সাজ্জাদুল আলম শাওন, দেওয়ানগঞ্জ (জামালপুর)
এসেছে শীত, বইছে শীতল হাওয়া। চার দিকে ঘন কুয়াশার চাদর। ভোর হলেই দৃষ্টি জুড়ে কুয়াশার ছড়াছড়ি। যেন আকাশ থেকে মেঘের ভেলা নেমে আসছে পৃথিবীতে। কুয়াশা ভরা ভোরে চোখ ধাঁধানো হলদে সরিষা ফুলের ডগায় পানির কনা জমে আছে। প্রতিটি কনা দেখতে মুক্তোর মত। যেন মুক্ত গুলো ফসলের মাঠে লুটিয়ে পড়েছে। এইতো কিছুদিন আগেও সবুজে মাঠ বিস্তৃত ছিল। অল্প সময়ের ব্যবধানেই সবুজে ঘেরা মাঠ নতুন রূপ ধারণ করেছে।
মাঠের পর মাঠ সরিষা ফুলের হলুদ রশ্মিতে হলুদ বর্ণ ধারণ করে গ্রাম বাংলা। বাংলার প্রতিটা মাঠে সরিষা ফুলের সৌন্দর্য মন ভোলানোর মতো। সবুজের মাঝে হলুদের ছাপ, তার সৌন্দর্যের যেন কোনো কমতি নেই। এ যেন প্রকৃতি আজ হলুদ শাড়ি গাঁয়ে জড়িয়ে আছে। যার সৌন্দর্য সত্যিই অতুলনীয়।
চার দিকে নজর কাড়া সরিষার হলুদ ফুলের সমারোহ। জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার বাহাদুরাবাদ, পৌরসভা, দেওয়ানগঞ্জ সদর, চিকাজানি, চুকাইবারী, পাররামরামপুর, চর আমখাওয়া, ডাংধরা, হাতিভাঙ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকায় এ মৌসুমে সরিষার চাষ হচ্ছে। সরিষার সবুজ গাছের হলুদ ফুলগুলো শীতের রোদে যেন ঝিকমিক করছে। দেখে মনে হয় যেন প্রকৃতি সেজেছে হলুদ বরণ সাজে। সরিষা ফুলের এ দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে উপজেলার ফসলের মাঠের চিত্র। শীতের শিশির ভেজা সকালে ঘন কুয়াশার মোড়ানো মাঠ দেখে মন জুড়িয়ে যায় প্রকৃতি প্রেমীদের।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ২৭ হাজার তিনশ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ৩২ হাজার পাঁচশ হেক্টর। গত বছর নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার পাঁচশ হেক্টর। অর্জিত হয়েছিল ২৩ হাজার চারশ হেক্টর। গত বছরের তুলনায় এ বছর সরিষার চাষ বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর প্রত্যেক চাষি বেশি মুনাফা লাভ করবে। চাষকৃত সরিষার বেশির ভাগই ফুল এসে গেছে। সরিষা রোপণের মাত্র ৭৫-৮০ দিনের মধ্যে এর ফলন পাওয়া যায়।
হাতিভাঙা ইউনিয়নের কৃষক রওশন আলী বলেন, সরিষা চাষে খরচ কম। কিন্তু লাভটা বেশি। তাই অনেকেই এবার সরিষার চাষ করেছে। জমিতে একবার সার দিলেই হয়। তাই অন্য ফসলের চেয়ে পরিশ্রমও কম।
বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের বাসিন্দা হোসেন মিয়া বলেন, এবার ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। এবার সবকিছুর দাম বেশী। সার বীজ বেশী দামে কিনতে হয়েছে। আশা করছি বাজারে মূল্য ভালো পাব। ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে আমাদের আগ্রহ বেড়ে যাবে।
দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার মো. আলমগীর আজাদ বলেন, আমরা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষককে প্রশিক্ষণ ও সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করছি। অনেক কৃষক আমাদের পরামর্শে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
এবারে উপজেলার ৭টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় সরিষা চাষ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে কোনো ক্ষতি না হলে সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া
সম্পাদকীয় কার্যালয়
১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।
যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702
ই-মেইল: [email protected]
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড