• শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন

  আনোয়ার পারভেজ, নাটোর

০৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৫:১৩
কলেজছাত্রীকে গণধর্ষণের মামলায় ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনকে যাবজ্জীবন
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা (ছবি : অধিকার)

নাটোরের সিংড়ার এক কলেজছাত্রীকে অপহরণ ও ধর্ষণের দায়ে ছয় জনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে দণ্ডপ্রাপ্ত সকলকে লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক নাটোর জেলা ও দায়রা জজ মুহাম্মদ আব্দুর রহিম এ আদেশ দেন।

মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- বড়াইগ্রাম উপজেলার ধানাইদহ গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মো. সাব্বির আহমেদ, একই উপজেলার জামাইদিঘা গ্রামের রেজাউল করিম ভুট্রোর ছেলে মো. রেজাউনুল ওরফে রাব্বী, সিংড়া উপজেলার নাছিয়ার কান্দি গ্রামের আব্দুর রশিদ মণ্ডলের ছেলে মো. নাজমুল হক, একই উপজেলার মহিষমারি গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে মো. রাজিবুল হাসান, দেবত্বর গ্রামের মো. রিপন ও কলম মির্জাপুরের মো. গেদার ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তরা হলেন- সিংড়া উপজেলার মহিষমারি গ্রামের আয়চান প্রামাণিকের ছেলে মো. মনিরুল ইসলাম, কলম মির্জাপুর গ্রামের হাসান আলী ফকিরের ছেলে মো. খায়রুল ইসলাম, মো. নজরুল ইসলামের ছেলে আতাউল ইসলাম, আবেদ আলীর ছেলে মো. রেজাউল করিম। রায়ে জরিমানার পুরো টাকা গণ ধর্ষণের শিকার সেই কলেজ ছাত্রীকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আদালত ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, বাদী জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বাসিন্দা। ২০১২ সালে তার মেয়ে রাজশাহীর একটি স্বনামধন্য সরকারি কলেজে একাদশ শ্রেণিতে পড়তো। ২০১২ সালের ১৯ অক্টোবর সকাল ১১টার দিকে কলেজে জরুরি কাজের কথা বলে তার মেয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। এ সময় পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে মো. সাব্বির আহমেদ ফুসলাইয়া অপহরণ করে সিংড়া পেট্রো বাংলা এলাকায় অবস্থিত বড়াইগ্রাম উপজেলার জামাইদিঘা গ্রামের রেজাউল করিম ভুট্রোর ছেলে রেজাউনুল ওরফে রাব্বীর মালিকানাধীন হাবিব ছাত্রাবাসে নিয়ে যায়।

সেখান থেকে অন্য আসামিরাসহ দুটি ভ্যান গাড়িতে করে বেড়ানোর কথা বলে উপজেলার কলম মির্জাপুর গ্রামের দিকে নিয়ে যায়। রাত হয়ে যাওয়া কলেজ ছাত্রী বাড়ি ফেরার জন্য চাপাচাপি করলে আসামিরা তাকে ভয় দেখিয়ে চুপ থাকতে বলে। পরে সকলে মিলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে কলম মির্জাপুর গ্রামের ইদগাহ মাঠের পাশে নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় গণধর্ষণ করে। পরে কলেজ ছাত্রীকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে উদ্ধার করে এবং আসামীদের আটক করে পুলিশে খবর দেয়।

পুলিশ কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং বাদীকে খবর দেয়। পরের দিন বাদী এ বিষয়ে অপহরণ ও গণধর্ষণের অভিযোগে ১১জনের নামে মামলা দায়ের করে। আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় কলম মির্জাপুর গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে মো. নাসির নামে একজনকে খালাস প্রদান করেন এবং অপর ১০জনকে দণ্ড প্রদান করেন।

রায় ঘোষণার সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মো. সাব্বির আহমেদ ও রাজিবুল হাসান এবং খালাসপ্রাপ্ত মো. নাসির পলাতক ছিলেন। মামলায় রাষ্ট্র পক্ষে স্পেশাল পিপি আনিসুর রহমান ও আসামি পক্ষে অ্যাডভোকেট নাজমুল হক আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

উভয় আইনজীবী রায়ের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। পলাতক আসামিরা যখন আটক হবে তখন থেকেই এই রায় কার্যকর হবে বলেও আইনজীবীরা জানান। রায়ে বাদী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড