চাকরি দেওয়ার নামে যুবককে অপহরণের পর হত্যা

ঢাকার আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় চাকরি দেয়ার নামে আরিফ হোসেন নামে এক যুবককে অপহরণের পর হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় র‍্যাবের হাতে মুল হোতাসহ চার আসামিকে গ্রেফতারের পর চাঞ্চল্যকর এই ঘটনা সামনে আসে। তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানা একাধিক মামলা রয়েছে।

গতকাল রবিবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে র‍্যাব-৪ এর সাভারের নবীনগরে ক্যাম্পে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এই তথ্য জানায়। এর আগে রাতে আসামিদের গাজীপুর ও আশুলিয়া বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলেন- রাজশাহীর বাগমারা থানার শ্রীপতিয়াপাড়া গ্রামের সেন্টু সরদার (৩৫), দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার নৌপাড়া গ্রামের জমির উদ্দিন (৩৩), সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা থানার রাব্বি আহম্মদ (২৭) ও টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার কামদেববাড়ী গ্রামের জহিরুল ইসলাম (৩৫)। তারা চারজনই বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক। সকলেই দীর্ঘদিন যাবত গাজীপুর ও আশুলিয়া বসবাস করে আসছে।

নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের শিকার আরিফ হোসেন (১৯) সিরাজগঞ্জ জেলার শাহাজাদপুর থানার বাজরা গ্রামের ওয়াজেদ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় ছিলেন পোশাক রঙ কারখানার শ্রমিক ও গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বসবাস করতেন।

নিহতের বাবা ওয়াজেদ আলী বলেন, আমার ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই। যাতে আর কারও বুক এভাবে খালি না হয়।

র‍্যাব-৪ এর সিপিসি-২ এর অধিনায়ক লে. কমান্ডার রাবিক মাহমুদ খাঁন বলেন, এই চক্রটি চাকরিপ্রার্থী পোশাক শ্রমিকদের টার্গেট করে চাকরি প্রলোভন দেয়। কারখানার ভুয়া জিএম সেজে দেখে করার নামে কৌশলে নির্জন স্থানে নিয়ে জিম্মি করে মুক্তিপণ দাবি করে। মুল পরিকল্পনাকারী ও এই অপরাধ চক্র গড়ে তোলার দলনেতা সেন্টু সরদার।

তিনি বিভিন্ন কারখানার সামনে চাকরি প্রত্যাশীদের টার্গেট করে মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতেন। পরে অপর আসামি জমির উদ্দিন নিজেকে কারখানার মহা ব্যবস্থাপক পরিচয় দিয়ে কৌশলে নির্জন স্থানে ডেকে আনেন। পরে চাকরিপ্রার্থীকে জিম্মি করে মারধর ও মুক্তিপণ আদায় করতেন। বাকি আসামিরা তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে। চক্রটি গত ৩ থেকে ৪ বছরে অন্তত ৬০টি এমন অপরাধের সাথে জড়িত। সবশেষ আশুলিয়ায় আরিফ নামে এক তরুণকে চাকরি নামে তাকে ডেকে নিয়ে জিম্মি করার চেষ্টা করে। বাধা দিলে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তারা। প্রাথমিকভাবে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে।

রাকিব মাহমুদ খাঁন আরও বলেন, অপরাধীরা স্বীকার করেছে যে- তারা সাভার, আশুলিয়া ও ধামরাই এর বিভিন্ন এলাকার সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে চাকরিপ্রাত্যাশীদের কৌশলে নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে মুক্তিপণ আদায় করতেন। তারা চুরি ও ছিনতাইয়ের সাথেও জড়িত।

উল্লেখ্য, এর আগে গত ২৪ জানুয়ারি আশুলিয়ার কলতাসূতি এলাকায় নির্জন স্থানে থেকে হাত-বাঁধা বিবস্ত্র অবস্থায় আরিফের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই আশুলিয়ায় থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই সূত্র ধরেই তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।