড়িতে অবাধে অপদ্রব্য পুশ

  কে এম রেজাউল করিম, দেবহাটা (সাতক্ষীরা)

১৯ মে ২০২৩, ১৪:৪২
রফতানিযোগ্য চিংড়িতে অবাধে অপদ্রব্য পুশ
রফতানিযোগ্য চিংড়িতে অবাধে অপদ্রব্য পুশ করা হচ্ছে (ছবি : অধিকার)

সাদা সোনা খ্যাত সাতক্ষীরার রফতানিযোগ্য গলদা ও বাগদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের ঘটনা যেন দিনদিন বেড়েই চলেছে। কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের।

অপদ্রব্য পুশ বন্ধে মাঝে মধ্যে প্রশাসনের অভিযান পরিচালিত হলেও, বেশিরভাগ সময়ে অপদ্রব্য পুশকৃত গলদা ও বাগদা চিংড়ির চালান প্রশাসনের নাগাল টপকে রফতানি হচ্ছে এশিয়া ও ইউরোপের বিভিন্ন দেশে।

এতে করে দিনদিন বিশ্ববাজারে সুনাম ও ঐতিহ্য হারাচ্ছে সাতক্ষীরার চিংড়ি, মাঝে মধ্যে রফতানিতে পড়ছে নিষেধাজ্ঞা। আর তাতে ব্যাপক হারে হচ্ছে দরপতন। জেলার অন্যান্য উপজেলার মতো দেবহাটাতেও বেশ সক্রিয় চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করা অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট।

বিভিন্ন তথ্য মতে জানা গেছে, সিরিঞ্জ ও সুঁইয়ের মাধ্যমে রফতানিযোগ্য চিংড়িতে জেলি, সাগুদানা, ফিটকিরি’র মিশ্রণ, পানিতে ভেজানো চিড়া ও ভাতের মিশ্রণ ইনজেক্ট করে চিংড়ির ওজন ও সাইজ বৃদ্ধি করে গ্রেড অনুসারে চড়া দামে বিক্রি ও রফতানি করে মোটা টাকা কামিয়ে নিচ্ছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

ফলে বিশ্ববাজারের পাশাপাশি দেশীয় বাজারেও প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। সম্প্রতি পারুলিয়া চিংড়ি বনিক সমিতির নেতৃবৃন্দ রফতানিযোগ্য বাগদা ও গলদা চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ হাতে নিয়েছেন।

অপদ্রব্য পুশকালে কোনো অসাধু ব্যবসায়ী হাতেনাতে আটক হলে জরিমানার পাশাপাশি তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা বলে জানা গেছে। কিন্তু সেটা কাগজে কলমে বা নামমাত্র বলেই প্রতীয়মান হচ্ছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা বর্তমানে আশপাশের এলাকা গুলোতে রফতানিযোগ্য চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশের আস্তানা গেড়েছেন।

এতে করে পারুলিয়া চিংড়ি বণিক সমিতির পুশ বন্ধের উদ্যোগটিও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন আশপাশের এলাকা থেকে অপদ্রব্য পুশ করে তারপর পারুলিয়াসহ বিভিন্ন মৎস্য সেডে এনে বিক্রি করছেন।

উপজেলার গাজীরহাট মৎস্য সেড, শশাডাঙ্গা মৎস্য সেড, পারুলিয়া মৎস্য সেডের পাশের কয়েকটি এলাকা এখন অসাধু ব্যবসায়ীদের নিরাপদ স্থানে পরিণত হয়েছে। এসব স্থান থেকে চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ করে বিভিন্ন বাজারে বিক্রি ও রফতানি করছেন অসাধু ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয়ে দেবহাটা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন জানান, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে ইতিমধ্যে একাধিক অভিযান পরিচালনা করে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করাসহ পুশকৃত চিংড়ি বিনষ্ট করা হয়েছে। চিংড়ির মৌসুম এখন শুরু হয়েছে তার খুব তাড়াতাড়ি আবারো অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে তিনি জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম খালিদ হোসেন সিদ্দিকী চিংড়িকে জাতীয় সম্পদ উল্লেখ করে বলেন, সাদা সোনা খ্যাত এই চিংড়ি রফতানি দেশ আমরা বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করি। কয়েকজন অসাধু ব্যক্তির কারণে সেটা নষ্ট হোক সেটা কোনমতে কাম্য নয়।

বিগত সময়ে বিভিন্ন অভিযানের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভোক্তা অধিকার, মৎস্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থা এমনকি র্যাবের মাধ্যমে একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আবারো অসাধু ব্যক্তিরা অপদ্রব্য পুশ করছে এমন অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে তাই দ্রুত সময়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে বলে ইউএনও জানান। চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ বন্ধে গাজীরহাট, শশাডাঙ্গা, পারুলিয়া এলাকায় অভিযান পরিচালনাসহ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠিন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড