মিলন মাহমুদ, সিংগাইর (মানিকগঞ্জ)
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে ২০২৩ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের অতিরিক্ত ক্লাস ও টেস্টে পরীক্ষায় অকৃতকার্যদের ফরম পূরণ বাবদ জামানত হিসেবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। সরজমিনে বিদ্যালয়ে গেলে এ ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচনি পরীক্ষায় ২৪০ জন শিক্ষার্থী মধ্যে সকল বিষয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ১৬ জন শিক্ষার্থী বাকিরা এক থেকে পাঁচ বিষয়েও অকৃতকার্য হয়েছে। তাদের থেকে বিষয় প্রতি এক হাজার থেকে শুরু করে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়ে ফরম পূরণের সুযোগ দিয়েছেন।
কয়েকজন অভিভাবক এ বিষয়ে বলেন, আমার ছেলে এক বিষয়ে অকৃতকার্য হওয়াতে আমি এক হাজার টাকা বেশি দিয়ে এসএসসি ফরম পূরণ করিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এখানে প্রায় শতাধিক শিক্ষার্থীর অভিভাবক কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। তাদের জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা জামানত দিয়ে ফরম পূরণ করাটা কষ্টের।
আরেক অভিভাবক বলেন, স্কুল থেকে অতিরিক্ত ক্লাসের নামে দুই হাজার করে অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছে। আমরা তো খবরে দেখেছি শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন- অতিরিক্ত ক্লাসের নামে যেন কোনো টাকা না নেওয়া হয়। তাহলে তারা কিভাবে টাকা নিচ্ছেন। যারা দায়িত্বে আছেন তারা যেন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাহরাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের থেকে ফরম পূরণের জন্য বিষয় প্রতি এক হাজার করে টাকা এবং অতিরিক্ত ক্লাসের জন্য প্রতি শিক্ষার্থী থেকে দুই হাজার করে টাকা নেয়া হয়েছে।
অভিযোগ স্বীকার করে স্কুল কমিটির অভিভাবক সদস্য ইসরাফিল আহমেদ বলেন, আমরা কমিটির সকলে মিলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। টাকা দিয়ে যদি ফরম পূরণ করে তাহলে তারা চাপের মুখে থাকবে এবং পড়াশোনা করতে আগ্রহী হবে। এই কথা চিন্তা করে আমরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা শুধু আমরা না উপজেলার প্রায় প্রত্যেক স্কুলেই করে।
অতিরিক্ত ক্লাস সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেসরকারি স্কুলে শিক্ষকরা তো ফ্রিতে অতিরিক্ত ক্লাস করবেন না। সেইজন্য শিক্ষকদের সম্মানী দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ক্লাস নেওয়া বাবদ দুই হাজার টাকা করে সকল শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে।
সিংগাইর মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমেনা পারভীন বলেন, কোচিং ফি বাবদ ও অকৃতকার্য শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোন অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার সুযোগ নেই। টাকা নেওয়া বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসার (ডিইও) রেবেকা জাহান বলেন, অতিরিক্ত ক্লাস ও জামানত হিসেবে অতিরিক্ত অর্থ নেয়ার কোনো বিধান আমাদের নাই। তারা কি কারণে নিচ্ছে জানি না, আমরা যদি লিখিত অভিযোগ পাই তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড