সম্রাট, কয়রা (খুলনা)
খুলনা রেঞ্জের পশ্চিম সুন্দরবনের গহীন বনের নদী-খালে কোনো প্রকার পাস-পারমিট ছাড়াই অবাধে পারসে মাছের পোনা আহরণ চলছে। অথচ বন বিভাগ সব জেনেও নীরব। এটি লাভজনক হওয়ায় ফড়িয়ারা মহাজনের কাছ থেকে দাদন নিয়ে পারসে মাছের পোনা ধরার কাজে লিপ্ত রয়েছে।
বন বিভাগ বিষয়টি জেনেও রহস্যজনক কারণে অবৈধভাবে পোনা আহরণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।
স্থানীয় একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে, বর্তমানে সুন্দরবনে কোনো ধরনের পোনা আহরণের পারমিট নেই। কিন্তু এক শ্রেণির অসাধু সিন্ডিকেট বিভিন্ন ফরেস্ট স্টেশন ও বন টহল ফাঁড়িতে কর্মরত বন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে গোপন চুক্তির মাধ্যমে উৎকোচ দিয়ে দেদারসে পারসে পোনা আহরণ করছে। এতে বন বিভাগ বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাচ্ছে। আর বিলুপ্ত ঘটছে বিভিন্ন প্রজাতির ছোট মাছের।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, পোনা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সুন্দরবনের বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক, কাশিয়াবাদ, বানিয়াখালী ও কৈখালী ফরেস্ট স্টেশন থেকে সাদা মাছ পরিবহনের নামে ট্রলারের পারমিট নিয়ে পোনা ধরার কাজে নিয়োজিত রয়েছে।
জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পোনা ধরা শুরু হয়েছে। যা চলমান রয়েছে। তবে পোনা নিধনযজ্ঞ চললেও বন বিভাগ জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেনি।
সূত্র জানায়, বর্তমানে অর্ধশতাধিক ট্রলার সুন্দরবনের আলোরকোল, নীলকমল, কালিরচর, দুবলারচর, নারিকেল বাড়িয়া, শাপখালি, বাটলু ও দোবেকীসহ বনের গভীরে পারসে মাছের পোনা ধরছে। ওই পোনা লোকালয়ে উচ্চ মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। আর বনের ভিতর পোনা পরিবহনের ট্রলারগুলো অবাধে চলাচলের সুযোগ দিয়ে অসাধু বন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সুবিধা নিচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পোনা আহরণের সাথে সম্পৃক্ত কয়েকজন জেলে জানান, পারসে মাছের পোনা ধরার সুযোগের বিনিময়ে বন বিভাগের প্রতি গোনে টাকা দিতে হয়। এছাড়া বুড়িগোয়ালীনি, বানিয়াখালী, নলিয়ান ফরেস্ট স্টেশনেও মাসোয়ারা দিয়ে ঝাঁপালি, নওয়াবেকী, আমাদি, গড়–ই খালী ও পাইকগাছা সেটে পোনা বিক্রির পথ সুগম করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সহকারী বন সংরক্ষক এজেডএম হাসানুর রহমান বলেন, সুন্দরবনে পারসে মাছের পোনা নিধনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে।
খুলনা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডক্টর আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, সুন্দরবনে অবৈধভাবে পোনা আহরণের কোনো সুযোগ নেই। যদি এ ধরনের কোনো অপতৎপরতা লক্ষ করা যায় তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এছাড়া অবৈধ কাজের সাথে বনবিভাগের কারো কোনো সম্পৃক্ততা থাকলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড