• মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ৭ চৈত্র ১৪২৯  |   ২২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

এমপি মতিনের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবি

  হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম

১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৫৭
এমপি মতিনের ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ বাতিলের দাবি

কুড়িগ্রাম-৩ উলিপুর আসনের সংসদ সদস্য এম এ মতিন এমপি ও দেলোয়ার হোসেন নামে এক মুক্তিযোদ্ধার জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও সনদ বাতিলের দাবি জানিয়েছে উলিপুর উপজেলার সচেতন মুক্তিযোদ্ধাগণ। এনিয়ে শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদের অংশ হিসেবে কুড়িগ্রাম চিলমারী সড়কে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনের পর কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়। এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উলিপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার, উলিপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম হোসেন মন্টু।

এ সময় অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহাজাহান আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা খবির উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জলিল, বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক সরকার প্রমুখ। এ সময় উলিপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আহসান হাবীব রানাসহ প্রায় অর্ধশতাধিক মুক্তিযোদ্ধা প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেন।

এ সময় গোলাম হোসেন মন্টু বলেন, সংসদ সদস্য এমএ মতিন ১৯৭৯ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন, তার পরিবার রাজাকার পরিবার, তার ভাই আব্দুল করিম ছিলেন উলিপুর উপজেলা রাজাকার কমান্ডার। তারা মুক্তিযোদ্ধা নির্যাতনকারী। তিনি কোনদিন মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন নাই। লাল মুক্তিবার্তা, ভারতীয় তালিকা এবং ২০০৫ সালে প্রকাশিত গেজেটে তার নাম নেই। তিনি ২০১৪ সালে অনলাইনে আবেদনও করেন নাই এবং সেই তালিকায় তার নাম নাই। ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে তিনি গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে দাবী করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের অপমানিত করেছেন। এছাড়াও দেলোয়ার হোসেন নামে অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক একজনকে মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি প্রদান করা হয়েছে। আমরা এই দুই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার নাম বাতিলের আহবান করছি। না হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বাধ্য হবো।

অভিযোগ উঠেছে সংসদ সদস্য এম এ মতিন একজন রাজাকার পরিবারের সন্তান। তার পিতা মহির উদ্দিন ছিলেন রাজাকার ও পাকবাহিনীর লালন-পালনকারী। তার বড় ভাই মজিদ মাস্টার ছিলেন রাজাকারদের ব্রিগেড কমান্ডার এবং ছোট ভাই করিম ছিলেন রাজাকারদের প্লাটুন হাওয়ালদার। যা মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে রাজাকারের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত আছে। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় ৫২বছর পর একজন চিহ্নিত রাজাকার গ্রেফতার হওয়ার দিন মুক্তিযোদ্ধার গেজেটে সংসদ সদস্য এম এ মতিনের নাম ওঠার পর তিনি দলীয় লোকজনদেরকে নিয়ে মোটর সাইকেলসহ উলিপুর শহরে শো-ডাউন করেন।

এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মজিবুর রহমান জানান, ‘এই শোডাউন ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চরম লজ্জার। এটার জন্য সম্পূর্ণরুপে আমি দুষবো মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী মোজাম্মেল সাহেব এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। কারণ তার বাবা বলে গেছে রাজাকারমুক্ত দেশ হবে। আর উনি রাজাকারকে টিকিট দিয়া নতুন করি মুক্তিযোদ্ধা তৈরী করেন। এর চেয়ে লজ্জ্বা আমাদের কি হবে। এর চেয়ে যারা আমরা মুক্তিযোদ্ধা আছি নিজের গায়ে নিজের চাকু দিয়া মরা উচিৎ।’

এছাড়াও অভিযোগ করা হয় সংসদ সদস্য এম এ মতিন ১৯৭৯ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যে ৭ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। তার ৭নং সদস্য ছিলেন এম এ মতিন। তার হাত দিয়ে উলিপুর শহরে গড়া এম এ মতিন কারিগরি ও কৃষি কলেজের এমপিও ভুক্ত করার জন্য তৎকালিন খালেদা জিয়া সরকারের মন্ত্রী ও দলের মহাসচিব মান্নান ভূইয়া তাকে বিএনপি পরিবারের সদস্য হিসেবে উল্লেখ করেন। এমন ব্যক্তিকে আওয়ামী লীগের দলীয় টিকেট দেয়ায় নিন্দা জানানো হয়।

এ ব্যাপারে সংসদ সদস্য এম এ মতিন জানান, বিষয়টি রাজনৈতিক বিদ্বেষপ্রসুত। আমি ২০১১ সালে আবেদন করেছি। যাচাই-বাছাই ও নিয়মতান্ত্রিকভাবে সরকার আমাকে বীর মুক্তিযোদ্ধা খেতাব অনুমোদন দিয়েছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড