কাজী শাহরিয়ার রুবেল, বরগুনা
বরগুনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস নিয়ন্ত্রণ করেন একটি অসাধু দালাল চক্র। পাসপোর্ট অফিসের কিছু অসাধু কর্মচারী এসব দালালদের সহযোগিতা করেন। ঘুষ দিলে কাজ হয়, নয়তো ভোগান্তির শেষ থাকে না পাসপোর্ট আবেদনকারীদের। যদিও পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের দাবি- তাদের এখানে কোনো দালাল চক্র নেই।
সরজমিনে দেখা যায়, দালাল ও অসাধু কর্মচারীদের দৌরাত্ম্যে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে পাসপোর্ট সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ। নিয়ম অনুযায়ী সকল কাজ করলেও ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা মিলে না। এতে বিরক্ত পাসপোর্ট সেবা প্রত্যাশীরা। দালাল চক্রের অর্থ বাণিজ্য আর পাসপোর্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের অনিয়মের কারণে জিম্মি হয়ে পড়ছেন এসব মানুষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক নারী দালাল বলেন, অর্থ বাণিজ্য অর্থাৎ ঘুষ ছাড়া কোনো সেবা এখানে দেওয়া হয় না। আমার মতো অনেকে এই কাজের সাথে জড়িত আছে। এর মধ্যে পাসপোর্টের অনলাইনে আবেদন করা কিছু দোকানদারও আছেন। তারা সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে এসব কাজ করেন।
সেই নারী দালালের তথ্য অনুযায়ী খোঁজ নেওয়া হয় বরগুনা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের আশেপাশের অনলাইনের দোকানগুলোতে। দেখা যায়, অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শেষে শুরু হয় দালালি কার্যক্রম। গ্রাহককে বিদ্যুৎ গতিতে কাজ করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে হাতিয়ে নেয় ১৫শ থেকে দুই হাজার টাকা। আর তাদের মাধ্যমে সেবা না নিলে সেবা পেতে নানা ভোগান্তি পেতে হয়।
পাসপোর্ট সেবা নিতে আসা হাসিব আল হাসান নামে একজন জানান, দালাল ছাড়া এখানে কোন সেবা মিলে না। নানা ধরনের অজুহাত দেখিয়ে সেবা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অনলাইনে আবেদন করে নির্ধারিত ফি পরিশোধ চালান এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে গেলেও নানা ভুল আছে বলে ফেরত পাঠানো হয়। পরে একজন দালালের সহযোগিতা নেই। তাকে ১৫শ টাকা দিলে সে কাকে যেন ফোন দিয়ে ৩০৬ বলে আমাকে ভিতরে পাঠিয়ে দেয়। আমি তার কথা মতো ভিতরে গিয়ে মাত্র পাঁচ মিনিটে ফিঙ্গার ও ছবি তুলে এসেছি।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, অফিসের তৃতীয় শ্রেণির এক কর্মচারী অফিস শেষে অনলাইনের দোকান ও অন্যান্য দালালদের নিকট থেকে টাকা সংগ্রহ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, কে কয়টা ফরম পাঠিয়েছে সে অনুযায়ী টাকা নেওয়া হয় সন্ধ্যার পরে। তবে সাংবাদিকরা নজর রাখায় এখন গিয়ে গিয়ে টাকা সংগ্রহ করা তেমন হয় না। এখন বিকাশের মাধ্যমে এই ঘুষের টাকা সংগ্রহ করা হয়।
এ বিষয়ে বরগুনা আঞ্চলিক অফিসের সহকারী পরিচালক রাশেদুল ইসলাম বলেন, অফিসের কেউ যদি অর্থ বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর আবেদনকারী নিজে ফরম জমা দিয়ে প্রসেসিং শেষে পাসপোর্ট নিয়ে যাবে। এখানে দালালদের কোনো সুযোগ নেই।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড