মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও
প্রায় তিন বছর আগে পারিবারিকভাবে বিবাহ হয় ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ছোট খোচাবাড়ি পূর্ব নারগুণ গ্রামের ইব্রাহীমের কন্যা আফরোজা আক্তার ও দক্ষিণ নারগুণ (মাস্টারপাড়া) গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে মোকসেদুর রহমানের সাথে। ছেলে ও তার পরিবারের অভিযোগ মেয়েটি তার বাবার পরিবারের কুপরামর্শে শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে একই পরিবারে সংসার করতে চায় না বলে সংসারে অশান্তি।
অন্য দিকে মেয়ের পরিবারের অভিযোগ বিয়ের পরে তাদের সংসার ভালো চললেও তাদের স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কুট কেচাল লেগেই থাকতো। স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকজন কর্তৃক মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে চলছে বিশাল দ্বন্দ্ব।
অভিযোগ পত্র থেকে জানা গেছে, গত ৮ ডিসেম্বর ২০২২ সন্ধ্যায় মোকসেদুর রহমানের বাড়িতে গিয়ে তার শ্বশুর দলবল নিয়ে হামলা ও মারপিট করে এতে মোকসেদুর ও তার বাবা-মা ও ভাই বোন আহত হন। পরে স্থানীয় ও পুলিশের সহায়তায় তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়াও তার স্ত্রীকে জোর করে ছিনিয়ে ও বাড়ি থেকে টাকা এবং স্বর্ণালংকার নিয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন মোকসেদুরের বাবা নূর মোহাম্মদ ও মা মনোয়ারা।
জামাইর বাড়িতে হামলা ও মারধরে কথা অস্বীকার করে মেয়ের বাবা ইব্রাহীম অভিযোগ করে বলেন, মেয়ের স্বামীকে গাড়ি কিনে ও বাড়ি করার জন্য টাকা দেওয়ার পরেও মেয়েটি নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এর আগেও এধরণের সমস্যা হয়েছিল সেটি লিখিত ভাবে সমাধান করা হয়েছে। তার পরেও তারা আমার মেয়েকে আমাদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ করতে দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, গত ৮ ডিসেম্বর আমার মেয়েকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন নির্যাতন করে ঘরে তালা বদ্ধ করে রেখেছিল। খবর পেয়ে মেয়েকে নির্যাতনের হাত থেকে উদ্ধার করতে গেলে আমার জামাই ও তার পরিবার আমাদেরই মারধর করে আহত করে।
আফরোজার স্বামী মোকসেদুর বলেন, আমি কোনোদিন আমার স্ত্রীর উপরে নির্যাতন করিনি ও যৌতুকের কথা বলিনি। তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, তারাই আমার কাছে ১৫ লাখ টাকা দাবি করে। আমাকে ও আমার পরিবারের সদস্যদের মারধর করে। এতে আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছি এর সুষ্ঠু বিচার চাই আমরা।
মোকসেদুরের স্ত্রী আফরোজার অভিযোগ, তার সাথে সংসার করে কোনোদিনও শান্তি পাননি তিনি। তাকে তারা নির্যাতন করতো। এ রকম যাতে অন্যকারও সাথে না হয় তাই কঠোর শাস্তির দাবি জানান তিনি।
এছাড়াও স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সম্পর্কে আফরোজার মামাতো ভাই বলেন, মোকসেদুর তার শ্বশুরের সাথে খুব খারাপ আচরণ করায় আমি বড় ভাই হিসেবে তাকে একটা মাত্র থাপ্পড় মেরেছি। তাছাড়া আমি কোনো দলবল নিয়ে মারামারি করতে যায়নি তাদের বাড়িতে।
যদিও আফরোজার শ্বশুরবাড়ির আশেপাশের প্রতিবেশী আসমা বেগম ও লাইলি বেগম জানান, আমরা কোনোদিন আফরোজার উপরে কোনো প্রকার নির্যাতন করতে দেখিনি তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও স্বামীকে।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন বলেন, শ্বশুরবাড়ির লোকজন কর্তৃক জামাইকে ও তার পরিবারকে মারপিট করার অভিযোগ পেয়েছি। এর প্রাথমিক সত্যতাও পাওয়া গেছে। এটি আরও তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জানতে চাইলে ওসি আরও বলেন, মেয়ের পরিবার এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ দিলে সেটিও আমরা তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নিব।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড