• বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩, ৯ চৈত্র ১৪২৯  |   ২২ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সরকারি স্কুলের শিক্ষককে পিটানো ঘটনায় আসামি লিটন শ্রীঘরে

  হুমায়ুন কবির সূর্য, কুড়িগ্রাম

২৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৩৫
সরকারি স্কুলের শিক্ষককে পিটানো ঘটনায় আসামি লিটন শ্রীঘরে
গ্রেফতারকৃত আসামি (ছবি : অধিকার)

কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীকে মারধরের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নূর মোহাম্মদ সাবিরী লিটন নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে মারপিটের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বিশেষ অভিযান চালিয়ে পুলিশ লিটনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। ঘটনার ৪ দিন পর একজন আসামি গ্রেফতার হলেও এজাহার ভুক্ত অন্য আসামিরা রয়েছে এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে।

কুড়িগ্রাম সদর থানার অফিসার ইনচার্জ খান মো. শাহরিয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সিসিটিভির ফুটেজ দেখে আসামি নূর মোহাম্মদ সাবিরি লিটনকে পুলিশ শনাক্ত করেছে। পরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়। অন্যান্য আসামিদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে অপরাপর অজ্ঞাত আসামিদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামি নূর মোহাম্মদ সাবিরী লিটন কুড়িগ্রাম পৌর শহরের গুরাতিপাড়া এলাকার মৃত অব্দুর সাবের মিয়ার পুত্র। এ মামলার এজাহার ভুক্ত আসামিরা হলেন মাসুদ রানা (৪৮), ফরিদুজ্জামান মণ্ডল রুমন (৩৫), আমিনুল ইসলাম (৩৯) ও আলতাফুর রহমান (৪০)।

অনুসন্ধানে জানা যায়, আহত শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বাদী হয়ে কুড়িগ্রাম সদর থানায় বেআইনি জনতায় দলবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাধাদান, সরকারি কর্মচারীকে আক্রমণ আঘাত ও ভয়ভীতির অপরাধের অভিযোগ এনে ১৪৩/১৮৬/৩৫৩/৩৩২/৫০৬ পেনাল কোডে মামলা করেন। প্রভাবশালীদের নানা চাপ উপেক্ষা করে রবিবারের ঘটনার মামলা রেকর্ড হয় সোমবার। এরপরই আত্মগোপনে চলে যায় আসামীরা।

এজাহার ভুক্ত প্রধান আসামি ইতিমধ্যে ভারতে পালিয়েছে বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো দাবি করছে। আর অন্যরা দেশের অভ্যন্তরে আত্মগোপনে রয়েছে। এ ঘটনায় এক মিনিট এক সেকেন্ডের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক তার চেয়ারে বসে আছেন। তার উল্টো দিকে মাসুদ রানাসহ কয়েকজন মিলে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর ওপর চড়াও হন। এক পর্যায়ে তাকে ধাক্কাতে থাকলে তিনি সরে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

এ সময় কয়েকজন শিক্ষক মাসুদ রানাকে থামাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তারপরও তিনি শিক্ষক আব্দুল হাইয়ের ওপর চড়াও হন এবং ধাক্কাতে থাকেন। এ সময় বেশ কয়েকজন বহিরাগত মাসুদ রানার সাথে শিক্ষকের উপর উত্তেজিত ও মারমুখী অবস্থায় ছিল।

জানা যায়, ভর্তি সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত নিতে এসে এক পর্যায়ে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর উপর চড়াও হয়ে তাকে মারপিট করেন কুড়িগ্রাম বিএনপির সহ ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক এবং জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা। তিনি ভর্তি বাতিল এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক হিসাবে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক’র কক্ষে এই ন্যক্কারজনক ঘটনাটি ঘটান। এ

সময় তার সঙ্গে আরও বেশ কয়েকজন ছিলেন। সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা এ দৃশ্য সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। এ ঘটনায় নির্যাতিত শিক্ষক বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে এবং কিছু অজ্ঞাতনামার বিরুদ্ধে কুড়িগ্রাম সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

আহত জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, ঘটনার দিন পিয়নের মুখে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হট্টগোলের খবর পেয়ে সেখানে যাই। কিছু অভিভাবক তাদের সন্তানের ভর্তি বাতিল বিষয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হয়। আমি তাদের সাথে কথা বলতে গেলে ১নং আসামি কুড়িগ্রাম মোল্লাপাড়ার ব্যবসায়ী আব্দুল আজিজের পুত্র জেলা বিএনপি ছাত্র বিষয়ক সহ সম্পাদক মো. মাসুদ রানা প্রথমে আমার উপর চড়াও হয়। এরপর ধাক্কাতে ধাক্কাতে এক কোনায় নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সবাই মিলে কিলঘুষি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছিলাফুলা জখম করে। সরকারি কাজে বাধা দেয়। আমি এখনো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত আছি এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।

তিনি আরও জানান, স্কুলে ভর্তির বিষয়ে অভিভাবকগণ শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করায় ঢাকায় মন্ত্রণালয় থেকে ৪২ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেয়া হয়। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হকের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এরই প্রতিবাদ করায় আমার উপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানাসহ অন্যরা।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড