মো. আকাশ, সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
ভোরের আলো ফোটার আগ মুহূর্ত আর সন্ধ্যা নামতেই শীতকালীন রসের জন্যে গাছিরা ছুটছেন খেঁজুর গাছে বেঁধে রাখা মাটির হাঁড়িতে করে সংগ্রহ করা রস নামাতে। বিভিন্ন গাছ থেকে সংগ্রহ করা রস নামিয়ে একত্র করছেন দু'বেলায়। এরপর কলসি অথবা বালতিতে ঢালছেন ছাঁকনিতে ছেঁকে। পরে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকা ক্রেতাদের দিচ্ছেন পরিমাপ করে।
বাংলাদেশের ঐতিহ্য বলতে গেলে শীতকালীন খেজুরের রসের কথা না বললেই নয়। অন্যান্য জায়গার মতো সিদ্ধিরগঞ্জের ২নং ঢাকেশ্বরী ইব্রাহিম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলস পুকুরপাড় এলাকায় দেখা গেছে এমনই দৃশ্য।
সরেজমিনে সন্ধ্যার দিকে দেখা যায়, রস সংগ্রহে গাছিরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ দিকে রস কিনতে এবং খেতে শত শত মানুষ ভিড় করছেন এই জায়গাটিতে।
দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ এখানকার খেজুর গাছগুলোর লিজ নেন ৫০ বছর বয়সী মোশাররফ শেখ। তবে গত চার বছর ধরে অংশীদারী ব্যবসা করে আসছেন তিনি। তার সঙ্গে সহযোগী হিসেবে যোগ দেন ৪৩ বছর বয়সী মো. সোহেল ও রুবেল হোসেন।
তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরের তুলনায় এবারের লিজে বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। ২০২০ সালের শীত মৌসুমে সর্বমোট ৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছিল। তখন ক্রেতাদের কাছে লিটার প্রতি খেজুরের রস তারা ৮০-৯০ টাকায় বিক্রি করেছিলেন। পরবর্তী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালেও তুলনামূলক কম খরচে ব্যবসা পরিচালনা করেছিলেন তারা। ৫০ হাজার টাকাতেই সীমাবদ্ধ ছিলো তাদের খরচ। তখন লিটার প্রতি রস বিক্রি করতেন ১১০-১২০ টাকায়। তবে এবার অর্থাৎ ২০২২ সালের মৌসুমে খরচ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লিটার প্রতি ৮০ টাকা বাড়িয়েছেন তারা।
মোশাররফ শেখ বলেন, এ বছর আমাদের খেজুর গাছের লিজ নিতেই ৭৪ হাজার টাকা খরচ হয়ে গেছে। ৩৪ টি খেজুর গাছ থেকে রস নামাচ্ছি এবার। শীতের তীব্রতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রসের চাহিদা বাড়বে। এখন গড়ে ১৬-২০ লিটার বিক্রি হয়। প্রতি লিটার খেজুরের রস ২০০ টাকা করে বিক্রি করছি।
রস কিনতে আসা স্থানীয় বাসিন্দা জমেলা খাতুনের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি এখানকার বাসিন্দা তাই শীত আসলেই এখান থেকে রস কিনে নেই। সামনে আমাদের পারিবারিক অনুষ্ঠান আছে তাই আগেভাগেই কিনে রাখলাম। তবে দামটা বেশি হয়ে গেছে। দাম আরেকটু কম হলে ভালো হতো।
আদমজী শিমুলপাড়ার বাসিন্দা আহসানুল হাবীব সোহাগ বলেন, শীত মানেই রসের সিজন। তাই বন্ধুদের নিয়ে রস খেতে চলে এলাম। আমার বাড়ি এই এলাকায় হওয়ায় উপকার হয়েছে।
আজিজুল হাকিম নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেছেন, বাসায় রস কিনে নিয়ে যেতে এখানে এসেছি। এই রস দিয়ে তৈরী পিঠার স্বাদই অন্য রকম। প্রতিবছর আমি এখানে রস কিনতে আসি। এখানকার রস তুলনামূলক অনেক ভালো হয়ে থাকে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড