• শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১  |   ৩৩ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইয়াবা-বিয়ারের বড় চালানসহ কারবারি আটক

  মিজানুর রহমান মিজান, টেকনাফ (কক্সবাজার)

১৪ এপ্রিল ২০২৩, ১২:০৫
ইয়াবা-বিয়ারের বড় চালানসহ কারবারি আটক
গ্রেফতারকৃত আসামি (ছবি : অধিকার)

কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক অভিযান চালিয়ে দুই লাখ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ও ৩৬০ ক্যান বিয়ার উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এ সময় ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজন মাদক কারবারিকে আটক করা হয়।

টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন। আহমেদ (বিজিবি এমএস) গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়ন কর্তৃক পরিচালিত পৃথক তিনটি অভিযানে একজন আসামিসহ দুই লক্ষ ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার উদ্ধার করা হয়।

বিজিবির অধিনায়ক জানান, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) রাতে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ সাবরাং বিওপি'র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৫ হতে আনুমানিক ১ কিলোমিটার দক্ষিণ দিকে আচারবনিয়া নামক এলাকা দিয়ে মাদকের একটি চালান মায়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচার হতে পারে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাবরাং বিওপি হতে একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত এলাকায় গমন করে কৌশলগত অবস্থান গ্রহণ করে। কিছুক্ষণ পর টহলদল সীমান্তের শূন্য লাইন থেকে ৭০০ মিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে দুইজন ব্যক্তিকে নাফনদী পার হয়ে দু'টি বস্তা কাঁধে নিয়ে বর্ণিত স্থানে বেড়ীবাঁধ অতিক্রম করে লবণ মাঠ দিয়ে আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।

উক্ত ব্যক্তিরা দূর হতে বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে রাতের অন্ধকারের সুযোগে দ্রুত দৌড়ে নাফ নদীতে ঝাপ দিয়ে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পালিয়ে যায়। এরপর টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে চোরাকারবারিদের ফেলে যাওয়া গামছা দিয়ে মোড়ানো দু'টি প্ল্যাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করে।

উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর থেকে দুই লক্ষ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট (মালিকবিহীন অবস্থায়) জব্দ করা হয়। পরবর্তীকালে টহলদল কর্তৃক উক্ত এলাকায় ভোর পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করা হলেও কোন চোরাকারবারি কিংবা তাদের সহযোগীকে আটক করা সম্ভব হয়নি চোরাকারবারিদেরকে সনাক্ত করার জন্য অত্র ব্যাটালিয়নের গোয়েন্দা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এ দিকে একই দিনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায় যে, টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ দমদমিয়া বিওপি'র দায়িত্বপূর্ণ বিআরএম-৯ হতে

আনুমানিক দেড় কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে জালিয়ারদ্বীপ নামক স্থানে মাদকদ্রব্যের একটি চালান মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পাচারের উদ্দেশ্যে বালুর নীচে লুকায়িত রয়েছে।

এমন তথ্যের ভিত্তিতে দমদমিয়া বিওপি'র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বর্ণিত স্থানে গমন করে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তিকে ঘোরাফেরা অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে টেকনাফ জাদিমোড়া ২৭ নম্বর ক্যাম্পের ব্লক-বি/৪ এর বাসিন্দা মোঃ হোসেনের ছেলে মো: আব্দুর শুক্কুরকে (১৯) (রোহিঙ্গা) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জালিয়ার দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব পার্শ্বে বালুর নীচে প্ল্যাস্টিকের পলিব্যাগ দিয়ে মোড়ানো একটি পোটলা উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধারকৃত পোটলা থেকে ১০ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়। আটককৃত আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায় যে, উক্ত ইয়াবার চালান মিয়ানমার হতে বাংলাদেশে এনে দুইজন পলাতক আসামির নিকট পৌঁছে দেয়ার নিমিত্তে ৩০ হাজার টাকা চুক্তির বিনিময়ে মিয়ানমারের ছেড়া দ্বীপ থেকে সাঁতরিয়ে নাফনদীর শূন্য লাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশের জালিয়ার দ্বীপে বর্ণিত স্থানে পলাতক আসামীদের নিকট ইয়াবার চালান বুঝিয়ে দেয়ার নিমিত্তে লুকিয়ে রাখে।

এছাড়া অপর দিকে একইদিনে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনস্থ শাহপরীরদ্বীপ বিওপি'র একটি চোরাচালান প্রতিরোধ টহলদল বিআরএম থেকে আনুমানিক ৫০০ গজ দক্ষিণ দিকে জালিয়া পাড়া নামক এলাকায় নাফনদীর কিনারায় নিয়মিত টহল কার্যক্রম পরিচালনা করছিল।

এ সময় টহলদল ৪-৫ জন ব্যক্তিকে নাফনদী পার হয়ে বা কাঁধে বস্তা নিয়ে বেড়ীবাঁধ সংলগ্ন কেওড়া বাগানের দিকে আসতে দেখে এবং তাদের গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় টহলদল তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করে।উক্ত ব্যক্তিরা দূর থেকে বিজিবি টহল দলের উপস্থিতি অনুধাবন করা মাত্রই তাদের কাঁধে থাকা বস্তাগুলো ফেলে দিয়ে কেওড়া বাগানের ভিতর দিয়ে নাফ নদীতে লাফিয়ে মিয়ানমারের দিকে পালিয়ে যায়।

এরপর টহলদল উল্লেখিত স্থানে পৌঁছে তল্লাশি অভিযান পরিচালনা করে ৫টি প্ল্যাস্টিকের বস্তা উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃত বস্তার ভিতর থেকে ৩৬০ ক্যান আন্দামান গোল্ড বিয়ার (মালিকবিহীন অবস্থায়) জব্দ করা হয়। উক্ত স্থানে অন্য কোন অসামরিক ব্যক্তিকে পাওয়া যায়নি বিধায় চোরাকারবারিদের শনাক্ত করাও সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও জানান, আটককৃত আসামি রোহিঙ্গা এবং পলাতক আসামিদের (বাংলাদেশি নাগরিক) এর বিরুদ্ধে ইয়াবা ট্যাবলেট বহন ও পাচারের দায়ে নিয়মিত মামলার মাধ্যমে টেকনাফ মডেল থানায় হস্তান্তর করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়াও উদ্ধারকৃত মালিকবিহীন ইয়াবা এবং বিয়ারগুলো বর্তমানে ব্যাটালিয়ন সদরের স্টোরে জমা রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় আইনি কার্যক্রম গ্রহণ করে পরবর্তী সময়ে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও মিডিয়া কর্মীদের উপস্থিতিতে ধ্বংস করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড