• বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯  |   ২২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

ভৈরবে তিনদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব শুরু

  নাজির আহমেদ আল-আমিন, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ)

২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৫০
ভৈরবে তিনদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব শুরু

বাঙালির লোকজ ইতিহাস-ঐতিহ্যে পিঠা-পুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে প্রাচীনকাল থেকেই। পিঠা-পায়েস সাধারণত শীতকালের রসনাজাতীয় খাবার হিসাবে অত্যন্ত পরিচিত এবং মুখরোচক খাদ্য হিসাবে বাঙালি সমাজে আদরণীয়।

আত্মীয়স্বজন ও পারস্পরিক সম্পর্কের বন্ধনকে আরও দৃঢ় ও মজবুত করে তুলতে পিঠা-পুলির উৎসব বিশেষ ভূমিকা পালন করে। গ্রামবাংলার ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরির ধুম শীতকালেই বেশি পড়ে। আর কালের গভীরে কিছু হারিয়ে গেলেও এখনো পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায়নি পিঠা।

শীতকালে শুধু গ্রামবাংলায়ই নয়, শহর এলাকায়ও পিঠা খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শুরু হয়েছে তিনদিন ব্যাপী পিঠা উৎসব। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পৌর শহরের রাজকাচারির মাঠে পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদের আয়োজনে এ সময় উৎসব অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বাংলা একাডেমির শিশুসাহিত্যে পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি রহিম শাহ।

সংগঠনের সভাপতি ইমরান হোসাইনের সভাপতিত্বে উৎসব অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন কিশোরগঞ্জ জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সেন্টু, উপজেলা বিএনপির সভাপতি রফিকুল ইসলাম, প্রেসক্লাব সভাপতি এস এম বাকী বিল্লাহ, সংগঠনের উপদেষ্টা আতিক আহমেদ সৌরভ, সাগর রহমান, আলাল উদ্দিন, সুমন মোল্লা, জাহিদুল হক, ওয়াহিদা আমিন, নজরুল ইসলাম।

এ সময় বক্তারা বলেন- পিঠাপুলির উৎসব বাঙালির আদি সংস্কৃতি। প্রতিটি পার্বণে পিঠা চাই বাঙালির। গোলায় নতুন ধান উঠলে পিঠা তৈরি করা হয়। শীত এলে বাড়ি বাড়ি পিঠা খাওয়ার ধুম পড়ে যাওয়া ছিল স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু সময় বয়ে গেছে। প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন এসেছে। এখন উৎসব আমেজে পিঠা খাওয়ার প্রচলন কমে আসছে। এ ধরনের পিঠা উৎসব তরুণ প্রজন্মের আগ্রহ জাগাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সার্বিক সঞ্চালনায় ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন নাজির।

রাজকাচারি মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, উৎসবে এবার ১০টি স্টল অংশ নিয়েছে। প্রতিটি স্টলে নানা রঙের, নানা পদ আর স্বাদের পিঠা শোভা পাচ্ছে। এর মধ্যে নকশি, চমচম, দুধ পুলি, দুধ চিতই, পাকন, মাশ জিলাপি, পাটিসাপটা, মালপোয়া, তিল পিঠা, মেড়াসহ নানা পিঠা প্রদর্শন করা হয়। মাঠজুড়ে বিভিন্ন স্টলে শোভা পাচ্ছে টক-ঝাল- মিষ্টি স্বাদের বাহারি পিঠা। আগ্রহ নিয়ে পছন্দের পিঠার স্বাদ নিচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

ফড়িং পিঠাঘর স্টলটিতে রয়েছে অন্তত ২০ প্রকার পিঠা। মালিক নাসিমুন গনি জানান, প্রথম দিনের বিক্রি ভালো। সব ধরনের পিঠার প্রতি ক্রেতার আকর্ষণ রয়েছে।

উৎসবে আসা একজন দর্শনার্থী বলেন, পিঠা খাওয়া নিয়ে শিশুদের তেমন আগ্রহ নেই। তাঁদের আগ্রহ ফাস্টফুডে। অথচ উৎসবে এসে ঠিকই তাঁর দুই সন্তান বেশ আগ্রহ নিয়েই পিঠা খেয়েছে এবং অনেক পিঠার নাম জানতে চেয়েছে।

পিঠা উৎসব উদযাপন পরিষদ-সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল আমিন বলেন, এবারের উৎসবটি পঞ্চমবারের মতো হচ্ছে। উৎসব মঞ্চ থেকে পুঁথি পাঠ, নাটক, লোকজ নাচ ও গান পরিবেশিত হবে। উৎসব চলবে শনিবার রাত নয়টা পর্যন্ত।

পিঠা-পুলি আমাদের লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই প্রকাশ। আমাদের হাজারো সমস্যা সত্ত্বেও গ্রামবাংলায় এসব পিঠা-পার্বণের আনন্দ-উদ্দীপনা এখনো মুছে যায়নি। পিঠা-পার্বণের এ আনন্দ ও ঐতিহ্য যুগ যুগ টিকে থাকুক বাংলার ঘরে ঘরে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড