নাজমুল হক নাহিদ, আত্রাই (নওগাঁ)
এক সময় যাদের আপন ঠিকানায় মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু হয়নি, নওগাঁর আত্রাইয়ে এখন আবাসনের সঙ্গে অবহেলিত সেই শিশুরা বিনোদনের কেন্দ্র হিসেবে পেয়েছে শিশুপার্ক। সেই সাথে নির্মল বাতাস আহরণের জন্য আশ্রয়ণ কেন্দ্রের চারপাশে ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করে তৈরি করা হয়েছে সবুজ বেষ্টনী।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন তাদের বাবা-মা। ভ’মিহীন ও গৃহহীন এসব পরিবারের শিশুদের খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি ও মানসিক বিকাশের জন্য প্রশাসনের উদ্যোগে আবাসন এলাকাতেই নির্মাণ করা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন শিশুপার্ক।
সম্প্রতি আত্রাই উপজেলার শাহাগোলা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আবাসন এলাকায় শিশুদের জন্য এ শিশু পার্কটি গড়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মুজিববর্ষে কেহ গৃহহীন থাকবেনা প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণার প্রেক্ষিতে আত্রাই উপজেলায় দুই ধাপে পাঁচ স্থানে ১৮৫টি বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। নির্মিতব্য বাড়িগুলো প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার উদ্বোধনের পর সুফলভোগীদের মাঝে বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি পেয়ে সেখানে মনের আনন্দে বসবাস করছেন উপজেলার ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলো।
চলতি বছর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলামের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে রসুলপুর আশ্রয়ণ কেন্দ্রে শিশুদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিশুপার্ক নির্মাণ করেন। একই সাথে রাস্তার দুই ধার ও আশ্রয়ণ কেন্দ্রের চারিধারে পাঁচশ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করেন।
অপর দিকে মধুগুড়নই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে নদীর ধারে গাইড ওয়াল তৈরি করে তাতে মাটি ভরাট দিয়ে সেখানেও শিশুদের বিনোদন দিতে দোলনা এবং নদীর নির্মল বাতাস আহরণের জন্য স্থায়ী বসবার যায়গা নির্মাণ করেন। এই কেন্দ্রেরও চারিধারে পাঁচশ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ লাগিয়ে সেখানে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা হয়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, আত্রাই-নওগাঁ আঞ্চলিক সড়কের রসুলপুর নামক স্থানে ১নং খতিয়ানভুক্ত দুই দশমিক নব্বই একর উঁচু জমিতে দুই ধাপে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৭৩টি বাড়ি নির্মাণ করা রয়েছে। তাতে আনুমানিক তিনশ মানুষ মনের আনন্দে স্বাচ্ছন্দ্যে বসবাস করছেন। কেন্দ্রের পাশের মাদরাসা, মসজিদ, কমিউনিটি ক্লিনিক, খোলা মাঠ রয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের রাস্তায় ও চারিধারে পাঁচশ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করা রয়েছে। সেখানের শিশুপার্কে শিশুদের বসবার যায়গা, দোল খাবার দোলনা, স্লিপার, গোল চত্বর এবং ফুলের বাগান রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে প্রকল্প সম্পর্কিত বিলবোর্ড দেয়া আছে।
অপর দিকে আত্রাই গোড় নদীর বুক চিরে গড়ে ওঠা মধুগুড়নই গ্রাম সংলগ্ন ১নং খতিয়ানভুক্ত তিন দশমিক বিশ একর উঁচু জমিতে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ৮৪টি বাড়ি নির্মাণ করা রয়েছে। তাতে আনুমানিক সারে তিনশ মানুষ মনের আনন্দে বসবাস করছেন। কেন্দ্রের পাশের মসজিদ, নদীর খোলা নির্মল হাওয়া গায়ে লাগানোর ব্যবস্থা আছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের রাস্তায় ও চারিধারে পাঁচশ ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করা রয়েছে। সেখানের শিশুদের দোল খাবার দোলনা, নদীর নির্মল বাতাস আহরণের জন্য স্থায়ী আসন তৈরি রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রের প্রবেশদ্বারে প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত বিলবোর্ড দেয়া আছে।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পাওয়া এক সুবিধাভোগী জানান, ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা তো দূরে থাক, এক সময় তারা অন্যের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এখানে জমি ও ঘর পেয়েছেন। সেই সাথে তার ছেলে-মেয়েরাও খেলাধুলার সুযোগ পেয়েছেন। এখানে শিশুপার্ক পেয়ে তারা বেজায় খুশি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইকতেখারুল ইসলাম বলেন, মুজিববর্ষে কেউ গৃহহীন থাকবে না; প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনার এই ঘোষণা অনুযায়ী উপজেলার পাঁচ স্থানে একশত পঁচাশি বাড়ি নির্মাণ করে সুফলভোগী মানুষের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শিশুদের স্বাস্থ্য নিশ্চিত ও নির্মল বাতাস আহরণের জন্য রসুলপুর ও মধুগুরনই আশ্রয়ণ কেন্দ্রে শিশুপার্ক এবং এক হাজার ফলজ ও বনজ বৃক্ষ রোপণ করে প্রকল্প সম্পর্কিত বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। আশ্রয়ণ কেন্দ্রের সকল মানুষকে সরকারের দেওয়া বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার আওতায় আনা হয়েছে। এছাড়া পর্যায়ক্রমে গৃহ ও ভূমিহীন সকল মানুষকে এই সুবিধার আওতায় আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখা হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড