মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
শিল্প-বাণিজ্যিক নগর ও ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ। এতদিন সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর শীতলক্ষ্যা নদীঘেঁষা পৌনে তিন কিলোমিটার ওয়াকওয়ে ছাড়া ছিল না কোনো বিনোদন-কেন্দ্র। তবে বর্তমানে সিদ্ধিরগঞ্জবাসীর বিনোদনের খোরাক মেটাচ্ছে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ লেক। এই এক লেকে বদলে যাচ্ছে সিদ্ধিরগঞ্জের চিত্র।
এ দিকে নির্মাণাধীন সিদ্ধিরগঞ্জ লেকে বিকেল হলেই ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। বিশেষ করে ছুটির দিনে লেকটিতে ঢল নামে দর্শনার্থীদের।
গতকাল শুক্রবার (১৭ মার্চ) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ লেকে সরেজমিনে গিয়ে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই সিদ্ধিরগঞ্জ লেকটি এখন ভ্রমণ-পিপাসুদের কাছে দর্শনীয় স্থান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। খোলামেলা পরিবেশে স্নিগ্ধ প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে সিদ্ধিরগঞ্জসহ আশপাশের মানুষরা এই স্থানটিতে ঘুরতে আসেন। তবে এই লেকের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হলে এটি নারায়ণগঞ্জবাসীর অন্যতম বিনোদন স্পটে পরিণত হবে এমনটাই আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন ৩নং ওয়ার্ডের গলাকাটা পুল থেকে ৮নং ওয়ার্ডের ভাঙ্গারপুল পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার ডিএনডি খালের সৌন্দর্যবর্ধনে ৬৩ কোটি ৪৮ লাখ এবং লেকের ওপর ছয়টি ব্রিজ নির্মাণে ৩৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। জাইকার অর্থায়ন ও সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধানে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স উদয়ন বিল্ডার্স প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে।
এ দিকে লেকটিকে কেন্দ্র করে এরই মধ্যে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। লেকটির পাশে রয়েছে ভাসমান বিভিন্ন খাবার যেমন- বাদাম, জিলাপি, শরবত, চটপটি, ফুসকা, ভেলপুরি, আচারসহ ছোট বড় নানা ধরণের ফাস্টফুডের দোকান।
লেকটিতে ঘুরতে আসা অধিকাংশ দর্শনার্থী জানান, লেকের নির্মল বাতাস, নিরিবিলি পরিবেশ, টলটলে জলরাশি, পরিবেশ বান্ধব নানা প্রজাতির গাছপালা, হাঁটাহাঁটির করার মতো এমন প্রশস্ত জায়গা সিদ্ধিরগঞ্জের আর কোথাও নেই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য স্বচক্ষে অবলোকন করতে প্রতিনিয়ত এখানে ছুটে আসেন তারা।
বন্ধুদের নিয়ে আড্ডায় মেতেছেন একদল শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে কথা হলে আশরাফুল আলম নামের এক শিক্ষার্থী জানান, অবসর সময়ে তারা এখানে আড্ডা দেন। শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় সব বন্ধুরা একসঙ্গে দীর্ঘক্ষণ গল্প করার সুযোগ হয়েছে। আর গল্প বা আড্ডার জন্য আমার মতে এটি সেরা জায়গা।
পরিবার নিয়ে নদী ভ্রমণ করতে আসা প্রিয়া আক্তার নামের এক দর্শনার্থী জানান, পূর্বে এখানে রাস্তা নিচু থাকায় অল্প বৃষ্টিতেই পানি জমে থাকতো। এছাড়া তখন অনেক ঝোপঝাড় থাকায় এটি মাদকসেবীদের আড্ডাখানা ছিল। তবে এই লেক নির্মাণের পর থেকে এটি এখন বিনোদনের জায়গায় পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ এখানে ঘুরতে আসেন।
স্বপন-মৌমিতা নামের এক দম্পতি ঘুরতে এসেছেন এখানে। কথা হলে তারা জানান, লেকটি খুবই সুন্দর। ব্রিজগুলোর নান্দনিক ডিজাইনের কারণে আরও বেশি ভালো লাগে। আমাদের সদ্য বিবাহ হয়েছে। কর্মব্যস্ততার কারণে ঘোরাঘুরি জন্য শুক্রবার দিনটিকে বেঁছে নিয়েছি। পূর্বে ছুটির দিনে নদীর পাড়ে ঘুরতে গেলেও এখন এই লেকে বেশি আসা হয়ে থাকে। তবে এই লেকে যদি কায়াকিং অথবা পায়েচালিত বোটের ব্যবস্থা করা হতো তাহলে পরিবার নিয়ে দর্শনার্থীদের জন্য আরো মনোমুগ্ধকর হতো।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড