• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ রোপণের পর কৃষকদের মাথায় হাত

  রয়েল আহমেদ, শৈলকুপা (ঝিনাইদহ)

০১ এপ্রিল ২০২৩, ১৪:৩২
ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ রোপণের পর কৃষকদের মাথায় হাত

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ রোপণের পর অর্থকরী ফসলটির ফলন বিপর্যয় হয়েছে। সেই সঙ্গে উৎপাদন খরচের বিপরীতে কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

কৃষকদের দাবি, এবার বিঘাপ্রতি পেঁয়াজ ২০-২৫ মণ করে হচ্ছে। আবার বাজারে প্রতি মণ পেঁয়াজ ৬০০-৭০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদন করতে ৩০-৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।

অথচ এবার এক বিঘা জমির পেঁয়াজ বিক্রি করা যাচ্ছে ১৮-২০ হাজার টাকা। একে তো ফলন নেই, তার পর আবার বাজারে দাম কম। এতে কৃষকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। শৈলকুপার অন্যতম অর্থকরী ফসল পেঁয়াজ। তাই এখানকার চাষিরা এই শস্যটি বেশি চাষ করে থাকেন। অনেক ক্ষুদ্র চাষি বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে পেঁয়াজ চাষ করে থাকেন।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন মাঠ ঘুরে দেখা যায়, চাষিরা পেঁয়াজ উঠানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তারা জানান, এ বছর নিম্নমানের ভারতীয় বীজ বপনের কারণে শত শত বিঘা জমির ফলন একেবারেই কম হয়েছে। মাটির নিচে পেঁয়াজের গোটা ঠিকমতো বাড়েনি। পেঁয়াজ উঠালেই দেখা যাচ্ছে শিকড় আর শিকড়। কাঙ্ক্ষিত ফলন না হওয়ায় বেশিরভাগ চাষিকে হতাশা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

উপজেলার বড় মৌকুড়ি গ্রামের কৃষক নিজাম সিকদার বলেন, ৬০ শতক জমিতে লাল তীর কিং মনে করে পেঁয়াজ লাগিয়েছিলাম। বীজ ভেজাল ছিল। তাই এবার ফলন একেবারেই কম হয়েছে। বিঘাপ্রতি ২০-২৫ মণ পেঁয়াজ হতে পারে। আবার বাজারে দামও খুব কম। পেঁয়াজ তুলে রাখতে পারছিনা গাছ গজিয়ে যাচ্ছে। তাই পেঁয়াজ নিয়ে বড় চিন্তার মধ্যে আছি।

আউশিয়া গ্রামের মিতুন বিশ্বাস নামে আরেক চাষি বলেন, ১০০ শতক জমিতে পেঁয়াজ চাষ করি। অন্যান্য বছর যেখানে বিঘাপ্রতি ৬০-৭০ মণ ফলন হতো, এবার সেখানে ২৫-৩০ মণ করে পাচ্ছি। আবার বাজারে পেঁয়াজের দামও একেবারেই কম। অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, এখন আমি কী করব ভেবে পাচ্ছি না। ভাবছি পেঁয়াজ চাষ ছেরেই দেবো।

মনোহরপুর ইউনিয়নের বিজুলিয়া গ্রামের শরিফুল ইসলাম বলেন, সমিতি থেকে ঋণ করে কয়েক বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। ভেবেছিলাম পেঁয়াজ বিক্রি করে পরিশোধ করব। কিন্তু এখন আর তা হলো না। কারণ এবার ফলন একেবারেই কম আবার বাজারে দামও কম। লোকসান হবে। আমরা অনেকটা দিশাহারা হয়ে পড়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনিসউজ্জামান খান বলেন, যদিও চলতি রবি মৌসুমে ৪৬ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়েছে। পেঁয়াজ চাষে ফলন বিপর্যয় হয়নি বলে আমার মনে হয়। তবে এটা ঠিক, বাজারে পেঁয়াজের দাম কম। ২-৩ মাস পর দাম বাড়ার সম্ভাবনা আছে। যারা সংরক্ষণ করতে পারবেন, তখন তারা লাভবান হবেন।

খুচরা বিক্রেতা রেন্টু মোল্লা জানান, কয়েক দিন ধরে ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে পাইকারি আড়তগুলোতে ভারতীয় পেঁয়াজের সরবরাহ নেই। দেশি পেঁয়াজ দখল করেছে ভারতীয় পেঁয়াজের বাজার। সাত দিনের ব্যবধানে কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত কমেছে দাম।

পেঁয়াজের পাইকারি আড়তদাররা বলেন, রমজান মাসে পেঁয়াজ বেশি প্রয়োজন হয়। এ সময় আমদানি বন্ধ করায় দাম বাড়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু দেশি পেঁয়াজ পর্যাপ্ত পরিমাণ রয়েছে। সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় দামও দিন দিন কমেছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড