মো. হাছান, মনোহরগঞ্জ (কুমিল্লা)
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন বাজারে শীতের সকালে চোখে পড়তো খেজুরের রসের কলস ভরা হাঁড়ি সারি সারি। খেজুর গাছ কাটার বিভিন্ন সরঞ্জামসহ গাছ কাটার গাছিদের ব্যবস্থার দৃশ্য। প্রতিদিন গাছিরা খেজুর রস সংরক্ষণ করার জন্য ঘুরে বেড়াতেন গ্রামের মেঠোপথগুলোতে রস সংরক্ষণ কাজে।
গ্রামের ছোট ছোট বাজারগুলোতে সারি সারি করে খেজুরের রস নিয়ে বসে থাকতেন গাছিরা। রসের ঘ্রাণ মাছির বনবন শব্দ এখন আর পাওয়া যায় না। সকাল বেলা অনেকের ঘুম ভাঙতে খেজুরের রসের মিষ্টি পিঠার সুগন্ধি ঘ্রাণে। পরিবারের সকল সদস্য মিলে আড্ডা মিলিয়ে সকাল বেলা নাস্তা করতেন খেজুর রসের তৈয়ারি অনেক সুস্বাদু পায়েস ও বিভিন্ন ধরনের পিঠা দিয়ে। এখন মানুষের কাছে খেজুরের রস ও খেজুরী গুড় দিয়ে তৈয়ারি খাবার গুলো স্বপ্নের মত মনে হয়। যে হারে গ্রামে খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে সে তুলনায় রোপণ করা হয় না।
বিপুলাসার গ্রামের প্রবীণ গাছারী মো. ফজলুল রহমান বলেন, আমি দীর্ঘ বিশ বছর ধরে খেজুর রস বিক্রি করে সংসার চালাতাম। এখন খেজুর গাছ কমে যাওয়াতে খেজুর রস তেমন পাওয়া যায় না। পাঁচ সাত বছর আগে এক কলস রসের হাঁড়ি বিক্রি করতাম ৮০ থেকে ১০০ টাকা। এখন ঐ খেজুর রসের হাঁড়ি বিক্রি করি ৫০০ টাকা। এরপরও আমার সংসার চালাতে কষ্ট হচ্ছে।
আরও কয়েকজন প্রবীণ গাছারীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, খেজুর গাছ যে ভাবে নিধন হচ্ছে যদি সেভাবে রোপণ না করে, তাহলে কয়েক বছর পর খেজুরের রস গ্রামেও পাওয়া যাবে না। সরকার যদি গ্রামের রাস্তা গুলোর পাশে নতুন করে খেজুর গাছ রোপণ উদ্যোগ নেয়। তাহলে মানুষ আগের মতো খেজুরের রস খেতে পারবে বলে আমরা আশাকরি।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুজন কুমার ভৌমিক জানান, মানুষ খেজুর গাছ যে ভাবে নিধন করছে সেভাবে রোপণ করে নাই। আর সে জন্য খেজুর রস সংকট দেখা দিয়েছে। সবার অবস্থান থেকে উদ্যোগ নিয়ে খেজুর গাছ রোপণ না করে কালের বিবর্তনে শহরের মত গ্রামও খেজুর রস হারিয়ে যাবে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড