• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১  |   ৩৪ °সে
  • বেটা ভার্সন
sonargao

মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন নয় জেলে, এখনো অপহৃত ছয়জন

  খলিল উদ্দিন ফরিদ, ভোলা

০৫ ডিসেম্বর ২০২২, ১৩:০৯
মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেলেন নয় জেলে, এখনো অপহৃত ছয়জন
উপকূলে নোঙর করা জেলে নৌকা (ছবি : অধিকার)

ভোলার তজুমদ্দিনের মেঘনা নদীতে জলদস্যুরা মাছ ধরারত ১৫ জেলেকে অপহরণের দুই দিন পর মুক্তিপণের বিনিময়ে নয়জন ছাড়া পেয়েছেন। তজুমদ্দিন উপজেলার জেলেরা বাড়ি ফিরে এসেছে। অপহরণের এসব ঘটনায় এখন পর্যন্ত জেলেরা থানায় কোনো অভিযোগ দায়ের করেনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে চরজহিরউদ্দিন ও চরমোজাম্মল এলাকার মেঘনা নদীতে মাছ ধরার সময় সশস্ত্র ডাকাতরা অন্তত ১৫টি জেলে-ট্রলারে হামলা চালায়। এ সময় দস্যুরা ১৫ জেলেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বিকাশে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে অপহৃত ১৫ জেলের মধ্যে তজুমদ্দিনের নয় জেলেকে মুক্তি দিয়েছে ডাকাতদল।

অপহরণের দুইদিন পর বাড়ি ফিরে আসা জেলেরা হলেন- উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের উত্তর চাপড়ী গ্রামের অলি আহমেদের ছেলে আলাউদ্দিন, মোতাহারের ছেলে হাসান, আলী মোস্তফার ছেলে সালাউদ্দিন ও শাহজাহানের ছেলে ইউসুফ, চাঁদপুর ইউনিয়নের মাওলানা কান্দি গ্রামের কাশেম মাজির ছেলে লোকমান, আব্দুল মান্নানের ছেলে হান্নান, মহাজনকান্দি গ্রামের আলমগীরের ছেলে আরিফ, বালিয়াকান্দি গ্রামের মোস্তফা মাঝির ছেলে হাসেম ও ভুলাই কান্দি গ্রামের মোস্তফার ছেলে মিরাজ।

বাড়ি ফিরে জেলেরা জানান- শুক্রবার গভীর রাতে মুক্তিপণ আদায় করে তাদের ইলিশা মাছ ঘাটের দক্ষিণ পাশে মাঝির ঘাট নামের একটি নির্জন এলাকায় ডাকাতরা নৌকা হতে নামিয়ে দেয়। পরে তারা শনিবার বিভিন্ন সময়ে বাড়ি ফিরে আসলেও বাকিদের সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ধারনা করা হচ্ছে- এরা অন্য এলাকার হওয়ায় ডাকাতরা তাদের আলাদা স্থানে রাখে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জেলে জানান, অপহরণের পর তজুমদ্দিনের নয় জেলেসহ ১৫ জনকে ভোলার তুলাতলির পূর্ব পাশে মেঘনার একটি চরে নৌকার মধ্যে বেঁধে রাখে।

শুক্রবার সকালে ভোলার তুলাতলির মাছ ঘাটের শাহিন ও নীরবের মাছের আড়তে ডাকাতিকৃত মাছ ও জাল বিক্রি করা হয়। এ সময় ডাকাতরা শাহিন ও নীরবের সাথে একাধিকবার মুঠোফোনে কথা বলতে শুনেন অপহৃত জেলেরা। মাছ বিক্রির পরে ডাকাতরা আটককৃত জেলেদের ব্যাপক মারধর করে মৎস্য আড়তদার ও স্বজনদের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলতে দেন। এ সময় ডাকাতরা জেলেদের জীবিত ফেরত নিতে এক লক্ষ টাকা করে মুক্তিপণ দাবি করে স্বজনদের বলেন পুলিশকে কোনো তথ্য জানালে কাউকে জীবিত ফেরত পাবে না।

মৎস্য আড়তদার ও স্বজনদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রতি জেলেকে মুক্তির জন্য ডাকাতরা ৩০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ নিয়েছে। এসব টাকা পরিশোধের জন্য ডাকাতদল তাদের আটটি বিকাশ নম্বরে পাঠায়। এসব নম্বর গুলো হচ্ছে 01791476008, 01791669995, 01877244688, 01758112958, 01315394659, 01788185972, 01717792257, 01811144432। ডাকাতদের দেওয়া এসব নাম্বারে অপহৃতদের স্বজনরা মুক্তিপণের টাকা পরিশোধ করে বলে তারা জানান।

স্বজনদের দাবি, অপহৃত জেলে পরিবারের কাছে জলদস্যুরা মোটা অংকের মুক্তিপণ আদায় করছে। পুলিশি হয়রানীর ভয়ে তারা কাউকে না জানিয়ে অপহৃতদের উদ্ধারে মুক্তিপণ পরিশোধ করছেন। ঘটনার পর এখন পর্যন্ত অপহৃত জেলে পরিবারের পক্ষ হতে প্রশাসনকে অভিযোগ করা হয়নি বলেও জানা গেছে।

হাকিমুদ্দিন নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ওসি শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন নদীতে পুলিশে নিয়মিত টহল ডিউটি চলছে। আর, অপহৃতদের কাছে খোঁজ নিয়ে ডাকাত দলের অবস্থান শনাক্ত করতে কাজ চলছে। আশা করছি, ধরা পড়বে।

তজুমদ্দিন থানার অফিসার ইনচার্জ মাকসুদুর রহমান মুরাদ জানান, অপহৃত ৯ জেলে বাড়ি ফেরার তথ্য পেয়েছি। তাদেরকে আইনগত সহায়তা নেয়ার জন্য বলা হলেও এখন পর্যন্ত কেউ অভিযোগ করেনি। তবে, ডাকাতদের কিছু বিকাশ নম্বর জেলেরা দিয়েছে, আমরা তা যাচাই করে দেখছি।

আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি দৈনিক অধিকারকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

নির্বাহী সম্পাদক: গোলাম যাকারিয়া

 

সম্পাদকীয় কার্যালয় 

১৪৭/ডি, গ্রীন রোড, ঢাকা-১২১৫।

যোগাযোগ: 02-48118243, +8801907484702 

ই-মেইল: [email protected]

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

Developed by : অধিকার মিডিয়া লিমিটেড