• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

রাঙামাটিতে বেশিরভাগ ইটভাটা অবৈধ

  এম.কামাল উদ্দিন, সিনিয়র স্টাফ রিপোর্টার (রাঙামাটি)

২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৮:১০
ইটভাটা

রাঙামাটিতে গড়ে তোলা বেশিরভাগ ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে অবৈধভাবে। অভিযোগ মতে, বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৯৯৫ অনুযায়ী পাহাড় কাটা অবৈধ হলেও তা তোয়াক্কা করেননি পাহাড়ে গড়ে তোলা ইটভাটার মালিকরা। পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের ১৯৯৫ এর ৬(খ) অনুযায়ী পরিবেশ সুরক্ষায় পাহাড় কাটা সম্পর্কে বাধা-নিষেধ রয়েছে। কোনো ব্যক্তি বা প্রতষ্ঠান সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন বা দখলাধীন বা ব্যক্তিমালিকানাধীন পাহাড় ও টিলা কাটা যাবে না। এছাড়া ভাটা নির্মাণ ও ইট প্রস্তুত আইন অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে ইটভাটা স্থাপনের নিয়ম নেই। কিন্ত রাঙামাটিতে বেশিরভাগ ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘেঁষেই এবং বনের ধারে। ইটভাটার ধোঁয়া সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও লোকালয়ের বাসিন্দাদের জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

জানা যায়, রাঙামাটি জেলায় এ পর্যন্ত বাঘাইছড়িতে ২টি, কাপ্তাইয়ে ১টি, রাজস্থলীতে ৩টি, লংগদুতে ৩টি ও কাউখালীতে ১৬টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়। জেলার মোট ১০ উপজেলার মধ্যে সদর, জুরাছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি ও নানিয়ারচরে কোনো ইটভাটা নেই। এসব ইটভাটায় আইন অমান্য করে অবৈধভাবে কাচামাল হিসাবে পাহাড় থেকে কাটা মাটি এবং জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বনের কাঠ সংগ্রহ করে। ফলে দিন দিন বাড়ছে পাহাড় ধ্বসের ঝুঁকি এবং উজাড় হয়ে যাচ্ছে বন। হুমকিতে বন ও পরিবেশ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ১৪ মার্চ অনুষ্ঠিত একই রিটের শুনানি শেষে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে গড়ে তোলা ১৩০টি অবৈধ ইটভাটা গুড়িয়ে উচ্ছেদ করার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। যেগুলোর মধ্যে রাঙামাটি জেলায় রয়েছে ২৫টি। তিনটি পার্বত্য জেলার বিভিন্ন উপজেলায় স্থাপিত অবৈধ ইটভাটাগুলো পরবর্তী ৬ সপ্তাহের মধ্যে অপসারণ করে তার প্রতিবেদনসহ ওইসব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দেন হাইকোর্ট। ওইদিন আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। ১৩০টি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে রয়েছে- রাঙামাটিতে ২৫টি, খাগড়াছড়িতে ৩৫টি এবং বান্দরবানে ৭০টি।

হাই কোর্টের আদেশে রাঙামাটিতে গড়ে তোলা বিভিন্ন ইটভাটার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেয় জেলা প্রশাসন। এতে অবৈধভাবে কাচামাল হিসাবে পাহাড় কাটার মাটি এবং জ্বালানি হিসাবে বনের কাঠ পোড়ানোর অপরাধে বাঘাইছড়ি উপজেলায় ২টি ইটভাটার মালিককে ৫০ হাজার করে ১ লাখ টাকা জরিমানাসহ ভাটা দুটি বন্ধ করে দেয় প্রশাসন। কিন্তু পরবর্তীতে উচ্চ আদালতে ইটভাটার মালিকরা রিট করায় প্রশাসনের অভিযান স্থগিত হয়ে যায়। এতে বর্তমানে অবাধে ইটভাটাগুলো পরিচালনা করে যাচ্ছেন মালিকরা। তার আগে ২০২১ সালের মার্চে রাজস্থলী উপজেলায় প্রধান সড়কে লাগোয়া পাহাড় কেটে ‘বিআরবি ব্রিকফিল্ড’ নামে একটি ইটভাটা গড়ে তোলার অপরাধে ২৩ মার্চ পরিচালিত অভিযানে মালিককে ১ লাখ টাকা জরিমানা করে উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে সেই ইটভাটাটিও অবাধে পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।

জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান বলেন, ওই সময় হাই কোর্টের আদেশ অনুযায়ী আমরা সঙ্গে সঙ্গেই জেলায় বিভিন্ন উপজেলায় গড়ে তোলা ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে অভিযান পরিচালনা শুরু করি। বেশ কয়েকটি অবৈধ ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ভাটার মালিকরা হাই কোর্টে রিট করায় উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত হয়ে যায়।

পার্বত্য চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের মারিশ্যা রেঞ্জ কর্মকর্তা নির্মল কুমার কুন্ডু বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে প্রশাসন ও বন বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সবাইকে একযোগে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড