• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বিদ্যালয়ের সামনেই ডোবা পুকুর, ঝুঁকিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা

  শুভংকর পোদ্দার, হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ)

২৮ মার্চ ২০২৩, ১২:২৩
বিদ্যালয়ের সামনেই ডোবা পুকুর, ঝুঁকিতে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা
বাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ডোবা পুকুর (ছবি : অধিকার)

মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের ৮১নং বাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনের সামনেই ডোবা পুকুর। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে পানির সাথে প্রবেশ করে কচুরি পানা। পানি চলে যাওয়ার পরে আটকে থাকা কচুরি পানা পচে সৃষ্টি হয় দুর্গন্ধের। বিভিন্ন জাতের পোকামাকড়সহ জন্ম নেয় এডিস মশা।

এর মধ্য দিয়েই নিয়মিত ক্লাস করে চলছে বিদ্যালয়ে প্রায় তিন শতাধিক কোমলমতি শিক্ষার্থী। ডোবা পুকুরটি ভরাটের অভাবে সহশিক্ষা কার্যক্রম থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা। একটি ক্লাস শেষ হয়ে গেলে পরবর্তী ক্লাসের জন্য ক্লাস রুমেই অপেক্ষার প্রহর গুণতে হয় কিংবা বিদ্যালয়ের করিডরেই সময় কাটাতে হয়।

শুধু তাই-ই নয়, টিফিনের সময়টুকুও তাদের বিদ্যালয় আঙ্গিনায় খেলাধুলা বা দৌড়া-দৌড়ির কোনো সুযোগ নেই। এভাবেই চলছে ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই প্রাথমিক বিদ্যাপীঠটি।

সরেজমিনে জানা যায়, ১৯৯০ সালে বেসরকারিভাবে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়। পার্শ্ববর্তী ৬টি গ্রামের সমন্বয়ে ক্যাচম্যান্ট এলাকা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়টি ২০১৩ সালে জাতীয়করণ হয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই বিদ্যালয়ের নিজস্ব মাঠ না থাকায় বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতে হয় বিদ্যালয় থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূরে বাস্তা সোনালী সংঘ ফুটবল মাঠে।

অথচ বিদ্যালয়ের সামনে ২০ শতাংশ জায়গা ডোবা পুকুরটি ভরাট করা হলে সহ-শিক্ষা কার্যক্রমসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলে সুবিধা হতো।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ উপজেলায় ৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৬ হাজার ৩শ ৫১ জন। এর মধ্যে ১২টি বিদ্যালয়ের মাঠ থাকলেও ৭৮টি বিদ্যালয়ের কোনো মাঠ নেই। ফলে প্রায় ১৩ হাজারের অধিক শিক্ষার্থী সহশিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

৮১নং বাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. হোসেন আলী বলেছেন, আমার বিদ্যালয়ের সামনে এই ডোবা পুকুর থাকায় সহ-শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। জলাবদ্ধ হয়ে আটকে পরা কচুরি পানা পচে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়। এতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অসুবিধা হচ্ছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে আমরা খুব ঝুঁকির আছি। ডোবা পুকুরটি ভরাট করা জরুরি হয়ে পড়েছে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সুদৃষ্টি কামনা করছি।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি রাজু আহমেদ মোকলেছ জানান, বিদ্যালয়ের সামনের এই ডোবা পুকুর ভরাটের জন্য উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ বরাবর আবেদন করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। জায়গাটুকু ভরাট করা না হলে শিক্ষার্থীরা সহশিক্ষা কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত থাকবে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাইনুল ইসলাম বলেন, বাস্তা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডোবা ভরাটের বিষয়ে অবগত করলেও আসলে মাটি ভরাটের জন্য আমাদের কোনো প্রকল্প নেই। এটা স্থানীয় সরকারের অধীনেই করতে হবে। এছাড়া অধিকাংশ বিদ্যালয়েই মাঠ নেই।

তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে ইচ্ছা থাকলেও আমাদের পক্ষে মাঠের জায়গা ব্যবস্থা করা সম্ভব নয়। কারণ এক্ষেত্রে নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করতে হবে, যা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাছাড়া বিদ্যালয় সংলগ্ন এমন জমি পাওয়াও কষ্টকর। সুতরাং মাঠের প্রয়োজন হলেও মাঠের ব্যবস্থা করা খুবই দুষ্কর।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড