রফিকুল ইসলাম রফিক, গাইবান্ধা
পৌষের শেষ দিকে উত্তরের জেলা গাইবান্ধায় জেগে বসেছে শীত। সকালে ঘন কুয়াশা আর মাঝেমধ্যে হিমেল বাতাসে জনজীবন দুর্বিষহ। কনকনে শীতকে উপেক্ষা করে আশিউর্ধ্বের বুদা শেখ চালিয়ে যাচ্ছেন তার কর্মজীবন। পাশেই রেলগেটে শত মানুষের ভিড়ে বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে নিজের কাজেই ব্যস্ত তিনি।
বেলা বাড়ার সাথে জেলা শহরের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে মানুষের বেশ আনাগোনা। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, রিকশাভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলের হর্নে সরব শহরের অলিগলি।
ডিবি রোর্ড সংলগ্ন ১নং রেলগেট। রেললাইন দুই পাশে চায়ের দোকান। রেলের নিরাপত্তা বেষ্টনী ঘেঁষেই ফুটপাতে ছোট কাঠের টেবিলে থরে থরে সাজানো পুরানো তালার অংশ। নানা যন্ত্রপাতি সমৃদ্ধ টেবিলের এক কোনায় বসে চায়না, জাপানি, বাংলাদেশিসহ সব দেশের তালা মেরামত করেন এই বৃদ্ধা। বিনিময়ে যে টাকা পান, তাই দিয়ে চলে তার সংসার।
পৌর শহরের পলাশপাড়া এলাকায় তার বাড়ি। কৈশর জীবনেই তালা মেকারের কাজে জড়িয়ে পড়েন। এক স্ত্রী আর দুই ছেলে। বড় ছেলে বেসরকারি একটি ব্যাংকে চাকুরী করেন। ছোট ছেলে অবিবাহিত ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন।
আজ রবিবার (৮ জানুয়ারি) সকালে কাজের ফাঁকে কথা বলেন বুদা শেখ। তিনি বলেন- বাড়ি পাশেই একজন তালা মেকার ছিলেন। হাইস্কুল বয়সেই সেখানে যাতায়াত করতেন। এক পর্যায়ে তালা মেরামতের কাজ আয়াত্ত করেন। পরে পৌর পার্কে ফুটপাতে শুরু করেন তালা মেরামতের কাজ। এরপর ২৫ বছর বয়সে করেন বিয়ে।
এ সময় তিনি আরও বলেন, পৌরপার্ক থেকে সরে রেলগেটে এসে কাজ শুরু করেন। এখানেই কেটে গেছে ৫৫ বছর। দিনে ২ /৩ শ টাকা আয় হলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে পকেটে জমে না আর টাকা।
কথা বলতেই শাপলামিল এলাকার সাইদুর মিয়া নামে এক যুবক আসেন সেখানে। তিনি বলেন, তালার চাবি হারিয়ে গেছে। বাসার গেট খুলতে পারছি না। তাই তালা মেকারকে নিতে আসছি।
কলেজপাড়ার রোমেল বলেন, ছাত্রজীবন থেকে বুদা চাচাকে এখানেই দেখছি। ৪৫ বছরে পা রাখছি। এখনো তিনি এখানেই তালা চাবির কাজ করছেন। কতকিছুর পরিবর্তন হলো, তার কাজের পরিবর্তন আর হলো না।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড