সোহেল রানা, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের চৌহালীর দক্ষিণাঞ্চলে শুষ্ক মৌসুমে আবারও নদী ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বসত ভিটা ও আবাদি জমি। তবে ক্ষতিগ্রস্তদের আক্ষেপ নদী ভাঙন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্প বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলেও বাস্তবে নেই কোন উদ্যোগ। যুগোপযোগী পরিকল্পনার অভাবেই বার বার ভাঙ্গনের কবলে পড়ছে চৌহালী। দ্রুত স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবী জানান স্থানীয়রা।
জানা যায়, যমুনা পাড়ে হিমেল হাওয়া ও ঘন কুয়াশায় একে তো শীতের প্রকোপ। তার উপর অসময়ে নদী ভাঙনের কবলে আবারও দিশেহারা হয়ে পড়েছে সিরাজগঞ্জের চৌহালী উপজেলার দক্ষিণের মানুষ। গত দুই সপ্তাহে উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই থেকে চরসলিমাবাদ ভূতের মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় আবারও শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের কবলে হুমকিতে পড়েছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদরাসা, বাজার, ৫০টি বসতবাড়িসহ বিস্তীর্ণ ফসলী জমি।
এখনো হুমকির মুখে রয়েছে বিনাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সম্ভূদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সম্ভূদিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, পয়লা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, চৌবারিয়া বি.এম কলেজ, বাঘুটিয়া কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ প্রায় ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করলেও এখনো দেখা মেলেনি স্থায়ী বাঁধের।
গত এক দশকের বেশি সময় ধরে চৌহালী নদী ভাঙ্গনের কবলে থাকলেও সঠিক পরিকল্পনা না থাকায় গৃহহীন অনেক মানুষই চৌহালী ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন।
বাঘুটিয়া ইউনিয়নের বিনানই গ্রামের মো. জব্বার আলী, জসিম উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, অসময় যমুনার তাণ্ডব শুরু হয়েছে। কিন্তু ভাঙন রোধে পাউবো কর্তৃপক্ষ তেমন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
চরসলিমাবাদ গ্রামের মো. সানোয়ার হোসেন বলেন, আমার ষাট বছর বয়সে মাঘ মাসে নদী ভাঙ্গে কখনো দেখি নাই, এখন ঘর বাড়ি নিয়ে কোথায় যাবো তার কোন ঠিক ঠিকানা নাই। আমাদের এলাকার অবশিষ্ট অংশটুকু বাঁধ দিয়ে রক্ষা করলেও নদীর পাড়ে আমরা বসবাস করতে পারতাম।
বাঘুটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম মোল্লা বলেন, এ বছর বর্ষা মৌসুমে ভাঙনরোধে বিনাইন এবং চরসলিমাবাদ গ্রামের ৯শ' মিটার এলাকায় জিওব্যাগ ডাম্পিং করে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড। বর্ষার পানি নেমে যাওয়ার পর জিওব্যাগ ধ্বসে গিয়ে আবারও নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমানের মোবাইলে কল করেও পাওয়া যায়নি। তবে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মীর মোহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান জানান, ইতিমধ্যেই ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। এছাড়া স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য নতুন পরিকল্পনা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হয়েছে অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু হবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড