• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

কলেজ ভবনের কক্ষ দখল করে সাবেক অধ্যক্ষ অফিস নির্মাণ

  কাজী শাহরিয়ার রুবেল, আমতলী (বরগুনা)

১২ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৫
কলেজ ভবনের কক্ষ দখল করে সাবেক অধ্যক্ষ অফিস নির্মাণ

বরগুনা জেলার আমতলী উপজেলার ইউনুস আলী খান ডিগ্রী কলেজের ভবনের একটি কক্ষ ওই কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক অধ্যক্ষ ইউনুস আলী খান তার ব্যক্তিগত অফিস বানিয়ে নিজের নামের একটি নাম ফলক টানিয়ে দখল করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলা গুলিশাখালী ইউনিয়নে মহিষকাটা সংলগ্ন ইউনুস আলী খান ডিগ্রী কলেজটি ১৯৯৪ সালের ২৯ শে এপ্রিল প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকে প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ইউনুস আলী খান অধ্যক্ষের দায়িত্ব নিয়ে ২০১৯ সালে অবসরে যান। অবসরে যাওয়ার পর তিনি কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পান। তখন ওই কলেজের ৪র্থ তলা ভবনের ৩য় তলায় একটি কক্ষে নিজের নামে সভাপতির কার্যালয় লিখে সেখানে এলাকার সালিস বিচার ব্যবস্থা করতে থাকেন। তার সভাপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে তিনি উক্ত কক্ষে সভাপতির নাম ফলকে প্রতিষ্ঠাতার কার্যালয় লিখে এখন ওখানে বসে এলাকার সালিস বিচার ব্যবস্থা করা অব্যাহত রাখছেন।

এতে সরকারিভাবে নির্মিত ভবনের ৩য় ও ৪র্থ তলায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের পড়াশুনায় মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন।

তার বিরুদ্ধে রয়েছে একাধিক জাল-জালিয়াতির অভিযোগ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কুলার মতে এসএসসি থেকে মাস্টার্স পর্যন্ত যে কোনো একটিতে তৃতীয় বিভাগ থাকলে সে অধ্যক্ষ হতে পারবে না জেনেও তিনি ওই কলেজটিতে জামাতপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত মো. জাকারিয়াকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব দিয়েছেন।

এখন জালিয়াতি করে গোপনে তাকে স্থায়ীভাবে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে বলে কলেজের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জাকারিয়া ডিগ্রী পাস পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ পেয়েছে বলেও ওই সূত্রটি নিশ্চিত করেছে।

ওই বিষয়ে কলেজের সিনিয়র শিক্ষক মো. দলিল উদ্দিন বলেন, গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত আমি কলেজটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) দায়িত্বে ছিলাম। ওই সময় কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম ইউনুস আলী খান প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র আমার কাছে হস্তান্তর বা প্রদান করেনি। তিনি শুধুমাত্র হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করা ছাড়া আমাকে কলেজের কোনো কাজ করতে দেয়নি। কলেজের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এখনো তার কাছেই রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অবসরে যাওয়ার পরে প্রথমে তিনি সভাপতি আর বর্তমানে তিনি নাম ফলকে প্রতিষ্ঠাতার কার্যালয় লিখে কলেজ ভবনের ৩য় তলার একটি কক্ষ দখল করে এলাকার সালিস বিচার ব্যবস্থা করছেন। অথচ কলেজের শিক্ষকরা বসেন একটি ভাঙ্গাচোরা টিনশেড ভবনে।

ওই বিষয়ে এলাকাবাসী, অভিভাবক, শিক্ষকবৃন্দ ও অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে আলহাজ্ব মো. ইউনুস আলী খানের সকল অনিয়ম, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শিক্ষা বিভাগ ও প্রশাসনের প্রতি দাবি জানান।

কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক অধ্যক্ষ মো. ইউনুস আলী খান মুঠোফোনে অনিয়ম ও জালিয়াতির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমি ওই কলেজটি প্রতিষ্ঠা করেছি, তিনি আর কিছু বলবেন না বলে ফোনের সংযোগটি কেটে দেয়।

কলেজ পরিচালনা পরিষদের বর্তমান সভাপতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ সভাপতি মো. মিজানুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, আমি সম্প্রতি সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি জেনে তারপর ব্যবস্থা নেব।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড