• মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ৭ চৈত্র ১৪২৯  |   ২৬ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই এলাকার সারের ডিলার

  এম. কামাল উদ্দিন, রাঙামাটি

১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:১০
ইউপি চেয়ারম্যান নিজেই এলাকার সারের ডিলার

রাঙামাটির লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শফিকুল ইসলাম নিজ ইউনিয়নে একজন সার ডিলার। তিনি ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ওই ইউপিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিধি লঙ্ঘন করে ডিলারশিপ ব্যবসায় জড়িত থাকার দায়ে চেয়ারম্যান পদ থেকে তাকে অপসারণের দাবি তোলা হয়েছে। এলাকার জনসাধারণের পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগে এ দাবি জানানো হয়।

এলাকাবাসীর পক্ষে মো. রেজাউল করিম, শহিদুল ইসলাম কামাল, মো. মাসুদ রানা, মো. সুলতান, মো. মিলন মেম্বার, হেকিম মেম্বারসহ অনেকের দাবি, ইউনিয়ন পরিষদ আইন অনুযায়ী কেউ সরকারি ঠিকাদারি বা ডিলারশিপ ব্যবসায় জড়িত থাকলে তিনি চেয়ারম্যান ও সদস্য পদের জন্য নির্বাচনে অযোগ্য। যদিও গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম নির্বাচনের আগে থেকেই বর্তমান পর্যন্ত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিযুক্ত একজন সার ডিলার হিসাবে লাভজনক ব্যবসায় জড়িত থাকলেও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ কোনো ব্যবস্থাই নেই। হলফনামায় তথ্য গোপন করে তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়- ইউনিয়ন পরিষদ আইন-২০১০’এর ২৬ ধারার ২(ছ)তে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, তিনি বা তার পরিবারের উপর নির্ভরশীল কোনো সদস্য সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোনো কাজ সম্পাদনের বা মালামাল সরবরাহের জন্য ঠিকাদার হন বা এতে নিযুক্ত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অংশীদার হন বা সংশ্লিষ্ট পরিষদের কোনো বিষয়ে তার কোনো প্রকার আর্থিক স্বার্থ থাকে বা তিনি সরকার কর্তৃক নিযুক্ত অত্যাবশ্যক ডিলার হন, তাহলে তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হওয়ার অযোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।

এ আইনের ৩৪’এর ৪ (ঙ)তে উল্লেখ আছে, এ আইনের ধারা ২৬ (২) অনুযায়ী অযোগ্য বলে নির্বাচনের পর প্রমাণিত হয় তবে চেয়ারম্যান, সদস্যগণ সাময়িক বরখাস্ত ও অপসারণযোগ্য। গুলশাখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম নির্বাচিত হওয়ার আগে থেকে আজ পর্যন্ত সার ডিলার হিসাবে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছেন। যা ইউনিয়ন পরিষদ আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন। তাই আইন অনুযায়ী তাকে চেয়ারম্যান পদ থেকে অপসারণের দাবি জানানো হয়েছে।

অভিযোগের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে স্থানীয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, লংগদু বরাবর।

বিষয়টি স্বীকার করে গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম জানান, তিনি ২০১২ সাল থেকে সারের ডিলার হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত। নির্বাচনি হলফনামায় তার ছেলের নামে ডিলারশিপের নাম পরিবর্তনের জন্য আবেদনের কপি জমা দিয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তবে এখনো নাম পরিবর্তন হয়নি। এ জন্য আবেদন করা হলেও নাম পরিবর্তন হতে সময় লাগে।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান বলেন, ওই ব্যক্তি যদি নিজ ইউনিয়নের সারের ডিলার হয়ে থাকেন এবং যদি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে থাকেন তাহলে তিনি অবশ্যই ইউনিয়ন পরিষদ ম্যানুয়াল অনুযায়ী আইন ভঙ্গের জন্য দোষী হবেন। তবে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের করণীয় কিছুই নেই। যেহেতু ইউনিয়ন পরিষদ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীন, তাই সেটি তারাই ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক মো. মিজানুর রহমান।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড