জে রাসেল, ফরিদপুর
‘আমরা গরিব মানুষ কি বিচার পাবো না? এদেশে কি আমার মতো গরিব মানুষের কোনো মূল্য নেই? হাসপাতালের বেডে শুয়ে এমনই আক্ষেপ করে হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে কথাগুলো বলছিলেন থানায় জিডির পরই ভাতিজাদের অস্ত্রের আঘাতে আহত হওয়া ফরিদপুরের মধুখালি উপজেলার কোরকদি ইউনিয়নের বামুন্দি-বালিয়াকান্দি গ্রামের মো. ইয়াসিন মোল্লা ওরফে সবুর মোল্লা (৫০)।
তিনি আরও বলেন, জামিনে এসেই হত্যার হুমকি দিয়েছে, সে আশঙ্কায় থানায় জিডির করি, তার পরই তাদের হামলায় আহত হয়ে আতি এখন হাসপাতালে। তারা বলে, পুলিশ কিছুই করতে পারবে না, থানা ও কোর্ট ডিসমিস করে দিয়েছি, এখন তোরে খাবো, মেরে গুম করে দিবো।
আমাকে মেরে হাসপাতালে পাঠিয়ে উল্টা আসামিরা আমাকে জড়িয়ে মামলা করেছে। এখনো আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আসামিদের ভয়ে বাড়িতে যেতে পারতেছি না। জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে হামলার শঙ্কায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করার পরে ভাতিজাদের হামলার শিকার হয়েছেন তিনি। মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল হাসপাতালে পুরুষ সার্জারি ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, এ ঘটনায় ২৯ ডিসেম্বর একটি মামলা হলেও আসামিরা জামিনে বের হয়ে আসে। এখনো আমি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি। তারা আমার পরিবারের লোকজনকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছে ও গালিগালাজ করে যাচ্ছে।
জানা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর বামুন্দি-বালিয়াকান্দি গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে মো. ইয়াসিন মোল্লার উপর হামলা করে তার চাচাতো ভাই মৃত সরোয়ার মোল্লার ছেলে হাসান মোল্লা, হোসেন মোল্লা, মফিজুর মোল্লা ও শরীফুল মোল্লা। ধারালো অস্ত্র দিয়ে ইয়াসিন মোল্লা মাথায় আঘাত করে। এর আগে ২৭ ডিসেম্বর তিনি হামলার শঙ্কায় মধুখালী থানায় নিরাপত্তার জন্য সাধারণ ডায়েরি করেন।
হাসপাতালের বেডে শুয়ে আহত ইয়াসিন মোল্লা আরও বলেন, আমি ছোট থাকতে বাবা মারা যায়। এরপর আমাদের জমিজমা হাসান মোল্লার বাবা সরোয়ার মোল্লা দেখাশুনা করতো। কিন্তু সরোয়ার মোল্লা মারা যাওয়ার আগে আমাদের জমিজমা বুঝিয়ে দেননি। বর্তমানে তার ছেলেরা ঐ জমি জবরদখল করে রেখেছে। আমি জমিজমার কাগজপত্র দেখতে চাইলে তারা ক্ষিপ্ত হয় এবং দেখাতে অস্বীকার করে। আমি নিরীহ মানুষ হওয়ায় বিভিন্ন সময় হুমকি-ধমকি ও ভয়ভীতি দেখায়। তাই নিরাপত্তার জন্য গত ২৯ ডিসেম্বর মধুখালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করি। এর পরের দিন ভাতিজারা আমার জায়গা থেকে জোরপূর্বক একটি গাছ কাটতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, আমি বাঁধা দিলে তখন আমার উপর ভাতিজারাসহ ১০-১২ জন ধারালো কুড়াল ও দা নিয়ে হামলা করে। এ সময় আমার মাথায় কুড়াল দিয়ে কোপ দিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এ ঘটনার পর আহত অবস্থায় মধুখালী থানায় গেলে ডিউটি অফিসার বলে আপনি হাসপাতালে যান, বিষয়টি আমরা দেখছি। কিন্তু কোনো লিখিত অভিযোগ নিলেন না।
এ বিষয়ে মফিজুর মোল্লা সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের একটা পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝামেলা হতেই পারে। দুইজনের জমির সীমানা থেকে গাছটি কাটা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হলেও বর্তমানে আমরা জামিনে রয়েছি। এছাড়া আমার চাচা কখনো জমিজমার কথা বা আমাদের কাছে কাগজ দেখতে চাইনি। হঠাৎ করে লোকজন নিয়ে এসে কাগজপত্র দেখতে চেয়েছিল। আমাদের সমাজে একটা মান-সম্মান আছে, হয়তো গরীবের মানসম্মান কম।
ঘটনার বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় একটি মারামারির মামলা হয়েছিল। এতে ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড