• শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুক্তিযুদ্ধের করুণ স্মৃতি আজও কাঁদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছকে

  এম এ মোতালিব ভুঁইয়া, দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ)

১৪ মার্চ ২০২৩, ১৪:১৯
মুক্তিযুদ্ধের করুণ স্মৃতি আজও কাঁদায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছকে
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ মিয়া (ছবি : অধিকার)

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের বাশতলা গ্রামের মৃত সাদত আলীর ছেলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ইলিয়াছ মিয়া অংশ নিয়েছিলেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। একাত্তরে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাকে যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিতে তিনি পাড়ি জমান ভারতের শিলং। শিলং থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে ট্রেনিংয়ের উদ্দেশ্যে পাঠানো হয় ভুটান। সেখানে টানা ২৮ দিন ট্রেনিংয়ে রণকৌশল রপ্ত করে ফিরে আসেন দেশে।

প্রশিক্ষণ শেষে সিলেটের মুক্তারপুর সেন্টার এখান থেকেই জৈন্তাপুর ৪ নম্বর, ডুলটিরপার, খারোবিল, নাপিতখাল, দিগারাইলসহ একাধিক অভিযানে প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তিনি।

৫২ বছর আগের স্মৃতিচারণ করে ইলিয়াছ মিয়া বলেন, যুদ্ধ শুরু হলে আমরা চার বন্ধু ফজলুল কাদির, নুরুল ইসলাম, আব্দুল খালেক, হুমায়ুন যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেই। আমি বাবার সাথে ধানের জালা ফালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম এমন সময় বন্ধু হুমায়ুন, আব্দুল খালেক, ফজলু মামা এসে খবর দেয় আজকে আমরা ট্রেনিং সেন্টার যাব। আমি জমির কাজ ফেলে বাবা মা ভাই বোন ও স্ত্রীকে না জানিয়েই কাদামাখা লুঙ্গি পড়ে বাশতলা হকনগর সেন্টার গিয়ে নাম লেখানোর পরে ভারতীয় আর্মির লোকজন আমাদের শিলংয়ে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, সেখান থেকে ভুটান নিয়ে ২৮ দিন প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো। প্রশিক্ষণ শেষে প্রথমে সিলেটের মুক্তারপুর সেন্টার এখান থেকেই জৈন্তাপুর ৪ নম্বর, ডুলটিরপার, খারোবিল, নাপিতখাল, দিগারাইলসহ একাধিক অভিযানে প্রত্যক্ষভাবে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি।

যুদ্ধের স্মরণীয় ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইলিয়াছ মিয়া বলেন, সিলেটের রশিদ ফিল্ড ও দিগারাইল পাকিস্তানি হানাদারদের সঙ্গে সম্মুখ যুদ্ধে আমার সাথের ১৬ জন থেকে আটজনই শহীদ হয়েছিল। আমরা অল্পের জন্য বেঁচে যাই। সহযোদ্ধাদের লাশও নিয়ে আসতে পারিনি। চোখের সামনে সহযোদ্ধাদের প্রাণ হারানোর সেই স্মৃতি এখনো আমাকে তাড়া করে বেড়ায়। এই ঘটনা স্মৃতি এখনো কাঁদায়।

তার আশা, যেমন করে আগলে রেখেছেন যুদ্ধের স্মৃতি, তেমনি দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম চেতনায় লালন করবে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মত্যাগ। পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ের বাবা এই মুক্তিযোদ্ধা এখন পরিবার-পরিজন নিয়ে গ্রামে বসবাস করছেন। সময় পার করছেন কৃষিকাজ করে।

এই বীর মুক্তিযোদ্ধার প্রত্যাশা, এই দেশ একদিন বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। এই স্বপ্ন নিয়ে এখনো বেঁচে আছি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড