• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ২৮ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

সন্তানকে বাঁচাতে সাহায্যের আকুতি হতভাগ্য দরিদ্র বাবার

  মাজেদুল ইসলাম হৃদয়, ঠাকুরগাঁও

০৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৫৭
সন্তানকে বাঁচাতে সাহায্যের আকুতি হতভাগ্য দরিদ্র বাবার
অসুস্থ সন্তানের পাশে হতভাগ্য বাবা-মা (ছবি : অধিকার)

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার তালপুকুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র অনিক ইসলাম। বয়স মাত্র ১৪ বছর। গত চার মাস আগে প্রতিবেশীর ঘরের টিনের চালা ঠিক করার জন্য ঘরের চালে উঠলে বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয় অনিক। সেই বৈদ্যুতিক শকে তার প্রাণ না গেলেও বর্তমানে পঙ্গুত্ব ও দুর্বিষহ জীবন যাপন করছে সে।

সদর উপজেলার নারগুণ ইউনিয়নের পূর্ব নারগুণ গ্রামের দিন মজুর মো. আব্দুর রহিমের বড় ছেলে অনিক। যে বয়সে স্কুলের সহপাঠীদের সাথে পড়াশোনা ও খেলাধুলা করার ও দুরন্তপনার বয়স তার। কিন্তু আজ সেই বয়সে দুর্ঘটনার শিকারে মাথার এক অংশ ও গলার এক সাইড পুড়ে যায় এবং পায়ের আঙ্গুলে আঘাত প্রাপ্ত হলে সেই আঙ্গুলটিও চিকিৎসকের পরামর্শে কেটে ফেলতে হয়। এতে অধিক কষ্টে ও দুর্বিষহ জীবন পার করছে সে। এর আগে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারলেও বর্তমানে সে ঠিক ভাবে চলাফেরা ও তার ঘাড় নড়াচড়া করতে পারছে না এবং স্কুলে যেতে ও কারও সাথে খেলাধুলা করতে পারছে না।

এরই মধ্যে চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় করেছেন তার দরিদ্র বাবা। আর এই চিকিৎসার খরচ ব্যয়বহুল হওয়ায় বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না পরিবারটি। তাই সন্তানের চিকিৎসার জন্য সমাজের বিত্তবান সহ প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চান তার বাবা মো. আব্দুর রহিম।

আব্দুর রহিম বলেছেন, তার চার সদস্যের পরিবার। দিন মজুরি দিয়ে হলেও ভালই চলছিল সংসার। তার বড় ছেলে অনিক ইসলাম পঞ্চম শ্রেণিতে ও ছোট ছেলে নীরব ইসলাম প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে। একদিন তার প্রতিবেশী অনিককে তার ঘরের টিন ঠিক করার জন্য ডেকে নিয়ে যায়। টিন ঠিক করতে উঠলে অনিক বিদ্যুতায়িত হয়। তাৎক্ষণিক অনিককে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে তার চিকিৎসা করা হয়।

তিনি আরও বলেন, চিকিৎসা করে এখন কিছুটা সুস্থ অনিক কিন্তু এখনো সে পুরোপুরি সুস্থ না। তাকে সুস্থ করতে এখন অনেক টাকার প্রয়োজন। এতদিন আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তার চিকিৎসা করেছি। বর্তমানে টাকার অভাবে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে গেছে। আর দিন মজুরি দিয়ে নিজের সংসার চালাবো না ছেলের চিকিৎসা করাবো?

হতভাগ্য দরিদ্র বাবা বলেন, আমি সমাজের বিত্তবান ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের আকুল আবেদন জানাচ্ছি। আর্থিক সহায়তা পেলে হয়তো আমার ছেলেটা আগের মতো সব কিছু করতে পারবে।

প্রতিবেশী আব্দুল কুদ্দুস, নূর মোহাম্মদ, আবুল কাশেম ও তাসিমা বেগম জানান, বৈদ্যুতিক শকে অসুস্থ হয় অনিক। এতে তার চিকিৎসা করাতে তার পরিবারের অনেক টাকা খরচ হয়েছে। তার বাবা একজন দিন মজুর। দিনে আনে দিনে খায়। তাই সংসারের খরচ চালাবে না ছেলের চিকিৎসা করাবে। তাই সরকার যদি তার ছেলের চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্য করতো তাহলে ছেলেটি সুস্থ হয়ে হয়তো আগের মতো খেলাধুলা ও স্কুলে যেতে পারত।

সুস্থ হয়ে আগের মতো স্কুলে যাওয়ার ও খেলাধুলা করার জন্য বিত্তবান এবং প্রধানমন্ত্রীর কাছে আর্থিক সাহায্যের আকুতি অনিকেরও।

সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান বলেন, অনিকের চিকিৎসার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথা সাধ্য সহযোগিতা করা হবে।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড