• মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইটভাটার ভেকুর থাবায় বিধ্বস্ত ফসলি জমি

পুকুরে পরিণত হচ্ছে গোটা উপজেলা

  মিলন মাহমুদ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)

১৪ মার্চ ২০২৩, ১২:০৭
ইটভাটার ভেকুর থাবায় বিধ্বস্ত ফসলি জমি

মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বৈধ-অবৈধ প্রায় ৮০ থেকে ৮৫টি ইটভাটা চালু রয়েছে। কিন্তু জাতীয় তথ্য বাতায়নের তথ্য অনুযায়ী বৈধ ইটভাটার সংখ্যা মাত্র ৪২টি। এসব ইটভাটায় উপজেলার তিন ফসলি জমির মাটি কেটে পুড়ানো হচ্ছে।

এলাকাবাসী ও সচেতন মহল মাটি কাঁটা বন্ধে বিভিন্ন সময় মানববন্ধন ও লিখিত অভিযোগ দিলেও যেন বন্ধ হচ্ছে না। মাটিকাটা বন্ধে স্থানীয় প্রশাসনেরও তেমন কোনো অভিযান চোখে পড়ছে না। এ নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ সচেতন মহলে। ফলে সিংগাইর উপজেলার আবাদি কৃষিজমি দিন দিন পুকুরে পরিণত হচ্ছে। এ উপজেলা যেন পুকুরের উপজেলা হয়ে যাচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার বলধারা, মানিকদহ, গোলাইডাঙ্গা, খোলাপাড়া, চারিগ্রাম, জামির্ত্তা (হাতনি), চান্দহর, ফতেহপুর, জামশা, বায়রাসহ বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটিখেকোরা প্রায় ২০-২৫ ফিট গভীরভাবে মাটি কাটছে। ফলে পাশের কৃষি জমি যে কোনো সময় ধসে পড়বে।

কৃষি জমিটি ধসে পড়ার ভয়ে নাম মাত্র মূল্যে মাটি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতে বাধ্য হয় সাধারণ কৃষক। এভাবে শত শত কৃষি জমি পুকুরে পরিণত হচ্ছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন প্রশাসনকে জানালেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

দক্ষিণ গোলাইডাঙ্গা এলাকার কৃষক মোঃ রশিদ জানান, দক্ষিণ গোলাইডাঙ্গা চকে তার ২ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। জমিটির পাশের জমি থেকে ভেকু মেশিন দিয়ে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। স্থানীয় চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রশাসনকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না প্রশাসন।

আব্দুর রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন, ২ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। এরপর ইরিধান হবে। এই ধান দিয়ে আমার পরিবারের সারা বছরের খাবার হয়। পাশের জমি ভেকু মেশিন দিয়ে ১৫/২০ ফিট গভীর করে কাটা হচ্ছে। বর্ষা হলেই আমার জমি ভেঙে পড়বে। তখন বাধ্য হয়ে ওই মাটি খোরদের কাছে কৃষি জমিটি নাম মাত্র মূল্যে বিক্রি করতে হবে।

জাহাঙ্গীর হোসেন নামে ভেকু মেশিন চালক বলেন, মাটি কেটে এ. কে. বি ইটভাটায় নেওয়া হচ্ছে। আমাদের কি দোষ, আমাদের যেভাবে মাটি কাটতে বলবে আমারা সেভাবেই তো মাটি কাটবো। আপনি মালিকের সাথে কথা বলুন।

মানিকদহ এলাকার জে. এ. বি ইটভাটার ম্যানেজার তরিকুল ইসলাম বলেন, মাটি না কাটলে ইট বানাবো কিভাবে। প্রতিটি ইটভাটার মালিকরাই তো কৃষি জমি থেকে মাটি কাটে। সরকার ইট ভাটার অনুমোদন দেওয়া বন্ধ করুক। আমরা মাটিকাটা বন্ধ করবো।

সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিপন দেবনাথ বলেন, যেখানেই মাটি কাটার খবর পাই সেখানেই ভূমি সহকারীদের দিয়ে মাটিকাটা বন্ধ করা হয়। এরপরও যারা কৃষি জমি থেকে মাটি কাটছে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড