মো. নুর আলম শেখ, কুষ্টিয়া সদর
শুরু হয়েছে পবিত্র রমজান মাস। পণ্যের সঙ্গে ফল ইফতার ও কাঁচা পণ্য কিনতে বাজারে ভিড় করছেন ভোক্তারা। কিন্তু দামের কারণে অনেক পণ্যই থাকছে নাগালের বাইরে। শুধু ফল, চাল, তেল, মাংসই নয়, খেজুর, মুড়ি, গুড়ের মতো ইফতার সামগ্রীর দাম বেড়েছে। সরবরাহ ঠিক থাকলেও বেড়েছে নিত্যপণ্যের দাম। তবে ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে তদারকি না থাকার প্রভাব ও রোজায় চাহিদা বাড়ায় সুযোগ নিচ্ছে বিক্রেতারা।
ইতোমধ্যে বাজারে সব ধরনের ফল ও ইফতার পণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে। বিপরীতে আয় বাড়েনি বেশিরভাগ সাধারণ ক্রেতার। ফলে বাজারে গিয়ে তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ছে। উচ্চমূল্যের বাজারে যারা ফল কিনতে পারছেন না তাদের দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কোনো উপায় নেই। বাজার ঘুরে খুচরা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, খুচরা পর্যায়ে
আপেল প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা গত বছর একই সময় ১৭০- ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি মাল্টা বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা, যা আগে ১৬০-১৮০টাকা ছিল। কমলা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, যা গত বছর একই সময়ে ছিল ১৫০ টাকা। এছাড়া খুচরা পর্যায়ে ৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মরিয়ম খেজুর এখন ৭৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজোয়া খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়, যা আগে ৩৫০ টাকা ছিল। আর প্রতিকেজি সাধারণ মানের খেজুর বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা, যা আগে ১৬০ টাকা ছিল।
এক থেকে দেড় মাস আগে প্রতি কেজি আখের গুড় বিক্রি হতো ১০০ টাকা কেজিতে, এখন তা ১৪০ টাকা। ১০০ টাকার মুড়ি ১২০ টাকা। বেগুন, টমেটো, শশা, লেবু, ছোলা, চিনি, মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দামও বাড়ানো হয়েছে।
বাজারে আসা ক্রেতা মোতালেব বলেন, গত রোজায় ১৫/২০ টাকা হালি কলা ২৫ /৩০ টাকা, খেজুরের দাম গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি, প্রায় দ্বিগুণ দাম বেড়েছে। আমরা সাধারণ মানুষ খেজুর কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। গত বছর যে খেজুর ১২০ টাকা ছিল সেই খেজুর এ বছরে ২০০- ২৫০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। যেসব খেজুর ৫০০ টাকা কেজি ছিল তা এক হাজার ৫০০। ৮০০ টাকার খেজুর ১৬০০-১৭০০। আর ইফতার সামগ্রীসহ সব ধরনের জিনিসপত্রের দামও বেড়েছে। কিন্তু আয় আর বাড়েনি।
খেজুর ব্যবসায়ীরা বলেন, ডলারের বিনিময়ে খেজুর কিনতে হয়। ডলারের দাম বৃদ্ধির ফলে খেজুরের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দেশে চিনির দাম বাড়লে গুড়ের দাম বেড়ে যায়। বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না। হঠাৎ করে যে কোন কিছুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সকালে এক দামে কিনছি, বিকেলে আরেক দাম।
ফল ব্যবসায়ীরা বলেন, 'আমরা বেশি দামে সব ধরনের ফল কিনেছি। এজন্য বেশি নামে বিক্রি করছি। সাধারণ ক্রেতাদের অভিযোগ, বাজারে তদারকি না থাকায় এবং রোজায় চাহিদা বাড়ায় সুযোগ নিচ্ছে অসাধু বিক্রেতারা। বিক্রেতারা এক প্রকার স্বেচ্ছাচারিতা করছেন। অথচ যারা দেখার তারাও রহস্যজনক কারণে নির্বিকার।
আমিনুর বলেন, 'আমি একজন শ্রমিক। বাজারে জিনিসপত্রের দাম মাসে মাসে বাড়ে, আমাদের আয় বাড়ে না। ইচ্ছা করলেও উপায় নেই। ইফতারের জন্য ফলমূল কেনার সামর্থ্য নেই। তাই সবজি ও সিলভার কার্প মাছ কিনলাম।'
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম দৈনিক অধিকার প্রতিনিধিকে বলেন, পবিত্র রোজায় কেউ কারসাজি করলে তাকে জবাবদিহির আওতায় আনা হবে। বাজারেও অভিযান পরিচালনা করতে সব ধরনের কার্যক্রম চলছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড