• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৭ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

বাজারে আসছে দেশীয় শিম, ভালো দাম পেয়ে আনন্দিত কৃষক

  শিব্বির আহমদ রানা, বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

১০ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৩১
বাজারে আসছে দেশীয় শিম, ভালো দাম পেয়ে আনন্দিত কৃষক

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে এ বছরও শিমের বাম্পার ফলন হয়েছে। শিমের আগাম চাষিরা উচ্চ মূল্য পেয়ে খুশি। বিগত কয়েক বছর ধরে বাঁশখালীর বিভিন্ন এলাকায় শিমের আবাদ করা হচ্ছে ব্যাপকভাবে। শীতকালীন শিমের পাশাপাশি আগাম চাষাবাদ হওয়ায় শিমের কদর দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিমের কদর বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকদের শিম চাষে আগ্রহ বাড়ছে বলেও জানা যায়। ভৌগলিক কারণে বাঁশখালীর আবাদি জমিসহ পাহাড়ি এলাকা চাষাবাদের উপযোগী থাকায় বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ হয়।

এবার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় শিমের চাষ করা হয়েছে। খালি জমি, রাস্তার আশে পাশে হতে শুরু করে পাহাড়েও শিমের আবাদ করা হয়েছে। দেশীয় জাতের শিম বাঁশখালীর হাঁট-বাজারগুলোতে আসতে শুরু করেছে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এসব দেশীয় শিম।

উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র থেকে জানা যায়, বাঁশখালীতে এবার ১৮০ হেক্টর জমিতে দেশীয় শিম চাষ হয়েছে। বাঁশখালী শিম চাষের উর্বর জমি হওয়ায় চাষিদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে চাষাবাদে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়েছে বলেও জানান কৃষি অফিস। আগাম শিম চাষাবাদে কৃষকরা প্রচুর লাভবান হচ্ছে।

শীতকালীন শিম বাজারে আসায় ভোক্তাদের মধ্যে বেশ চাহিদা রয়েছে। সরেজমিনে দেখা যায়- উপজেলার বিভিন্ন উঁচু এলাকায় শিমের চাষাবাদ হয়ে থাকে। উপজেলার পুঁইছড়ি, নাপোড়া, চাম্বলের পাহাড়ি জমি, শীলকূপের পাহাড়ি ও আবাদি জমি, জঙ্গল জলদী, পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, বৈলছড়ি, সরল, খানখানাবাদ ও গন্ডামারা এলাকায় প্রচুর পরিমাণ শিম উৎপাদিত হয়েছে। প্রতিদিন চাষিরা ক্ষেত থেকে শিমগুলো তুলে এনে বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে পাইকারি দরে বিক্রি করছেন। বর্তমানে শিম পাইকারি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা। খুচরা বাজারে কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা ধরে।

উপজেলার শিলকুপ, পুঁইছড়ি, জঙ্গল চাম্বল, জঙ্গল জলদী, কালীপুর এলাকায় এই শিমের আবাদ হয়েছে প্রচুর। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বাঁশখালীর বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে ভিড় করছে ফ্রেস সবজির জন্য। পাইকার এই সকল শিম বিভিন্ন দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায়। তবে পুরোদমে শিম এখনো বাজারে আসেনি। সপ্তাহকয়েক দিনের মধ্যে বাজারে শিমের সয়লাব হবে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

শিম ছাড়াও বাঁশখালীতে টমেটো, বাঁধা কপি, বেগুন, ফুলকপি, মূলা, মূলা শাক, লাল শাক, বরবটি, দেশীয় শিমের পাশাপাশি ফরাস শিম, লাউ, মিষ্টি কুমড়া মিলে শীতকালীন সবজি, মসলা জাতীয় ফসলও বাজারে আসছে। শীতের আগাম সবজিতে ভরপুর বাঁশখালীর হাটবাজারগুলো। শহুরে পাইকারের ভিড় জমাতে দেখা যায় শীতকালীন সবজির বাজারগুলোতে।

বর্তমানে বাঁশখালীর প্রতিটি হাঁট-বাজারে শীতের সবজি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও এবার কিন্তু সবজির দাম চড়া হওয়ায় আগের মত সহজে সকল ধরনের সবজি কিনতে পারছেনা সাধারণ ক্রেতারা। পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তা আরও কম দামে ক্রয় করলেও চড়াদামে বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে এমনটি জানান খুচরা ক্রেতাসাধারণ।

বাঁশখালীর প্রধান সড়কের সাহেবের হাট, গুনাগরী, বৈলছড়ি বাজার, শীলকূপের টাইম বাজার, নাপোড়া বাজার ও চাম্বল বাজার এলাকায় প্রতিদিন সকালে প্রচুর পরিমাণ শীতের সবজি বিক্রি হয় পাইকারিভাবে। পাইকারি ক্রেতারা তা চাষিদের কাছ থেকে কিনে চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিপুল মুনাফার মাধ্যমে রফতানি করে থাকে।

শিলকুপের এলাকার কৃষক মো. রহিম বলেন, আমি দেড় কানি মতো শিমের চাষ করেছি। আমার ক্ষেতে শিমের ভাল ফলন হয়েছে। সবেমাত্র শিম বাজারে তুলেছি। আমরা পাইকারিভাবে প্রতি কেজি ৬০/৭০ টাকা বিক্রি করলেও ব্যবসায়ীরা তা আরও চড়া দামে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক বলেন, এবার বাঁশখালীতে প্রচুর পরিমাণ শীতকালীন সবজি উৎপাদিত হয়েছে। স্থানীয় হাঁট-বাজার গুলোতে সবজির যথেষ্ট সয়লাব হয়েছে। সাধারণ চাষিরা আগাম সবজির চাষ করে সন্তুষ্টজনক দাম পেয়ে খুশি। তিনি আরও বলেন- 'চট্টগ্রামের অধিকাংশ সবজির চাহিদা যোগান দেয় বাঁশখালী। বাঁশখালী থেকে প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক বোঝাই সবজি শহরের বিভিন্ন বাজারগুলোতে যায়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিমের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বাঁশখালীর কৃষকদের শিমের আবাদের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড