রাফিকুর রহমান লালু, রাজশাহী
রাজশাহী মডেল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতক শিশুকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। গত সোমবার (১৫ মে) রাত ৮টার দিকে রাজশাহীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় মডেল হাসপাতালে দেলোয়ার হোসেন তার শিশুকে ভর্তি করায়।
সেখানে ঠিকমত চিকিৎসা না হওয়ায় গতকাল মঙ্গলবার সকালে শিশুকে রামেক হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে চিকিৎসকরা তাকে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে বন্ড সই দিয়ে তিনি সেখান থেকে চলে আসেন এবং রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসকরা তার শিশুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
দেলোয়ার হোসেন অভিযোগ করেন ওই হাসপাতালে আরও ৪টি রোগীর সাথে ঠিক এমনটাই হয়েছিল। তবে সময় মতো সেখান থেকে বের করে নিয়ে এসেছেন ওই সব শিশুর অভিভাবকরা।
দেলোয়ার হোসেন আরও বলেছেন, গত সোমবার (১৫ মে) রাতে যখন আমার বাচ্চাকে মডেল হাসপাতালে ভর্তি করি তখন আমার বাচ্চা স্বাভাবিক ছিল এরা আমার শিশুকে কোনো চিকিৎসা দেয়নি। আমার বাচ্চার অবস্থা যখন খারাপের পথে তখন আমি জোর করে বাচ্চাকে বিল পরিশোধ করে বন্ড সই দিয়ে নিয়ে চলে আসি।
তিনি আরও বলেন, আমার বাচ্চা তাদের হাসপাতালে মারা গেছে কারণ বাচ্চাকে ভর্তি করার পরে আমাদেরকে এক বারের জন্য দেখতে দেয়নি। এছাড়া তারা আমাদেরকে হাসপাতাল থেকে আসতে বাঁধা দিয়েছে আমি জোর করে এসেছি। সেখান থেকে এসে রামেক হাসপাতালের ডাক্তার দেখে বাচ্চা মৃত বলে জানিয়েছেন। তাদের অবহেলার কারণে আমার বাচ্চাটাকে আমি বাঁচাতে পারলাম না।
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত কয়েকজন ভুক্তভোগীরা বলেছেন, আমাদের সাথেও একই অবস্থা হয়েছিল আমরা জোর করে বাচ্চাকে বের করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসে চিকিৎসা নিচ্ছি এখন আল্লাহর রহমতে বাচ্চা সুস্থ আছে।
ভুক্তভোগী হেলেনা জানান, আমার শিশুকে সমস্যার কারণে ৫ দিন নিয়ে ছিলাম মডেল হাসপাতালে। শারীরিক কোন উন্নতি না হওয়ায় চলে এসেছি। ৫ দিনে আমার বিল করেছিল ৩২ হাজার টাকা। আরও ৫ দিন থাকতে বলেছিল কিন্তু আমার বাচ্চার শরীরে কোনো উন্নতি হবে তার নিশ্চয়তা দিবে না বলেছিল সে কারণে আমি রামেক হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলাম এবং এখন আমার বাচ্চা পুরোপুরি সুস্থ আজ বাসায় নিয়ে চলে যাব। ওখানে শুধু টাকার খেলা চিকিৎসার নামে একটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলে বসেছে তারা।
এই বিষয়ে রাজশাহী মডেল হাসপাতালের শিশু বিভাগের ডা. মনিরুল হক তরফদার বলেছেন, আমরা শিশুদের চিকিৎসার বিষয়ে অনেক সচেতন। আর দেলোয়ার হোসেন যে অভিযোগটা তুলেছেন আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সেটা সব টায় ভুল। আমাদের কাছে সব কিছুর এভিডিয়েন্স আছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা প্রতি ঘণ্টায় শিশুর চিকিৎসায় যা যা করনীয় সব টায় করেছি। হঠাৎ সকালে তিনি আমার চেম্বারে এসে চলে যাওয়ার কথা বলছেন এবং তাকে অনেক সময় ধরে বোঝানোর পরেও সে বোঝেনি। এমনকি আমি তাকে বাচ্চার ক্ষতি হয়ে যাবে এখন চলে গেলে এটাও বুঝিয়েছি কিন্তু সে না বুঝে সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমাদের যেসব নিয়ম কানুন আছে সেগুলো মেনে সে চলে গিয়েছে।
ডা. মনিরুল হক তরফদার বলেছেন, আমাদের এখানে অনেক গরীব অসহায় রোগী আসে আমরা ৩০% ছাড় দিই তাদের জন্য। আর আমাদের যেটা খরচ সেটাই আমরা নিই এখানে এক টাকাও বেশি নেওয়ার সুযোগ নেই।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড