• বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৯ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

আমেরিকার ‘চিয়াসিড’ চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে

  কাজী কামাল হোসেন, ব্যুরো প্রধান (রাজশাহী)

২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৩:০০
আমেরিকার ‘চিয়াসিড’ চাষ হচ্ছে বাংলাদেশে

আমেরিকার ঔষধি ও পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সুপার ফুড হিসেবে খ্যাত সালভিয়া হিসপানিকা যার প্রচলিত নাম ‘চিয়াসিড’ চাষ হচ্ছে এখন বাংলাদেশে। নওগাঁ জেলার বদলগাছি উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের খোজাগাড়ি গ্রামে আব্দুর রউফ নামে এক সৌখিন কৃষক ৩৩ শতক জমিতে এ বছর পরীক্ষামূলক ভাবে চিয়া চাষ করে সফলতা পেয়েছেন।

নওগাঁ অঞ্চলের মাটিতে চিয়ার বাম্পার ফলন কৃষকদের মাঝে এক নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে। কৃষক রউফের জমিতে চিয়া চাষ এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়েছে। অনেক কৃষক এই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন বলে জানান রউফ।

আমেরিকা ও মেক্সিকোসহ বিভিন্ন দেশে চিয়া একটি ঔষধি ফসল হিসেবে চাষ হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম সালভিয়া হিসপানিকা। রউফ নিজে থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে চিয়া চাষ শুরু করেন।

জানা যায়, দেহের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে আরও শক্তিশালী, ওজন কমানো, ব্লাড সুগার স্বাভাবিক রাখা, হাড়ের ক্ষয়রোধ, প্রচুর পরিমাণে ফাইবার সমৃদ্ধ চিয়া মলাশয় পরিষ্কার রাখে ফলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।

কৃষক আব্দুর রউফ জানান, কৃষকের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। চিয়াসিডের প্রতি কেজি বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় এক হাজার টাকা। আসা করছি ৩৩ শতকে প্রায় আড়াই থেকে তিন মণ ফলন হবে যার বাজার মূল্য প্রায় একলক্ষ টাকা। আগামীতে আরও বেশি পরিমাণে চাষ করার ইচ্ছে আছে।

বদলগাছি উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, সালভিয়া হিসপানিকা উদ্ভিদের আদি জন্মস্থান সেন্ট্রাল আমেরিকা। সেখানকার প্রাচীন আদিবাসীরা খাদ্য তালিকায় থাকা চিয়া বীজকে অত্যন্ত মূল্যবান মনে করেন। তিনি জানান, ঔষধি গুন থাকায় চিয়া একটি লাভজনক চাষ। আব্দুর রউফ নওগাঁয় প্রথম এই চাষ শুরু করেছেন। আমাদের দেশের আবহওয়া ও মাটি চিয়া চাষের জন্য উপযোগী।

বদলগাছি উপজেলা কৃষি অফিসার সাবাব ফারহান জানান, সব ধরনের আবহাওয়ায় জন্মানো চিয়া বীজ দেখতে সাদা ও কালো রঙের তিলের মতো ছোট সাইজের হয়ে থাকে। অনেকেই চিয়া বীজকে তোকমা বলে ভুল করে থাকেন। দেখতে প্রায় একই রকম হলেও জন্মস্থান, পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্যগত দিক থেকে রয়েছে কিছু পার্থক্য। চিয়া সাধারণত তিন মাসের ফসল। অক্টোবর-নভেম্বর মাসে বীজ রোপণ করতে হয়। ৩৩ শতকের বিঘায় মাত্র তিন থেকে পাঁচ’শ গ্রাম বীজ লাগে। চাষ পদ্ধতিও খুব সহজ।

বদলগাছি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইউনানি মেডিক্যাল অফিসার ডা. নূর-ই-আলম জ্বালালি জানান, সুপার ফুড হিসেবে খ্যাত চিয়া সিডে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, কোয়েরসেটিন, কেম্পফেরল, ক্লোরোজেনিক এবং ক্যাফিক এসিড নামক এন্টিঅক্সিডেন্ট। রয়েছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় আঁশ।

তিনি জানিয়েছেন, এক আউন্স চিয়া বীজে রয়েছে প্রায় ৬ গ্রাম প্রোটিন, ৮.৫ গ্রাম ফ্যাট, ১১ গ্রাম ফাইবার, ১৩ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট (যার মধ্যে ১১ গ্রাম হল ফাইবার)। দৈনিক এক আউন্স চিয়া বীজ খেলে ১৮% ক্যালসিয়ামের চাহিদা, ২৭% ফসফরাসের চাহিদা এবং ৩০% ম্যাঙ্গানিজের চাহিদা পূরণ হতে পারে। তাই বর্তমানে চিয়া সিড শুধু ওজন কমানোর জন্য বা ডায়েটের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে না। নিরপেক্ষ স্বাদের কারণে চিয়া সিড সব ধরনের খাবারের সঙ্গে মিশিয়ে খাওয়ার উপযুক্ত।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড