• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩০ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিআইডব্লিউটিএর উপ পরিচালকের হয়রানী বন্ধের দাবি কয়লা ব্যবসায়ীদের 

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

১৭ মে ২০২৩, ১২:২১
বিআইডব্লিউটিএর উপ পরিচালকের হয়রানী বন্ধের দাবি কয়লা ব্যবসায়ীদের 

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে মেঘনা নদীর ফেরিঘাট এলাকায় এক ঘাটে চার ইজারা। আর সেই একই ইজারাদার চারবার ট্যাক্স দিতে হয় কয়লা ব্যবসায়ীদের। তাদের অভিযোগ একাধিক ট্যাক্স দিতে গিয়ে কয়লা ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্তের সম্মুখীন হচ্ছেন।

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (১৬ মে) বেলা ১১টার দিকে ফেরিঘাট এলাকায় কয়লা ব্যবসায়ীরা ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন ও দুপুরের এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভৈরব কয়লা ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ ইবনে সোলাইমান অভিযোগে জানায়, ঘাটের চার ইজারার মধ্য বিআইডব্লিউটিএর ইজারা রয়েছে যা প্রতি টন কয়লায় ৩০ টাকা করে ট্যাক্স ধার্য করা আছে। আবার রয়েছে সীমানা জটিলতা।

বিগত ২০১৪ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ফেরিঘাটের বিআইডব্লিউটিএর জেটি থেকে ৫০ গজের মধ্য সীমানা ছিল। এই সীমানার মধ্য কয়লা আমদানি রপ্তানি হলে কর্তৃপক্ষের ইজারাদার ট্যাক্স আদায় করবে। কিন্তু হঠাৎ করে ২০২০ সালে সীমানা বাড়িয়ে ৫০০ গজের এরিয়ায় ট্যাক্স দিতে হচ্ছে।

জেটির আশেপাশে কয়লা মজুত রাখলে বিআইডব্লিউটিএর ভৈরব অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক রেজাউল করিম উৎকোচ দাবি করেন। তাকে টাকা ঘুষ দিলে নদীর পাড়ে কয়লা রাখা যায় আর ঘুষ না দিলে কয়লা রাখতে বাধা সৃষ্টি করেন তিনি।

এর আগে এক মানববন্ধনে ভৈরবের কয়লা ব্যবসায়ীরাসহ পাঁচ শতাধিক শ্রমিক কর্মচারীরা অংশ নেয়।

এ সময় মানববন্ধনে ব্যবসায়ীরা বলেন, মেঘনা ফেরিঘাটে প্রায় আড়াইশ কয়লা ব্যবসায়ী আছে। এই ব্যবসায় ৫-৬ হাজার শ্রমিক ও এক হাজার কর্মচারীসহ সাত হাজার লোক কাজ করছে। প্রতিদিন হাজার হাজার টন কয়লা ভৈরব ঘাট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে শত শত কোটি টাকার কয়লা বিক্রি হয়। কিন্তু কয়লা ব্যবসা করতে গিয়ে তারা চার প্রতিষ্ঠানকে ট্যাক্স দিতে হয়।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- বিআইডব্লিউটিএ, খেয়াঘাট, রেলওয়ে মুরিংঘাট ও উপজেলার ইজারা। ঘাটে ৪ ধরনের ইজারায় ট্যাক্স দিতে গিয়ে তারা প্রতিনিয়ত হয়রানীর শিকার হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। বিশেষ করে বিআইডব্লিটিএর ভৈরব অফিসের উপ-পরিচালক রেজাউল করিমকে ঘুষ না দিলে জেটির আশেপাশে কয়লা আমদানি করা যায় না। অথচ বর্ষাকাল না থাকায় জেটিতে কয়লা লোডিং কার্গো ভিড়ানো যায় না।

বর্তমান অবস্থায় উপ-পরিচালকের হয়রানীতে ভৈরবের ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তার হয়রানী বন্ধসহ ঘাটের চার ইজারা বাতিল করে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠানকে তারা ট্যাক্স দেয়ার ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি করেন কয়লা সমিতির সভাপতি সাজ্জাদ।

মানববন্ধনে ভৈরব কয়লা ব্যবসা সমবায় সমিতির সহ সভাপতি বাদল মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক মো. আলী ইউসুফ, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন দিলু, কোষাধ্যক্ষ আশরাফউর রহমান নোমান, নির্বাহী সদস্য কুতুব উদ্দিন, কর্মকর্তারাসহ ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা উপস্থিত থেকে এসব দাবি করেন তারা।

এ বিষয়ে বিআইডব্লিটিএর উপ-পরিচালক রেজাউল করিম কয়লা ব্যবসায়ীদের সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আগামী ১৭ মে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ঘাটের টেন্ডার হবে। নতুন বছরের টেন্ডারকে সামনে রেখে তারা মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে আমার বিরুদ্ধে। ৫০ গজের সীমানা ৫০০ গজ করেছে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। ভৈরব এখন বন্দর এরিয়া হয়েছে যার কারণে এরিয়া বাড়িয়ে সরকার রাজস্ব বৃদ্ধি করতে চাই। আমার দায়িত্ব সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধি করতে টেন্ডার করা।

এরিয়া কমানোর সুযোগ আমার হাতে নেই। তবে এক ঘাটে চারটি প্রতিষ্ঠানের ইজারা থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। তবে সচিব পর্যায়ে কয়েকটি সভা হয়েছে। খুব দ্রুতই কেবিন পর্যায়ে সভায় ভৈরবের জটিল ঘাটের সমস্যার সমাধান হবে বলে তিনি আশাবাদী।

তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা ও ঘুষের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট বলে অস্বীকার করেন। কয়লা সমিতির নেতারা প্রভাব খাটিয়ে কম দরে টেন্ডার পেতে ষড়যন্ত্র করে তারা সংবাদ সম্মেলন ও মানবন্ধন করে প্রতিবাদের নামে সরকারকে ট্যাক্স কম দিতেই এই মিথ্যা অভিযোগ করছে বলে তার দাবি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড