তন্ময় সাহা, রায়পুরা (নরসিংদী)
নরসিংদীর রায়পুরায় আগুনে পুড়ে বাইস মাসের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ সময় ৪টি বসত ঘর পুড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার (৯ মে) দুপুরে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভেলুয়ারচর পূর্ব পাড়া গ্রামের কাংগুর বাড়িতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। অগ্নিকাণ্ডে ৪টি বসত ঘর পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে গেছে। এতে ১৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি ভুক্তভোগীদের।
দুর্গম এ চরাঞ্চলে ফায়ার সার্ভিস ঢুকতে না পারায় এলাকাবাসীর চেষ্টায় ২ ঘণ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয় তারা। নিহত শিশু হামিম মিয়া ভেলুয়ারচর পূর্ব পাড়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী শফিকুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই শফিকুলের ঘরটিতে কেউ স্পর্শ করলে শর্ট করতো। পরে বিষয়টি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের মৌখিক ভাবে জানানো হয়। কিন্তু তারা বিষয়টি আমলে নেয়নি। পরে মঙ্গলবার দুপুর ৩টার দিকে বৈদ্যুতিক সর্ট সার্কিট থেকে রায়পুরার শ্রীনগর ইউনিয়নের ভেলুয়ারচর পূর্ব পাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের বসত ঘরে আগুনের সূত্রপাত হয়।
মুহূর্তের মধ্যেই আগুনের লেলিহান পুরো ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। পরে আগুন পার্শ্ববর্তী আরও ৩টি বসত ঘরে ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় আগুনে পুড়ে হামিম মিয়া নামে এক শিশু নিহত হয়েছে। আগুন লাগার খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান রিয়াজ মোরশেদ খান রাসেল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই সময় চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে পাঁচ হাজার ও উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ২০ হাজার টাকা নিহতের পরিবারকে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়।
নিহত শিশুর মা তানিয়া বেগম বলেছেন, দুপুরে আমার ছোট ছেলে হামিমকে খাইয়ে রেখে আমি ধান লাড়তে মাঠে যাই। পরে খবর পাই বাড়িতে আগুন লাগছে। এসে দেখি আমার ঘরে আগুন জ্বলছে। পরে কাঁথা নিয়ে ঘরে গিয়ে ছেলেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করি। কিন্তু পারিনি। আগুনে পুড়ে ঘরের ভেতরে থাকা আমার শিশু সন্তান শেষ হয়ে গেছে।
শ্রীনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রিয়াজ মোর্শেদ খান রাসেল জানিয়েছেন, চরাঞ্চলে ফায়ার সার্ভিস আসার কোনো রাস্তা নেই। তাই স্থানীয়রা প্রায় ১ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আগুনে ১ শিশু নিহত হয়েছে। নিহতের পরিবারকে প্রাথমিক ভাবে আর্থিক সহায়তা দেয়া হয়েছে। উপজেলা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিটি পরিবারকে ৪ বান করে টিন ও ৬ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর রায়পুরা জোনাল অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ডিজিএম) মো. রেজাউল করীম সাথে মুঠোফোনে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি উল্টো প্রতিবেদকের কাছে কী দুর্ঘটনা ঘটেছে তা জানতে চান। পরে স্থানীয়দের অভিযোগটির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি অবগত নাই।
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে ইতিপূর্বে আমার অফিসের কোনো লোককে অবগত করে থাকলে, কাজটি সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। আমার লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা কোথাও রাখে না। একটা ঘরে কারেন্ট হয়ে গেলে সাথে সাথে আমরা সাব-স্টেশনটা বন্ধ করে সেই বাড়িতে কাজ সম্পন্ন করি। সেখানে এ রকম দীর্ঘদিন এভাবে থাকার কোনো সুযোগ নাই। যদি ঘটেও থাকে তাহলে তারা সংশ্লিষ্ট অফিসকে বিষয়টি অবগত করেনি।
ডিজিএম মো. রেজাউল করীম বলেন, একজন মানুষ বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাবে, ঘরে কারেন্ট হবে আর কারেন্ট হলে সেই ঘরে তো কারো ঢোকার কথা না। আর সেখানে পুরো ঘর বিদ্যুতায়িত হয়ে আছে, গ্রাহক আমাদের জানাবে আমরা তার ব্যবস্থা নিব না এটা হয়তো অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর জন্য এমনটা বলতে পারে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড