• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

১ হাজার টাকার জন্য বাবাহারা ছেলেকে প্রবেশপত্র দেয়নি প্রধান শিক্ষক

  শাকিল মুরাদ, শেরপুর

০৩ মে ২০২৩, ১৭:২৪
এসএসসি

চলছে এসএসসি পরীক্ষা। সকল পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করতে পারলেও মাত্র এক হাজার টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে পারলো না এক পরীক্ষার্থী।

জানা গেছে, ওই পরীক্ষার্থীর নাম শামীম মিয়া (১৫)। সে শেরপুরের ঝিনাইগাতীর মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের জুলগাঁও গ্রামের মৃত আব্বাস আলীর ছেলে। শামীম উপজেলার ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিল।

শামীম ও তার স্বজনের অভিযোগ, ঘাগড়া দক্ষিণপাড়া ফজলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক শামীমের কাছে ফরম ফিলাপের বকেয়া এক হাজার টাকা দাবি করে প্রবেশপত্র‍ দেয়নি। এতে এ বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে তার। স্কুলের সকল এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপের জন্য তিন হাজার টাকা করে নেন ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হক। আর সবাই ফরম ফিলাপের টাকা দিয়ে প্রবেশপত্র‍ নেয়। আর শামীম দুই হাজার টাকা দেয় এবং বলে পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে বাকী এক হাজার টাকা দিবো। কিন্তু নানা তালবাহানা করে ওই প্রধান শিক্ষক বলে বকেয়া টাকা নিয়ে পরীক্ষার কেন্দ্র‍ে থাকতে। এরপর পরীক্ষার দিন শামীম পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে কেন্দ্রে উপস্থিত হলেও প্রধান শিক্ষককে পায়নি শামীম। এক পযার্য়ে সবাই পরীক্ষা দিতে শুরু করলে শামীম তখন প্রধান শিক্ষককে পেতে কয়েকটি কেন্দ্রে দৌড়ঝাঁপ শুরু অবশেষে শিক্ষকের দেখা পান। তার কাছে প্রবেশপত্র‍ চাইলে প্রধান শিক্ষক বলে সন্ধ্যায় প্রবেশপত্র‍ নিতে। আর এদিকে, প্রবেশপত্র‍ হাতে না থাকায় পরীক্ষায় বসতেই পারেনি শামীম।

পরীক্ষার্থী শামীম মিয়া জানান, ফরম ফিলাপের জন্য স্যাররা তিন হাজার টাকা চাইছিলো। কিন্তু আমার বাবা না থাকায় এক হাজার টাকা সে সময় কম দিছিলাম। কিন্তু স্যার কম নিতে রাজি হয়নি। তাই টাকা পরে দিতে চাই। পরে এডমিট কার্ড নিতে গেছি ঐদিন বলছে, টাকা আনসস? পরে বলছি না স্যার। আমারে স্যার পরে বললো তুই পরীক্ষা দিবার যাইস তখন দিমুনি। পরীক্ষা দিতে যাইয়া দেখি কোন স্যার আসে নাই। পরে সওদাগর ভাইরে নিয়ে কয়েকটা কেন্দ্র ঘুরে স্যারকে পেলাম। তখন স্যার বললো রাতে নিস। আমি বললাম রাতে নিয়া কি করমু। পরে স্যার কিছু না বলে চলে গেলো। আমার পরীক্ষা দিবার খুব ইচ্ছে ছিলো। স্যারের জন্য আমার ইচ্ছে পূরণ হয়নি। আমি এক বছরের জন্য পিছিয়ে গেলাম।

মা শিরিনা বেগম বলেন, আমার স্বামী মারা গেছে। আমি অনেক কষ্ট করে ভাইয়ের বাড়িতে থেকে পোলাডারে পড়াইতাছিলাম। কিন্তু স্যার আমার পোলাডার সর্বনাশ করে দিছে। আমার পোলাডা এক বছরের জন্য পিছিয়ে গেলো।

এসব বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে বারবার ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক নুরুল হকের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি এবং তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।

মালিঝিকান্দা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, শামীম নামের ছেলেটার ফরম ফিলাপ বা এডমিট না পাওয়ার বিষয়টা আমাকে কেউ জানায় নাই। আমি বিষয়টা জানলে আমার পরিষদ বা ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা করতাম।

ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদ বলেন, আমাকে এ বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানোর পরে তাদেরকে উপজেলায় আসতে বলা হয়েছে। আর একটি অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। কিন্তু এখনো তারা কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড