• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাজারে নতুন সবজি কাঁকরোল, বিক্রি হচ্ছে যে দামে

  শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

২৬ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:১৪
বাজারে নতুন সবজি কাঁকরোল, বিক্রি হচ্ছে যে দামে
কাঁকরোল বাজারজাত করতে ব্যস্ত চাষিরা (ছবি : অধিকার)

চট্টগ্রামের বাঁশখালীর স্থানীয় বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে নানাজাতের সবজি। সবজির চড়া দাম এখনো রয়েছে। এসব সবজির মধ্যে বাজারে জায়গা করে নিয়েছে কাঁকরোল। অল্প কয়দিন পর সবজির দাম ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে বলে অনেকের ধারণা।

এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাঁকরোলের ভাল ফলন হয়েছে। বাঁশখালীতে যে বিভিন্ন প্রজাতির সবজি চাষ করা হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে কাঁকরোল। বাঁশখালীতে করলা চাষে হাসি ফুটেছে চাষিদের মুখে।

চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় খুশি উপজেলার নাপোড়া, শীলকূপ, সাধনপুর, কালীপুর, চাম্বল, পুইছড়ি, জঙ্গল জলদী, প্রেমবাজার সহ ছয়টি ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের দুই হাজারের বেশি কৃষক। এসব করলা বাঁশখালীর স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিঠানোর পাশাপাশি চট্টগ্রাম শহরেও সরবরাহ করা হয়। ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন এসব করলা চাষিরা।

আগাম সবজি উৎপাদনে বাঁশখালী উপজেলা বরাবরের মতোই ভূমিকা রাখে। ইদের পর থেকে নতুন নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করছে। প্রতিদিন বাঁশখালী থেকে পাইকারি দরে বিক্রেতারা বাঁশখালীর বিভিন্ন বাজার এবং ফসলি ক্ষেত থেকে সবজি ক্রয় করে তা দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করছে। আগাম চাষে এ অঞ্চলের সবজি চাষিরা ভাল দাম পেয়ে খুশি।

প্রচুর পরিমাণ কাঁকরোল চাষ হওয়ায় বাঁশখালীর চাষিরা ভীষণ আশান্বিত। বর্তমানে বাজারে কাঁকরোল খুচরা ৭০-৮০ টাকা দরে কেজি বেচা বিক্রি হলেও পাইকারি বাজারে এই দাম ৪০-৫০ টাকা কেজি এমনকি আরও কম বলে জানান বিক্রেতারা।

রমজানের শেষের দিকে প্রথম প্রথম অল্প পরিমাণ কাঁকরোল বাজারে আসে। সে সময় কেজি ১০০ থেকে ১৫০ দরে বিক্রি করলেও বর্তমানে প্রচুর পরিমাণ সবজি উৎপাদন করেও আশানুরূপ দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানান বাঁশখালীর নাপোড়া, শীলকূপ, সাধনপুর, কালীপুর, চাম্বল, টাইমবাজার, পুইছড়ি প্রেমবাজার সহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের বিক্রেতারা।

যদিও বাঁশখালীতে উৎপাদিত সবজি চট্টগ্রামের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। কারণ এখানকার সবজি কোন ধরনের রাসায়নিক বিষ মিশ্রিত না হওয়ায় ক্রেতারা সহজেই এই সবজির প্রতি সহজে আকৃষ্ট থাকে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাধারণ পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাঁশখালী এসে পাইকারি দামে ক্রয় করে ট্রাকে ট্রাকে নিয়ে যাচ্ছে বলে জানান চাষিরা।

বাঁশখালীর পুঁইছড়ির কাঁকরোল চাষি সাহাদাত হোসাইন চাম্বল বাজার হাইদরি মুড়া এলাকার কাঁকরোল চাষি মো. ইদ্রিস, শিলকুপের মোজাম্মেল ও হারুন বলেন, আগে পাইকারি ক্রেতারা ভার হিসাবে কাঁকরোল ক্রয় করতো। এখন কেজি দরে ক্রয় করে থাকেন। এখন কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে নিয়ে যাচ্ছেন পাইকাররা।

তিনি আরও বলেন, এ বছর চলতি মৌসুমে আশানুরূপ কাঁকরোল উৎপাদন হয়েছে তবে কালবৈশাখীর প্রচণ্ড ঝড়-বৃষ্টি না হলে সবজি আরও বেশী উৎপাদন হবে। যা আমরা বাঁশখালীর সাধারণ চাষিদের জন্য অত্যন্ত লাভজনক হতে সাহায্য করবে। এই চলতি মৌসুমে কাঁকরোল ছাড়াও বেগুন, ঢেঁড়স, শসা, মিষ্টি কুমড়া, ঝিঙা, বরবটি, কচুর লতি, কাঁচামরিচ, পুঁইশাক, পালংশাক সহ নানাজাতের সবজি বর্তমানে বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। অল্প কয়দিন পরেই বাঁশখালীর উৎপাদিত সবজি বাজারের জায়গা করে নিবে। দামও কমে যাবে। সবজির ক্রয়ক্ষমতাও ক্রেতাদের নাগালে চলে আসবে।

শীলকূপ টাইমবাজারের একজন বিক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেছেন, আমাদের বেশি দামে সবজি কিনতে হয়েছে। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। ইদের পর থেকে নতুন নতুন সবজি বাজারে আসতে শুরু করছে। দামও কমে যাবে।

বাঁশখালী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক প্রতিবেদককে বলেন, এ বছর বাঁশখালীতে প্রায় ১৫শ হেক্টর জমিতে কাঁকরোল চাষ হয়েছে, পাশাপাশি সকল ধরনের শাক সবজি থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের ব্যাপক হারে উৎপাদন হয়েছে। তার মধ্যে এবার কাঁকরোল, বেগুন চাষ করে চাষিরা সফল হয়েছে। কাঁকরোল এ অঞ্চলের অন্যতম একটি মৌসুমি সবজি।

তিনি আরও বলেন, জমির উর্বরতা, কৃষি সহায়তা ও কৃষি বিষয়ক পরামর্শ নিয়ে চাষিরা করলা চাষে সফল হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা। চলতি মৌসুমে বৃষ্টি কম হওয়ায় ফলন একটু কম হলেও স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে চট্টগ্রাম শহরের কালামিয়া বাজার, চাকতাই সহ বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক বোঝাই করে বাঁশখালীর বিষমুক্ত করলা কদর পাচ্ছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড