• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৫ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

শ্বশুরবাড়িতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মার খেয়ে হাসপাতালে জামাইসহ অর্ধশতাধিক

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

০৮ মে ২০২৩, ১৩:১২
শ্বশুরবাড়িতে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে মার খেয়ে হাসপাতালে জামাইসহ অর্ধশতাধিক
সংঘর্ষে লিপ্ত গ্রামবাসী (ছবি : অধিকার)

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শ্বশুরবাড়ির দ্বন্দ্বে জামাই জড়িয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ আহতসহ অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ রয়েছে। গতকাল রবিবার (৭ মে) সকাল থেকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ি ও গজারিয়া গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

ঘটনা সূত্রে জানা যায়, গেল শনিবার (৬ মে) রাতে গজারিয়া গ্রামের কাসেম মিয়া দলবল নিয়ে শ্বশুরবাড়ি বাঁশগাড়ী গ্রামে গেলে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সাথে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে সংঘর্ষের জড়িয়ে পড়েন। এ সময় গজারিয়া গ্রামের মোস্তুফা মিয়ার ছেলে কাসেম (৩০), জ্বালাল উদ্দিনের ছেলে মোরাদ (২৬) ও অহিদ মিয়ার ছেলে আনোয়ার (৩০) আহত হন। এরপর সেই রাতেই এলাকাবাসী তাদের উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়। পরে কাসেমের অবস্থা অবনতি হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

পরে এ ঘটনার জের ধরে গতকাল রবিবার সকাল থেকে দীর্ঘ ৪ ঘণ্টা ধরে বাঁশগাড়ী ও গজারিয়া গ্রামবাসীরা মধ্যে দা, বল্লব, টেটা, ইটপাটকেলসহ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় প্রায় ১৫ জন গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে ভৈরব থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গেল ৬ মে শনিবার রাতে বাঁশগাড়ী গ্রামের শিশু মেম্বারের বাড়ির শহীদ ও রফিক মিয়ার জমি নিয়ে দ্বন্দ্ব হয়। একই বংশের রফিক ও শহীদ মিয়ার চাচা তোতা মিয়ার মেয়ের জামাই গজারিয়া এলাকার কাসেম তার শ্বশুরবাড়িতে দলবল নিয়ে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েন। পরে শিশু মেম্বারের বাড়ির লোকজন জামাই কাসেম মিয়া ও তার দলবলের উপর আক্রমণ করে গুরুতর আহত করে। এ সময় আহতদেরকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় কাসেম মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়।

পরে এ খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রবিবার সকাল ১০টা থেকে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এ সময় উভয় পক্ষের অর্ধশতাধিক শিশু, নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ আহত হয়।

গুরুতর আহতরা হলেন- নজরুল (২২), বাবু (১৩), মোস্তফা (৩৮), সিরাজ (৪০), দানিস (২৫), কবির (৪৫), জাকারিয়া (৫০), ইয়া হিয়া (২১), ইমন (২২), রিনা (৪৫), চাঁন মিয়া (১৮), জিল্লু (৫৫), সাইজ উদ্দিন (৪০), রুবেলা (৩০), গিয়াস উদ্দিন (৭৬)। এদের মধ্যে কবির কাজী ও মোস্তুফা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে শিশু মেম্বারের পক্ষে তার ছেলে জনি বলেন, আমাদের বংশের রফিক মিয়া জমি নিয়ে দ্বন্দ্বে বাঁশগাড়ী গ্রাম থেকে তার আত্মীয়দের খবর দিলে তারা এসে আমাদের গ্রামে ঝগড়া করে। এসময় তারা আমাদের বাড়ির অনেক জায়গায় অগ্নিসংযোগ করেন এবং আমাদের বাড়ির ভাংচুর করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদীসহ নগদ ১২ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

একই গ্রামের কৃষক ইসলাম উদ্দিন বলেন, জমি নিয়ে তাদের দ্বন্দ্ব হয়েছে। কিন্তু তারা আমার ফসলি জমির ধান পুড়িয়ে দিয়েছে। তাদের পারিবারিক দ্বন্দ্বে আমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।

কাসেম মিয়ার পক্ষে তোফাজ্জল মিয়া বলেন, রাতে আমি আমার বন্ধু কাসেম এর সাথে ওই এলাকায় গেলে শিশু মেম্বারের লোকজন আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। এতে কাসেম গুরুতর আহত হয়। এ ঘটনা কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

এ বিষয়ে গজারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম শাহরিয়ার বলেন, বাঁশগাড়ী গ্রামে তাদের পারিবারিক ঝগড়া ছিল এতে করে অন্য গজারিয়া গ্রামে আত্মীয়রা এতে যুক্ত হলে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।

ভৈরব থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ মাকছুদুল আলম বলেন, গজারিয়া ইউনিয়নে গ্রামবাসীর মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড